Barak UpdatesHappeningsBreaking News
অপহরণে ধৃত করিমগঞ্জের যুবকের মেঘালয়ের কোভিড সেন্টারে আত্মহত্যা! তদন্ত দাবি
ওয়েটুবরাক, ১৭ মেঃ মেঘালয়ের ১৮-অনূর্ধ্ব তরুণীকে বিয়ে করে দেড়মাস ধরে নির্বিঘ্নে সংসার করছিলেন করিমগঞ্জ জেলার আদরকোণা গ্রামের যুবক নিরূপম ধর। গত শুক্রবার সেই রাজ্যের পুলিশ এসে অপহরণ মামলায় তাকে গ্রেফতার করে। তরুণীকে তুলে দেয় তার বাবার হাতে। পরদিন ধৃতকে মেঘালয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্তে কোভিড টেস্ট হয়। আরটিপিসিআর রিপোর্টের অপেক্ষায় তাকে নিয়ে রাখা হয় সেখানকার কোভিড কেয়ার সেন্টারে। রবিবার সন্ধ্যায় মেঘালয় পুলিশ বাড়িতে ফোন করে জানায়, ওই সেন্টারেই আত্মহত্যা করেছেন নিরূপম।
বছর চারেক ধরে শিলঙে এক্সক্যাভেটর চালাচ্ছিলেন নিরূপম ওরফে কুটু৷ সেখানেই তরুণীর বাবা রঞ্জন মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। রঞ্জনবাবুদের মূল বাড়ি জলপাইগুড়িতে। কর্মসূত্রে থাকে শিলঙে। পরে নিরূপম একই বাড়িতে ভাড়া চলে আসেন। ওই সূত্রেই তরুণীর সঙ্গে ভালবাসায় জড়িয়ে পড়েন। শেষে পয়লা বৈশাখ পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। সে রাতেই আদরকোণার বাড়িতে চলে আসেন। নিরূপমের বাবা-মা পুত্রবধূ হিসেবে তরুণীকে মেনে নিয়েছিলেন। আনুষ্ঠানিক বিয়ে-থার জন্য উভয় পক্ষে কথাবার্তাও চলছিল। রঞ্জনবাবু নিজেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন, এখন তিনি মেয়েকে নিয়ে যাবেন। পরে তার ১৮ বছর হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেবেন। নিরূপম ও তার মা-বাবা সেই প্রস্তাবে সম্মতিও জানিয়েছিলেন।
এর পরই শুক্রবার রঞ্জন মণ্ডল মেঘালয়ের পুলিশ নিয়ে করিমগঞ্জে উপস্থিত হন। কালীগঞ্জ পুলিশ ওয়াচপোস্টের ইনচার্জ মানবজ্যোতি মালাকারের নেতৃত্বে আদরকোণার বাড়িতে অভিযান চলে। নিরুপমকে গ্রেফতার করা হয়। মেয়েকে তুলে দেওয়া হয় রঞ্জনবাবুর হাতে। অভিযোগ, পরদিন ইনচার্জ মানবজ্যোতি মালাকার আলোচনায় মামলার নিষ্পত্তির জন্য নিরূপমের বাবা-মাকে ওয়াচপোস্টে ডেকে পাঠান। সেখানে তাদের সই রেখে বাড়ি চলে যেতে বলেন। ছেলের খোঁজ করলে জানান, নিরূপমকে মেঘালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এর পরে তাদের কাছে ছেলের আর কোনও খবর ছিল না। খবর মেলে রবিবার সন্ধ্যায়। মেঘালয় পুলিশ ফোনে জানিয়েছে, কোভিড কেয়ার সেন্টারের জানালায় ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছেন নিরূপম। তাঁদের ২৩ বছরের প্রাণচঞ্চল ছেলে ফাঁসি দিতে পারে না বলে দাবি করেন তাঁরা৷ পুলিশের জিম্মায় ছেলের মৃত্যুর উপযুক্ত তদন্ত চান তাঁরা৷
এই ঘটনায় আদরকোণা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিরূপমের কাকা প্রীতিভূষণ ধর বলেন, মেঘালয় পুলিশ এর দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না৷ এ দিকে, আগামীকাল তাঁর মৃতদেহ আদরকোণার বাড়িতে পাঠাবে বলে পুলিশ তাঁদের জানিয়েছে৷