Barak UpdatesBreaking News

শিলচর এনআইটি-র ভেতরে দুই পুজো
Two Durga Puja inside Silchar NIT Campus

৫ অক্টোবরঃ শিলচর এনআইটি-র বিশাল চত্বরে দুটি দুর্গাপূজা হচ্ছে। একটি তৃতীয় শ্রেণির, অন্যটি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের। আবেগ-আনন্দে কেউ কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই। দুই পুজোর মধ্যে কোনও প্রতিযোগিতাও নেই।

তবে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পুজোয় নিয়মিত পরিবর্তন ঘটে চলেছে। প্রথমত, এটি এখন আর তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পুজো নয়। বলা ভাল, শিক্ষকদের পুজো। এখানে সভাপতি অধ্যাপক বিকে রায়, উপসভাপতি ড. কেএল বৈষ্ণব ও পল্লব দাস। সম্পাদক ড. এলসি শইকিয়া। তিন সহ সম্পাদক হলেন ড. বিপ্লব দাস, ড. জেপি মিশ্র ও ড. সুমিত ভৌমিক। তাঁরাই জানালেন, এনআইটিতে এখন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী একেবারে হাতেগোণা। সবাই অস্থায়ী বা ঠিকা ভিত্তিতে কাজ করেন। ফলে কোয়ার্টারে বসবাসকারী বললে শিক্ষকরাই। গত কয়েক বছর ধরে তারাই এই পূজার যাবতীয় দায়দায়িত্ব পালন করেন। তাতে অবশ্য পুজোর জৌলুসও বেড়েছে। প্রতি বছর নতুন বিষয় যোগ হচ্ছে। এ বারে মণ্ডপসজ্জায় জোর দেওয়া হয়েছে। আগে শেডের ভেতরে কাপড় লাগিয়েই মণ্ডপ তৈরি করা হতো। এ বার সুদৃশ্য এক কাল্পনিক মন্দির তৈরি করা হয়েছে। ভেতরে ছাত্রছাত্রীদের আঁকা সামগ্রী ও অন্যান্য সৃষ্টিকর্মে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বাজেটও একলাফে অনেকটা বাড়ানো হয়েছে।

আগে অবশ্য শিক্ষক কি অশিক্ষক, তৃতীয় কি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, সকলে মিলে একটাই পুজো করতেন। প্রতিষ্ঠানে সকলের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রাণ খুলে আনন্দ করতে পারেন না। নিজেরাই সঙ্কোচ বোধ করেন। পরে তারা আলাদা পূজার কথা ভাবে। এ বারের পূজা কমিটির সম্পাদক রাজু দেব মায়ের পূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সকলকে নিয়ে খেটে চলেছেন।

তৃতীয় শ্রেণির পুজোর সভাপতি বিকে রায় জানান, তাঁরা খাওয়া-দাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও গুরুত্ব দেন। পুজোর দিনগুলিতে কারও ঘরে রান্না হবে না। সবাই  মণ্ডপের পাশেই খাওয়াদাওয়া করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাইরের কোনও শিল্পী নন। নিজেরাই গান, বাজনা, আবৃত্তি, নৃত্য করেন। এতে প্রত্যেকে প্রত্যেকের হৃদয়ের ছোঁয়া পান বলেই মনে করেন উপসভাপতি কেএল বৈষ্ণব।

তিনি জানান, ডিরেক্টর অধ্যাপক শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পুজোর খবর রাখছেন। তাঁর স্ত্রীও অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে পুজোয় সক্রিয় রয়েছেন। তাঁরা এ বার পাশের গ্রামের ২৫ জন পড়ুয়াকে বই-কলম-ছাতা প্রদান করেন। তারা সবাই ভরাখাই হাই স্কুলে পড়ে।

ড. বৈষ্ণবের কথায়, পরিবেশ সচেতনাতেও এ বার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপসজ্জা বা পুজো উপকরণে থার্মোকল বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী মোটেও ব্যবহার করা হয়নি। এমনকী, খাবারের জায়গাতেও প্লাস্টিকের থালা-গ্লাসের বদলে সুপারির খোলের থালা ও কাগজের গ্লাস কেনা হয়েছে।

সাত্ত্বিকতা বা আনন্দ-স্ফূর্তিতে কম যায় না চতুর্থ শ্রেণির পুজোও। প্রতিটি পরিবার এই কয়দিন মণ্ডপেই সময় কাটান। রাতে আরতির সঙ্গে হয় ধুনুচি নৃত্য। হয় প্রসাদ বিতরণ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker