Barak UpdatesBreaking News
ট্রাইব্যুনালে না গিয়েই এনআরসি-র ভুল শোধরানো হবে, ইঙ্গিত রাম মাধবেরThe mistakes in NRC will be rectified without going to Tribunal, indicates Ram Madhav
২০ সেপ্টেম্বরঃ এনআরসি করে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করা হবে, নরেন্দ্র মোদির মত এমন কথা একবারও বলেলনি রাম মাধব। বরং এনআরসি-র মাধ্যমে নাগরিক করে নেওয়ার কথাই জোর দিয়ে বললেন। অমিত শাহের মত এনআরসি-ছুট সবাইকে উইপোকা বলেও সম্বোধন করেননি তিনি। বরং ১৯ লক্ষের একটি বড় অংশই যে ভারতীয়, সম্মানের সঙ্গে সে কথা উল্লেখ করেন। জানান, যে সব পরিবারের কারও নাম এনআরসিতে উঠেছে, কারও ওঠেনি, তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তা নির্ঘাত এনআরসি-র ভুল। সেগুলি শোধরানো হবে। তাঁদের ট্রাইব্যুনালে না পাঠিয়ে কী করে এনআরসি ভুক্ত করা যায়, এ নিয়ে চর্চা চলছে, রাম মাধবের বক্তব্যে এরও ইঙ্গিত মেলে।
অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য নেতারা যে ভাবে এনআরসি-র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কিন্তু উল্টোপথেই হাঁটলেন। এনআরসিকে তিনি বিশাল শংসাপত্র দেন। তাঁর কথায়, ১৯৫১ সালে এই কাজ করা উচিত ছিল। ৭০ বছর পরে তাঁরা সে কাজ করছেন। এ শুধু অসমের বিষয় নয়। দেশ জুড়ে এনআরসি করার উপরই জোর দেন তিনি।
প্রয়াত বিমলাংশু রায়ের ৮১-তম জন্মদিন উপলক্ষে বিমলাংশু রায় ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে বক্তৃতা করতে শুক্রবার শিলচরে এসেছেন বিজেপির থিংকট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত রাম মাধব। তাঁর নির্ধারিত বিষয় ছিল— নতুন ভারত নির্মাণঃ ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ ভারত। তাঁর কথায়, নতুন ভারত মানে ভারতের আমেরিকা হয়ে ওঠা নয়। নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টির জন্য গর্ববোধ করেই নতুন ভারত গঠন করা হবে।
বিজেপি যে শুধু গান্ধীজির চশমাই নেয়নি, আরও অনেক কিছু নিয়েছে, নিতে চলেছে, এরও আভাস মেলে রাম মাধবের ভাষণে। তিনি বলেন, নতুন ভারত হবে গান্ধীজির স্বপ্নের ভারত। তাঁর আদর্শের বাস্তবায়নই এখন গেরুয়াবাহিনীর লক্ষ্য। তাঁর কথায়, গান্ধীজিই বলে গিয়েছেন, আমরা শুধু রাজনৈতিকভাবে মুক্ত হয়েছি। স্বাধীন হবো যখন দেশের প্রতিটি মানুষ আর্থিক স্বনির্ভর হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ওই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন। তাঁর নেতৃত্বে নতুন ভারত দেখা আর খুব দেরি নয় বলেই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
নির্ধারিত বক্তার ভাষণে রাম মাধব এই অঞ্চলের ভারতে থাকার পূর্ণ কৃতিত্ব দেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও গোপীনাথ বরদলৈকে। বারবার একসঙ্গে দুইজনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিমলাংশু রায়ও শ্যামাপ্রসাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। এখন কাউকে আর উদ্বাস্তুর জীবন কাটাতে হবে না, তা নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে আইনে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনরায় উল্লেখ করেন।
এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রয়াত বিমলাংশু রায়ের জীবনীগ্রন্থ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। বিজেপি নেতা রাম মাধব এর আবরণ উন্মোচন করেন। বইয়ের লেখক দীপঙ্কর ঘোষ নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা করেন। স্বর্ণালী আচার্যের গানের মধ্য দিয়ে এ দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। স্বাগত ভাষণ দেন বিমলাংশু রায় ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ট্রাস্টি তথা শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়।
ধন্যবাদ জানান তাঁর মা তথা বিমলাংশু রায়ের পত্নী বাণী রায়। তিনিই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। বক্তৃতা করেন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, ডেপুটি স্পিকার আমিনুল হক লস্কর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থও। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপচন্দ্র নাথ, শিলচর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বাবুল বেজবরুয়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। দর্শকাসনে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়, প্রাক্তন সাংসদ কমলেন্দু ভট্টাচার্য সব শহরের বহু বিশিষ্টজনকে দেখা যায়।