Barak UpdatesBreaking News
প্রভাতফেরি, নাচে-গানে রবীন্দ্র তর্পণRabindra Jayanti observed amidst a host of programmes
৯ মে : পঁচিশে বৈশাখের সকালে সঙ্গীতমুখর হয়ে ওঠে শহর শিলচর।বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন শোভাযাত্রার মাধ্যমে শহর পরিক্রমা করে তারাপুরে রবীন্দ্র মূর্তিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে। সকালে রবীন্দ্র রোটারিতে কবি প্রণাম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিলচর পুরসভা ও লায়ন্স ক্লাব অব শিলচর সেন্ট্রাল। রবীন্দ্র মূর্তিতে প্রথমে মাল্যদান করেন পুরসভার চেয়ারম্যান নীহারেন্দ্র নারায়ন ঠাকুর। এরপর পুরসভা ও লায়ন্স ক্লাবের সদস্য সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে রবীন্দ্র তর্পণ শুরু হয়। আর্য সংস্কৃতি বোধনি সমিতি ও অন্য কয়েকটি সংগঠন রবীন্দ্র মূর্তির সামনে নাচ গান ইত্যাদি পরিবেশন করে।
এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিষ্ট লোক গবেষক অমলেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই দেশের প্রথম ব্যক্তি যিনি এ দেশের ঐতিহ্যগত আদর্শকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছিলেন। তাঁর গীতাঞ্জলি কাব্যেও একটা আধুনিক ধারা রয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর বরাক উপত্যকার মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কেন্দ্র করে একটা গৌরবের বছর। আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১৯১৯ সালে কবিগুরু রেলে চড়ে বরাক উপত্যকা থেকে সিলেট গিয়েছিলেন। তিনি জানান, সেসময় শিলচর পুরসভার সভাপতি কামিনী কুমার চন্দের বিশেষ তৎপরতায় করিমগঞ্জে কুড়ি মিনিট গাড়ি দাঁড় করানো হয়েছিল এবং সেখানেই কবিকে সংবর্ধনা জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্র সাহিত্যের একাধিক জায়গায় শিলচরের নাম রয়েছে। তাঁর শেষের কবিতায়ও শিলচরের উল্লেখ রয়েছে। তাঁর কথায়, রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিন অন্য কোনও অনুষ্ঠান রাখা মোটেই ঠিক নয়। বিশেষ করে এ বছর পরীক্ষা রাখায় তিনি ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথকে কোন সংকীর্ণ চিন্তাধারার মধ্যে আবদ্ধ রাখা মোটেই উচিত নয়। আর সাম্প্রতিক সময়ে বাঙালিকে একমাত্র উত্তরণের পথ দেখাতে পারেন রবীন্দ্রনাথ।
পুরপতি নীহারেন্দু নারায়ণ ঠাকুর বলেছেন, রবীন্দ্র জয়ন্তী পালনের জন্য অনেকেই সারা বছর উদগ্রীব হয়ে থাকেন। মানুষ সাধারনত রবীন্দ্রনাথকে কবিগুরু হিসেবেই বেশি মনে রাখেন, কিন্তু বাংলা সাহিত্যের এমন কোনও বিভাগ নেই যেখানে রবীন্দ্রনাথের অবদান নেই। কবিতা, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি তাঁর অনবদ্য লেখনীর মাধ্যমে বাংলা ও বাঙালিকে উজাড় করে দিয়ে গেছেন। কবির এই সৃষ্টি চিরন্তন। তিনি বলেন, বাঙালি যতদিন তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে ততদিন রবীন্দ্রনাথ বাঙালির কাছে প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবেন। কবির জন্মদিন পালনকে আরও সার্বিকভাবে করার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান। পুরপতি বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি, আদর্শ ইত্যাদি পৌঁছে দিতে এ ধরনের অনুষ্ঠান করা একান্ত প্রয়োজন। কারণ নতুন প্রজন্ম যেভাবে ফেসবুক কম্পিউটারের দিকে ঝুঁকছে, তাতে বাংলা ও বাঙালির অস্তিত্ব অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালন আরও ব্যাপকভাবে করার ক্ষেত্রে পুরপতি গুরুত্ব আরোপ করেন।