Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আসু-র লাঞ্ছনার দরুণই বরাকে বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন হয়েছিল, বললেন দত্তরায়
২৬ ডিসেম্বর: আসাম বিশ্ববিদ্যালয় আসাম চুক্তির ফসল, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আকসা-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রদীপ দত্তরায়। তিনি বলেন, ১৯৮০-র দশকে বরাকের ছাত্রছাত্রীদের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় পড়াশোনা করতে গিয়ে উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদীদের কাছে প্রচণ্ড হেনস্থা হতে হতো। আসু এবং তৎকালীন অসম গণ সংগ্রাম পরিষদের যুবকর্মীরা বই-খাতা ছেঁড়া থেকে শুরু করে প্রায়ই শারীরিক লাঞ্ছনা করতেন৷ ফলে বরাকের ছেলে-মেয়েদের উচ্চশিক্ষা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এই সমস্যার সমাধানে ১৯৮৩ সালের ১৫ মে স্থানীয় অরুণ চন্দ মহাবিদ্যালয়ে আকসা নামে ছাত্র সংগঠনের জন্ম হয়৷ এই সংগঠনে মূল দাবি ছিল, বরাকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
প্রদীপবাবু জানান, ১০ বছর জুড়ে আন্দোলন চলে এবং তখন আসু দ্বারা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বরাকের ছাত্রছাত্রীদের উপর নিগ্রহ আরও বেড়ে যায়। পরে ১৯৮৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর উদ্যোগে সংসদের উভয় কক্ষে ‘আসাম বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাশ হয়।
দত্তরায় বলেন, তৎকালীন প্রফুল্ল মহন্ত সরকার এই আইন পাশ হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছিল। সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে সংসদে বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। এমনকি আইনটি পাস হবার পরও তৎকালীন অগপ সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমির ব্যবস্থা করতে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে হিতেশ্বর শইকিয়া মুখ্যমন্ত্রী হলে দরগাকোনায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২৫০০ বিঘা জমির বন্দোবস্ত করে দেন।
প্রদীপবাবুর কথায়, যদিও আসাম চুক্তিতে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখ ছিল, কিন্তু আসাম চুক্তির হোতারা কোনদিনই চাননি যে বরাকে সেটি বাস্তবায়িত হোক। উল্টে তাঁরা তেজপুরে সেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের স্থানান্তরের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। পরে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সূত্র ধরেই তারা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে তেজপুরে অনুরূপ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ নিয়েছেন৷ প্রদীপবাবুর দাবি, তেজপুরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের নেপথ্যে আকসা-র আন্দোলনের পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।
প্রদীপবাবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সাংসদের পিতা বিমলাংশু রায় আকসা-র আন্দোলনে সক্রিয় ও বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়েছিলেন৷ কিন্তু তার পুত্র সাংসদ রাজদীপ রায় শুক্রবার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্যের কোনও বিরোধিতা করেননি।
কোনও জনপ্রতিনিধি এ নিয়ে এখনও মন্তব্য না করায় প্রদীপবাবু বিস্মিত৷ বলেন, এমন অপমানকর মন্তব্য শুনেও তাঁদের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। প্রদীপবাবু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে সোচ্চার হতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান৷