Barak UpdatesBreaking News
যৌনপল্লীকে থিম করল হাইলাকান্দির পূজা কমিটিRed light area made Puja theme by a committee in Hailakandi
৩ অক্টোবরঃ হাইলাকান্দির মা অন্নপূর্ণা ক্লাবের এ বার সপ্তম বর্ষের পুজো। শুরু থেকেই দর্শক টানার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে তাঁরা। গত বছর মণিপুরি সংস্কৃতিকে নানাভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। আগে একবার হিন্দু-বৌদ্ধ সংস্কৃতি মিলিয়ে প্রতিমা গড়েন তাঁরা। এ বার যৌনপল্লীকে দুর্গাপূজার থিম করেছে। বাইরে থেকে মণ্ডপ যেন যৌনকর্মীদেরই এলাকা। ভেতরে পুতুল, ব্যানার আর ধারাভাষ্যে ফুটিয়ে তোলা হবে তাদের নানা যন্ত্রণার কথা। সমাজ যৌনকর্মীদের ভাল নজরে দেখে না। তাদের অচ্ছ্যুত করেই রাখে। কিন্তু তাদের অধিকাংশ শখে এমন পেশা বেছে নেননি। পাচারকারীদের শিকার তারা।
শিলচরেও একটি বহু পুরনো যৌনপল্লী রয়েছে। কিন্তু একে থিম হিসেবে নেওয়ার কথা আগে কেউ ভাবেনি। মা অন্নপূর্ণা ক্লাবের সম্পাদক গৌতম ঘোষ সোজাসুজি বলেন, প্রতিমা গড়তে যৌনপল্লীর মাটির প্রয়োজন হয়। তাহলে থিম করতে সমস্যা কোথায়! কিন্তু যৌনপল্লীকে থিম করা কেন? গৌতমবাবুর কথায়, নারীপাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতেই এমন ভাবনা।
প্রতিমাও তাই অভিনব। মা অসুরের সঙ্গে যুদ্ধরতা নন। নারীদের উদ্ধারকারী হিসেবেই গড়া হয়েছে তাঁকে। ডানা থাকবে। গায়ে নামাবলি। নারীপাচারের শিকার মহিলাদের তিনি উদ্ধার করতে ডানায় ভর দিয়ে চলে এসেছেন। কোনও অসুর নেই। তাদের যুক্তি, মহিষাসুর বধ করে শেষ হয়নি। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আজও নারীদের লড়তে হচ্ছে। সচেতনতার মাধ্যমে ওই লড়াইয়ের ময়দান তারা তৈরি করে দিচ্ছেন। যৌনশিক্ষা, নিরাপদ যৌন সংসর্গ ইত্যাদি আনা হলে আরও কাজ হতো।
এটা বুঝেও গৌতমবাবুরা সীমা অতিক্রম করতে চান না। বলেন, পুজো দেখতে নানা বয়সের মানুষ আসেন। কে কীভাবে নেবেন! তাই পুতুলের সাহায্যে শুধু যৌনকর্মীদের সমস্যা দেখানো হবে। পাচারকারীদের থেকে সবাই যেন সাবধান থাকেন, ছড়িয়ে দেওয়া হবে সেই বার্তা।
শিলচরের যৌনকর্মীদের তাতে অবশ্য খুব একটা যায়-আসে না। থিম শুনে খুব একটা গুরুত্ব দিলেন না কেউ। বরং বেশি জোর দেন, তারাও তিনবছর দুর্গাপূজা করেছিলেন। কিন্তু খরচ কুলানো যায় না। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।