Barak UpdatesHappeningsBreaking News

নিরিখ মতো পাতাই মেলে না ডলু বাগানে, সমন্বয় সমিতির সভায় উদ্বেগ

ওয়েটুরাক, ২৮ অক্টোবর : ডলু চা বাগানের গ্রিন ফিল্ড বিমানবন্দর তৈরির নামে মিথ্যাচার করে ২৫০০ বিঘা জমিতে থাকা চা গাছ গত মে মাসে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এরফলে শ্রমিকদের রুজি-রোজগারে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষকরে ৩২ টি সেকশনের চা গাছ উপড়ে ফেলার পর বর্তমানে যে সেকশনগুলো রয়েছে তা থেকে পর্যাপ্ত চা পাতা সংগ্রহ করা মুশকিল হচ্ছে ৷ ফলে শ্রমিকদের নিরিখ পূরণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

আজ শুক্রবার ডলু চা বাগান বাঁচাও সমন্বয় সমিতি’র  সভায় এই ব্যাপারে অধিকাংশ বক্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ শিলচরের সরকারি পেনসনার্স এসোসিয়েশন ভবনে অনুষ্ঠিত এই সভার কাজ পরিচালনা করেন শ্রমিক নেতা নির্মল কুমার দাস ও মানস দাস  ৷ ঋষিকেশ দে, প্রদীপ নাথ, জয়দীপ ভট্টাচার্য, অরিন্দম দেব, হিল্লোল ভট্টাচার্য, রাজু দেবনাথ, বিশ্বজিত দাস, কনক পাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় দীর্ঘ আলোচনা পর সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শিলচরে আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাজ্য সরকারের ক্যাবিনেট মিটিংয়ের পূর্বে বরাক উপত্যকার জনগণের কর্মসংস্হানের একমাত্র উৎস চা শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারের নিকট জোরালো দাবি উত্থাপন করা হবে। সভায় অধিগ্রহণ করা চা বাগানের ফসলি জমি বাগান শ্রমিকদের কো- অপারেটিভের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার  জোরালো দাবি উত্থাপন করেছেন৷ তারা তাতে পূর্ণ সমর্থন জানায় এবং অবিলম্বে তা পূরণের দাবি জানায় যাতে তারা নিজস্ব উদ্যোগে ওই জমিতে চা চাষ শুরু করতে পারে। পাশাপাশি  সভা থেকে জোরালো দাবি উত্থাপন করা হয় যে, চা শিল্প সহ কোনও ধরনের রোজগারের মাধ্যমকে ধ্বংস না করে অবিলম্বে যে কোনও স্থানে গ্রিন ফিল্ড বিমানবন্দর স্থাপন করতে হবে। সভায় উপস্থিত বক্তারা এও বলেন যে, সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে ডলু চা বাগানের আরও ৭০ হেক্টর (৫৫০ বিঘা) জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ২৫০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যখন মামলা রুজু হয়েছে সেখানে ওই জমির পাশে আরও জমি অধিগ্রহণের কথা বলা কার্যত বিচার ব্যবস্থাকে অসন্মান করা এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। সংগঠনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, আসাম সরকারের সদিচ্ছা থাকলে কোনও শিল্প ধ্বংস না করেই সঠিক স্থান নির্ধারণ করে বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা নিতে পারত কিন্তু তা না করে কেন্দ্র সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে কোনও ধরনের প্রস্তাব না পাঠিয়ে চালু চা বাগানের জমি বেআইনি ভাবে দখল করে নেয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে চা শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে সর্ব স্তরের জনগণকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান।

এ দিকে, টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার বরাক ভ্যালি শাখার সচিব শরদিন্দু ভট্টাচার্য অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তিনি জানান, অন্যত্র নিরিখ নির্দিষ্ট হলেও ডলু বাগানে প্রতিদিন সংগৃহীত পাতা ও নিয়োজিত শ্রমিকের হিসেব কষে গড় বার করা হয়৷ গড় থেকে কম হলেই কম মজুরি দেওয়া হয়৷ তাঁর দাবি, এত গাছ কাটার পরও একজন শ্রমিককেও কর্মচ্যুত না করার প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালনের জন্য বাগান কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে হয়৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker