Barak UpdatesBreaking News
উধারবন্দ থেকে হারিয়ে যাওয়া শিশু সোনাইয়ে উদ্ধারChild lost from Udharbond recovered at Sonai
১৯দিন আগে সেন্টারে নাম লিখিয়েছিল ধলাই থানার হাতিখাল এলাকার ৮ বছর ৮ মাসের শিশু চামেলি রিয়াং। তার দিদি এই সেন্টার থেকেই পড়াশোনা করে এখন দশম শ্রেণিতে। বাবা-মা জুমচাষী। তারাই তাকে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু চার দেওয়ালে মন টেকে না চামেলির। দুদিন ধরেই অন্যদের বলছিল, চলে যাবে। তাই বলে এ ভাবে পালিয়ে যাবে, কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
রবিবার ভোরে শৌচাগারে যাওয়ার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না তাঁর। ও দিকে, সোনাই থানার ধনেহরিতে ফুটপাতে এক শিশুকন্যাকে দেখে নানা প্রশ্ন জাগে সেখানকার বাসিন্দা বাবুল হোসেন বড়ভুইয়ার। কিন্তু মুশকিল হল, মেয়েটি একেবারেই বাংলা বোঝে না। অন্যরাও এগিয়ে গেলেন। কিন্তু কেউ দায়িত্ব নিতে রাজি হলেন না। বাবুলবাবুই তাকে বাড়ি নিয়ে গেলেন। রাতে খেতে-শুতে দিলেন।
বেশি সময় লাগেনি মেয়ের সঙ্গে মা-বাবার মিলনে। কারণ চামেলির নিখোঁজ হওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়েছিল ফেসবুক-হোয়াটস অ্যাপে। ধনেহরিতে শিশুকন্যা পাওয়ার খবরে এক যুবক দুটি ঘটনাকে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। খবর যায় সেন্টারের ওয়ার্ডেন সাজিদা বড়ভুইয়ার কাছে। উধারবন্দ থানায় আগেরদিনেই মিসিং ডায়েরি করেন তিনি। পরদিন কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে নিয়ে সোনাই থানায় যান বাবুলবাবু। যোগাযোগ হয় দুই থানায়। সোনাই থানার ছবি দেখে নিশ্চিত হন সাজিদাও, এ-ই তার চামেলি।
সবাই সোনাই ছুটে গেলে থানায় বসেই চামেলি জানায়, সেন্টারের শৌচাগারের পেছন দিকে বেরিয়ে যায় সে। খোলা মাঠ, খেতের জমি পেরিয়ে সড়কে ওঠে। একটি গাড়িকে হাত দেখিয়ে উঠে পড়ে। কিন্তু ভাষার সমস্যায় চালক বুঝতে পারেননি, কোথায় তার বাড়ি, কোথায় যেতে চায়। কিছুটা এগিয়েই নামিয়ে দেয় তাকে। এ বার কোথায় যাবে, কী করবে সে! সারাদিন ফুটপাত ধরে উদ্দেশ্যহীন হাঁটতে হাঁটতে ধনেহরিতে পৌঁছে যায়।
ওয়ার্ডেন সাজিদা জানালেন, দুই থানা, হাসপাতাল, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি হয়ে তারা চামেলিকে নিয়ে সেন্টারে পৌঁছান সোমবার সন্ধ্যার পরে। মেয়ে হারানোর খবর পেয়ে সেন্টারে ছুটে গিয়েছিলেন চামেলির মা-বাবা। মেয়েকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তাঁরা। চামেলিও একদিকে ভাষার সমস্যা, অন্যদিকে থানা-হাসপাতাল ছুটে ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিল। মা-বাবাকে পেয়ে নিজের ভাষায় জানায়, ‘কাল রাতে যে বাড়িতে ছিলাম, খুব আদর করেছেন তারা।’