Barak UpdatesAnalytics
ভিভিপ্যাট দেখাতে গিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা প্রশিক্ষকদেরTrainers gather diverse experience during EVM/VVPAT Awareness
২২ মার্চঃ অফিসাররা বসে ভোটার তালিকায় নাম-নম্বর দেখছেন। গোপনে ভোট দেওয়ার জন্য পিচবোর্ড দিয়ে ইভিএম কক্ষও তৈরি হয়েছিল। ছিল ভোটারদের লাইনও। সেই লাইনে দাঁড়িয়ে নাম-নম্বর মিলিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলেন কাছাড় জেলার লক্ষ্মীপুরের নিকোলা মার। ইভিএমে পছন্দের চিহ্ন না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠলেন। এ যে আসলে ভোট নয়, ভোটের মহড়া বোঝানো গেল না। কিছুতেই বোতাম টিপতে রাজি হলেন না।
মহড়া শুনে ইভিএমের সামনেই যেতে রাজি হলেন না কাটিগড়ার প্রভাতী সূত্রধর। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বুথে ঢুকেই জানতে চাইলেন, আজ আবার কীসের ভোট! সব জেনে তাঁর সোজা কথা, ভোট-ভোট খেলায় আমি নেই। শেষে ভোটের দিন বলবেন, তোমার ভোট আগেই হয়ে গিয়েছে!
নিকোলা মার, প্রভাতী সূত্রধরদের মত আপত্তি করেননি রুবি বড়ভুইয়া। কিন্তু ভোটের পর যখন ভিভিপ্যাট মেশিনে নিজের দেওয়া ভোটটি দেখতে পেলেন, ঘাবড়ে গেলেন তিনি। বারবার জানতে চাইলেন, এ বার কি তাহলে ভোট দিলে সবাই দেখে নেবে? ভিভিপ্যাটে যে শুধুই ভোটাররা তার ভোটটি ঠিক জায়গায় পড়ল কিনা তা দেখতে পারবেন, অন্য কেউ নয়, বুঝিয়ে বলার পর আশ্বস্ত হন তিনি।
ভোটের মহড়া দিতে গিয়ে এ বার বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন প্রশিক্ষকরা। ইভিএম-এ গিয়ে কেউ খুঁজছেন পদ্মফুল, কেউ হাতচিহ্ন। অনেকে আবার নোটা-রও খবর নিচ্ছেন। তবে ভিভিপ্যাট নিয়েই মানুষের বেশি কৌতূহল। রাধামাধব কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক সুদর্শন গুপ্ত বললেন, এই অঞ্চলের ভোট সচেতনতা কতটা রয়েছে, বলা মুশকিল। কিন্তু চিহ্ন সচেতনতা বেশ স্পষ্ট। মহড়ার জন্য ব্যবহৃত ইভিএমে পছন্দের চিহ্ন না পেয়ে অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গুরুচরণ কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক অপ্রতীম নাগ জানান, কচুদরমে এক মহিলা ভোটার বোতাম টিপে আক্ষেপ ব্যক্ত করেন, তার ছবি তো দেখা গেল না! শুধুই ভোটটি। এর কী দরকার ছিল! জীবন বিমা নিগমের অফিসার এসবি দত্তচৌধুরীও এমন বহু ঘটনার সাক্ষী। বললেন, অনেকে ভিভিপ্যাটে দেখানো চিহ্নযুক্ত স্লিপটি নিয়ে যেতে চাইলেন। সেটি ভোটের দিনও দেওয়া হবে না জেনে হতাশ হয়েছেন একাংশ। ভেবেছিলেন, এটিএমে টাকা তোলার মত ভোটটিও বাইরে বেরিয়ে আসবে। আর তাঁরা ঘরে নিয়ে যাবেন।
তবে ইভিএমে বোতাম টেপা, নতুন নয় এই অঞ্চলে। কিন্তু ভিভিপ্যাট গত ভোটে শুধু শিলচর বিধানসভা কেন্দ্রেই পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে চালানো হয়েছিল। এ বার সর্বত্র। ফলে নিজের ভোটটি দেখতে পাওয়া যায় যে মেশিনে, এর প্রতি আগ্রহ রয়েছে সব বয়সের মানুষের।