Barak UpdatesBreaking News

উদ্বাস্তু যন্ত্রণার কথা বললেন সংবর্ধিত রাজদীপ
Radhamadhab College felicitates Dr. Rajdeep Roy

৬ জুনঃ দেশভাগের সময় তাঁর জন্ম হয়নি। ফলে দেশভাগের জ্বালা সরাসরি টের পাননি শিলচরের নবনির্বাচিত সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়। কিন্তু তিনি ঠাকুর্দার কাছ থেকে শুনেছেন, দেশভাগ কী যন্ত্রণার! ঠাকুমার কাছে জেনেছেন, গরুর গাড়িতে চেপে কী উতকণ্ঠার সঙ্গে সীমান্ত পেরিয়েছিলেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার রাধামাধব কলেজে সংবর্ধিত হয়ে উদ্বাস্তুদের কথাই তুলে ধরলেন ডা. রায়। বললেন, আমি উদ্বাস্তু পরিবারের সন্তান। এ বার যখন সংসদ ভবনে ঢুকি, প্রথমে আমার উদ্বাস্তুদের কথাই মনে হচ্ছিল। মনে পড়ে যায় ঠাকুর্দার গল্প, ঠাকুমার নানা দুঃখের কাহিনি। তাই তিনি জোর গলায় জানিয়ে দেন, ২৪ ঘণ্টা তিনি মানুষের কাজ করে যাবেন।

১৯৭১ সালে রাধামাধব কলেজের প্রতিষ্ঠা। রাজদীপ রায়ের মা বাণী রায় স্মৃতিচারণ করেন, প্রয়াত বিমলাংশু রায়ের বাড়ির-অফিস থেকেই এই কলেজ তৈরির স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। জমিদাতা হৃষিকেশ রায়কে বলেছিলেন, রাধামাধবের নামে স্কুল হয়েছে, এ বার একটি কলেজ গড়ুন। সেই কথার সূ্ত্র ধরেই কলেজের কাজ একটু একটু করে এগোতে থাকে। বিমলবাবু দীর্ঘদিন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন। সেই সূত্রেই এ দিন নতুন সাংসদ রাজদীপ রায়কে সংবর্ধনা, জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রভাতকুমার সিনহা এবং ইংরেজি বিভাগের প্রধান অরুণাভ ভট্টাচার্য। সংবর্ধনা জানানো হয়েছে বাণীদেবীকেও।

কলেজ পরিচালন সমিতির বর্তমান সভাপতি নিখিলভূষণ দে জানান, ৪৮ বছর ধরে কলেজটিতে শুধু কলাবিভাগেরই স্বীকৃতি মিলেছে। এলাকার ছাত্রছাত্রীদের চিন্তা করে ১২ বছর ধরে বাণিজ্য বিভাগ চালানো হচ্ছে বটে, কিন্তু এখনও সরকারের অনুমোদন মেলেনি। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে তিনি রাজদীপবাবুকে অনুরোধ জানান।

ডা. রায় অবশ্য তাঁর ভাষণে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন, শনিবার শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কথা হবে। তখন তিনি এ নিয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। এই কলেজে না পড়লেও এর সঙ্গে যে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে, সে কথারও উল্লেখ করেন নতুন সাংসদ। জানান, পিসির সঙ্গে সরস্বতী পূজার দিনে তিনভাই চলে আসতেন রাধামাধব কলেজে। তখন বাঁশের বেড়া, টিনের চাল। কিন্তু আনন্দ-স্ফূর্তিতে ঘাটতি ছিল না। পূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠান হতো। তাঁরা আসতেন।

রাজদীপ রায় তাঁর বক্তৃতায় বারবার উল্লেখ করেন বাবা বিমলাংশু রায়ের কথা। তাঁর শিক্ষাতেই যে তিনি নিজের জীবনগঠনের চেষ্টা করেছেন, জানান তা-ও।

এ দিন জমিদাতা পরিবারের সদস্য অংশুকুমার রায়, প্রাক্তন অধ্যক্ষ জগদীশচন্দ্র মজুমদার, পরিচালন সমিতির সদস্য বিশ্বতোষ চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন। সঞ্চালনায় ছিলেন ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুদর্শন গুপ্ত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker