NE UpdatesBarak UpdatesBreaking News
এনআরসি কি সত্যি বাতিল হতে চলেছে, উতকণ্ঠায় বাঙালিরাWill NRC be really declared null & void? Bengalis in tensed mood
২৮ নভেম্বরঃ বহু কষ্টে অর্জিত এনআরসি কি বাতিল হতে চলেছে? আবারও কি সেই নথি নিয়ে দৌড়ঝাঁপ? এইসব প্রশ্ন আর উদ্বেগ-উতকণ্ঠায় নতুন করে ভারি হতে চলেছে অসমের বাতাস। বিশেষভাবে চিন্তিত বাঙালিরা। তাঁদের বিদেশি বলে সন্দেহ করে আগে নথির পর নথি চাওয়া হয়েছে। হয়েছে বংশবৃক্ষ পরীক্ষাও। এতসবের পর যারা এনআরসিতে নিজেদের নাম দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলেন, তাঁরা নতুন করে আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন।
৩১ অগস্ট চূড়ান্ত এনআরসি প্রকাশের পরই অসমের অর্থ-স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, এই এনআরসি মানব না। সাধারণ জনতা একে রাজনৈতিক বিবৃতি ভেবে গুরুত্ব দেননি। গত সপ্তাহে সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শোনান, অসম সহ সারা দেশে একযোগে এনআরসি হবে। তাও তত চর্চায় আসেনি। কিন্তু এখন শাসকদলের প্রত্যেক নেতা-মন্ত্রী একই কথা বলে চলেছেন। এমনকী, অসম মন্ত্রিসভার একমাত্র বাঙালি মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যও দু-দিন আগে দাবি করেন, এনআরসি-টা বাতিল হয়েই গিয়েছে।
এ থেকেই অসমের বাঙালিদের উতকণ্ঠা বেড়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে তৈরি এনআরসি এইভাবে সরকার বাতিল করে দিতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন দূরে রেখেই বলাবলি হচ্ছে, আবারও কি ওই যন্ত্রণার মুখে পড়তে হবে? পরিমলবাবুর বক্তব্য, বাদ পড়া ১৯ লক্ষের মধ্যে প্রকৃত ভারতীয়রাও রয়েছেন। তাদের কথা ভেবেই নতুন এনআরসি দরকার। তাঁর এই যুক্তিকে অনেকেই মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, বাদ পড়াদের প্রতি সরকারের প্রকৃতই দরদ থাকলে শুধু তাদের নথিপত্র ফের পরীক্ষা করা হোক। এর বদলে ৩ কোটি ১১ লক্ষ মানুষকে হয়রানি করা কেন।
তবে এনআরসি-ছুটরা মন্ত্রীদের বক্তব্যে খুশি। তাদের একাংশের আশা, নতুন করে নথি দেখানোর সুযোগ পেলে নাম তুলে নিতে সক্ষম হবেন তাঁরা। অন্যদের ধারণা, ১৩ বছরে একবার এনআরসি তৈরি হয়েছিল, তাও বিজ্ঞপ্তি জারির পর্যায়ে যেতে পারেনি। এর আগেই বাতিল হচ্ছে। ফলে এ বার বাতিল হয়ে গেলে এনআরসি নিয়ে চিন্তা কাটবে। তাদের আশা, কোনওদিনই এটি আর হবে না।
তবে ১৯৭১ নাকি ১৯৫১ ভিত্তিবর্ষ হবে, এ নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না কেউ। কারণ আগেই দেখা গিয়েছে, ১৯৬৬-র আগের নথি দিতে পেরেছেন নগণ্য সংখ্যক আবেদনকারী। ফলে ১৯৫১-র আগের নথি খোঁজা হলে ডিটেনশন ক্যাম্পের ভেতরেই থাকবেন সবাই। বাইরে থাকবেন মুষ্টিমেয় জনতা।
এনআরসি বাতিল হতে পারে, এমন কথায় সমাজকর্মী আশু পাল বলেন, আবার তালিকা-ছুট! আবার মানসিক অত্যাচার! আবার আত্মহননের ঘটনা! আবার অর্থক্ষয়! নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতির প্রধান সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থের কথায়, ১৯ লক্ষের প্রতি দরদের কোনও ব্যাপার নয়। মূল লক্ষ্য, বাঙালিদের হেনস্তা করা। আরও বাঙালিকে কী করে এনআরসি-ছুট করা যায়, এরই ষড়যন্ত্র চলছে।