২২ ফেব্রুয়ারি: শুক্রবার দুপুর৷ ফুল হাতে এগিয়ে চলেছেন কাতারে কাতারে মানুষ৷ খালি পায়ে অনেকটা পথ হেঁটে শহিদ বেদি৷ জনঢেউয়ে এগোচ্ছেন ধবধবে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবী পরা এক বৃদ্ধ। বয়স ৮৯৷ শহিদ মিনারের সামনে পৌঁছে ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে চোখ আর খুলতে পারছেন না৷ দু’চোখ বেয়ে আনন্দাশ্রু নামছে তাঁর। করিমগঞ্জ থেকে এই প্রথমবার ঢাকায় গেলেন নিশীথরঞ্জন দাস। বাংলাদেশ সরকার একুশের শহিদ দিবসে বরাকের উনিশের যোদ্ধাকে সংবর্ধিত করল৷ মাইকে ভেসে আসে, ‘অসমের বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলনের নেতা নিশীথবাবুকে পেয়ে আমরা গর্বিত।’ মঞ্চ থেকে নেমে গিয়ে হাত ধরলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং অধ্যাপকেরা। নিয়ে বসালেন মঞ্চে। শুনলেন বরাকে বাংলা ভাষার মর্যাদার দাবিতে লড়াইয়ের কথা। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা বাজতেই বেজে ওঠে ব্যান্ড। কালো চাদর গায়ে এগিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কালো মুজিবকোটে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। তাঁরা শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর পরেই অন্য মন্ত্রী ও নানা দেশের কূটনীতিকরা ঢোকেন। তার পরেই জনস্রোত৷ কখন রাত ফুরোয়, টের পাওয়া যায় না৷ রাত-দিন একই ধরনের জনস্রোত৷ একই সুরে সমবেত সঙ্গীত, ‘জয় বাংলা’, ‘ভাষা শহিদেরা ঘুমোও, আমরা জেগে আছি’। কখনও বা রবীন্দ্রসঙ্গীত, 'আমার সোনার বাংলা'৷