Barak UpdatesHappeningsBreaking News

ইটখলাঘাটের মহিলাদের স্বনির্ভর করতে প্রশিক্ষণ দিল জিসি কলেজের চার পড়ুয়া

ওয়েটুবরাক, ৫ সেপ্টেম্বরঃ কে বলবে, এরা পদার্থবিদ্যার ছাত্রছাত্রী। কী সুন্দর তাদের হাতের কাজ। যেমন চিত্রকলা, তেমনি জুয়েলারি বা অলঙ্কার তৈরির দক্ষতা। শুধু কি আর নিজেরা এ সব করছিল, কলেজ থেকে অন্তত ছয় কিলোমিটার দূরে ইটখলাঘাটে গিয়ে সেখানকার মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে প্রশিক্ষণ দিল এরা।

প্রশিক্ষার্থী মহিলাদের সাজিয়ে তোলা মাটির ঘট দেখে শিলচর গুরুচরণ কলেজের অধ্যক্ষ ড. বিভাস দেব বললেন, সেগুলি দিয়েই কলেজে তৈরি হবে সেলফ হেলপ কর্নার। সেখানে এই সব সামগ্রী যেমন শোভিত হবে, তেমনি তাদের মূল্যও গায়ে সাঁটা থাকবে। শিক্ষক-শিক্ষিকা বা ভিজিটর, যারাই কিনতে চাইবেন, মূল্য দিয়ে নিয়ে যাবেন। কলেজের ফিজিকস সেলফ হেলপ গ্রুপ পরে আবার বানানোর অর্ডার দেবে। সুসজ্জিত মাটির ঘট-কলসের সঙ্গে থাকবে জুয়েলারিও। প্রশিক্ষণ শিবিরে তৈরি সব সামগ্রীই কিনে নেন অধ্যক্ষ ড. বিভাস দেব, উপাধ্যক্ষা গোপা সিনহা এবং উপস্থিত কলেজ শিক্ষক চন্দন পালচৌধুরী, অপ্রতিম নাগ, কুমার সোনার, রাজর্ষি কৃষ্ণ নাথ ও বিজয় ব্রহ্ম। তাঁরা প্রশিক্ষীর্থীদের সঙ্গে চার প্রশিক্ষকের ভূমিকারও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

কৌস্তভ পাল ও স্বপ্নিল চক্রবর্তী খোলামেলা স্বীকার করে, এ সবের মূল কারিগর তাদের দলনেত্রী বসুন্ধরা পালচৌধুরী।  বসুন্ধরার কথায়, বিজ্ঞান নিয়ে পড়লেও আঁকাবুকি এবং হাতের কাজ তৈরিতে তার বরাবরেরই উতসাহ।  করোনার সময় একে বিশেষ ভাবে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ মেলে।  বিভিন্ন বয়সের মহিলারা যে তাঁদের শেখানোকে ঠিকঠাক নিতে পেরেছেন, তাতেই খুশি বসুন্ধরা, কৌস্তভ, কমলেন্দু দেব ও স্বপ্নিল। প্রশিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রাখা এবং এ সংক্রান্ত ব্যাপারে যে কোনও কিছু জানতে চাইলে সাড়া দেবে বলে কথা দেয়।

ফিজিকস সেলফ হেলপ গ্রুপের কো-অর্ডিনেটর ড. অপ্রতিম নাগ জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের মহাত্মা গান্ধী কাউন্সিল ফর রুরাল এডুকেশন শিলচরের গুরুচরণ কলেজকে স্বনির্ভরতার ওপর কোনও কাজ করতে বললে অধ্যক্ষ  তাঁকেই এই দায়িত্ব দেন। তিনি ফিজিকস সেলফ হেলপ গ্রুপ তৈরি করে প্রশিক্ষণ শিবিরের পরিকল্পনা নেন।  ইটখলাঘাট অঞ্চলে আগে কলেজের এনএসএস শাখা বিভিন্ন ধরনের কাজ করায় তিনি এই অঞ্চলটিকেই বেছে নেন। ড. নাগের দাবি, “কলেজ ছাত্রদের তরফে কোনও অঞ্চলে গিয়ে মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলার এমন প্রয়াস আগে আর কোথাও হয়েছে বলে শুনিনি।”

প্রশিক্ষণ শেষে বীর টিকেন্দ্রজিৎ স্কুলে আয়োজিত সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপাধ্যক্ষা গোপা সিনহা বলেন, এই শিবিরের বিভিন্ন দিক রয়েছে।  চার ছাত্রছাত্রী দুস্থ  মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার কাজে ব্যাপৃত থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতার পাঠও গ্রহণ করল।  এরা অন্য পড়ুয়াদের কাছে উদাহরণ হয়ে দাঁড়াল।  এগারো প্রশিক্ষার্থীও এমন একটা সুযোগ পেয়ে আন্তরিক ভাবেই শেখার চেষ্টা করেন। অর্চনা চক্রবর্তী, পম্পারানি দাস সরকার, মন্টি শব্দকর, জ্যোৎস্না দে প্রমুখ বলেন, তাঁরা আর্থিক সঙ্কট কাটাতে কিছু একটা উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। কিন্তু পরিচারিকার কাজ ছাড়া কিছুই জুটছিল না।  এ বার তাঁরা আশাবাদী, এই ধরনের জিনিস বাজারজাত করে সম্মানের সঙ্গে উপার্জন করতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also

Close
error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker