Barak UpdatesBusinessBreaking News

প্রস্তাবিত অ্যামিউজমেন্ট পার্ক হলে আরও সবুজ হবে গান্ধীবাগ : এপিডিএল
Proposed Amusement Park will further the green belt of Gandhi Bagh: APDL

২ অক্টোবর : ঠিক এই মুহূর্তে গান্ধীবাগ যতটা সবুজ রয়েছে, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক হয়ে গেলে এই পুরো এলাকাটি আরও সবুজ হয়ে উঠবে। কারণ এখন পার্কে যে গাছ রয়েছে সেগুলো তো কাটা হবেই না, বরং এখানে আরও গাছ লাগানো হবে। আর এই সংখ্যাটা একেবারেই নগণ্য নয়। সবুজ ধ্বংস করে গান্ধীবাগ অ্যামিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণ হচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ কথা জানাল নির্মাণ সংস্থা প্রোগ্রেসিভ ডেভেলপার্স লিমিটেড (এপিডিএল)।

এক সাংবাদিক বৈঠকে এপিডিএল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর পার্থ সারথি চৌধুরী বলেন, গান্ধীবাগে সবুজায়ন তো হবেই, এর পাশাপাশি পুরো পার্কের সামগ্রিক উন্নয়নও হবে এই নতুন প্রজেক্টের মাধ্যমে। তিনি বলেন, পুরো প্রকল্পের দিকে লক্ষ্য রেখে পার্কে যত বেশি সম্ভব গাছ লাগানো যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। এজন্য তাঁরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসালটেন্ট ড. দেবাশিস দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি সরকারের বন ও পরিবেশ বিভাগের নিয়মনীতি অনুযায়ী গাছ লাগানোর বিধান দেবেন। গান্ধীবাগে কী ধরনের কাজ লাগানো উপযোগী, তিনি সে ব্যাপারেও পরামর্শ দেবেন।

প্রাথমিকভাবে নিম, দেবদারু ইত্যাদি গাছের চারা রোপণ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, যে গাছ রয়েছে, তা কাটা হবে না, বরং প্রয়োজনে একটা-দুটো গাছ শিফটিং করা হবে। তিনি এও বলেন, সবুজায়ন নিয়ে কেউ গ্রিন ট্রাইবুনালে যেতে চাইলে এপিডিএল তাকে স্বাগত জানাবে। কারণ এতে কোম্পানিরও নিজেকে উন্নত করার সুযোগ থাকবে। কিন্তু পার্ক নিয়ে অপপ্রচার করলে তা শিলচরের ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গল হবে না।

গান্ধীবাগ অ্যামিউজমেন্ট পার্ক সম্পর্কে বলতে গিয়ে কোম্পানির ডিরেক্টর রাজেশ কান্তি পাল বলেছেন, যে সাপনালাটি দীর্ঘদিন ধরে গান্ধীবাগে ফেলে রাখা হয়েছে, সেটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এর দুটি পাড় বাঁধিয়ে জলে বোটিং চালু করা হবে। তাছাড়া গান্ধীবাগে জলাশয় এলাকা আরও বেড়ে যাবে। কারণ যে রাইডগুলো নিয়ে আসা হচ্ছে, সেগুলো জলাশয় নির্ভর। তিনি দাবি করেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্কের সঙ্গে তুলনা করে আধুনিক মানের পরিবেশ বান্ধব ইকুইপমেন্ট দিয়ে তা গড়ে তোলা হবে।

Pic Credit:Jatayu

তিনি আরও জানান, পার্কটি হয়ে গেলে কমপক্ষে ৫০০ পরিবার এ থেকে উপকৃত হবে। বর্জ ব্যবস্থাপনার জন্যও গান্ধীবাগে একটি ইউনিট বসানো হবে। থাকবে মুক্ত পার্কিং সুবিধা। কথাপ্রসঙ্গে এপিডিএল কর্তা মন্তব্য করেন, গান্ধীবাগে হোটেল বা মার্কেট কমপ্লেক্স না হলে রাজস্ব আয় হবে না। আর মাত্র ১০ শতাংশ জায়গা ব্যবসায়িক কারণে খরচ করে গান্ধীবাগের ৯০ শতাংশ জায়গাকে উন্নত করা হচ্ছে। এতে আখেরে লাভ হবে শিলচরের এবং উপত্যকার আগামী প্রজন্মের।

তিনি আরও যোগ করেন, গান্ধীবাগের প্রস্তাবিত অ্যামিউজমেন্ট পার্কটি প্রকল্পের বাইরে গিয়ে মোটেই নির্মাণ করা হচ্ছে না। প্রতিটি কাজই হবে পুরসভাকে জমা দেওয়া প্ল্যান-এস্টিমেট অনুসারে। আর এজন্য কোনও দ্বিচারিতার আশ্রয়ও নেওয়া হয়নি। কাজের বরাত পাওয়া নির্মাণ সংস্থা আসাম প্রোগ্রেসিভ ডেভেলপার্স লিমিটেডের (এপিডিএল) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গান্ধীবাগের প্রস্তাবিত অ্যামিউজমেন্ট পার্কটি সবুজকে ধ্বংস করে নির্মাণ করা হচ্ছে না, বরং শহরের কেন্দ্রস্থলে থাকা ঝোপঝাড়ে পরিবেষ্টিত অব্যবহৃত কয়েক বিঘা জমি নতুনভাবে শহরবাসীকে তুলে দিতে চাইছে শিলচর পুরসভা। আর এজন্য পুরসভা কাজের বরাত দিয়েছে এই শহরেরই নির্মাণ সংস্থাকে।

পার্থ চৌধুরী আরও জানান, প্রস্তাবিত অ্যামিউজমেন্ট পার্ক নিয়ে তাদের কোম্পানি যে প্ল্যান-এস্টিমেট জমা দিয়েছে, তাতে গান্ধীবাগের বর্তমান উদ্যান, গান্ধীভবন, জাতীয় ব্যায়াম বিদ্যালয়, বিপিন পাল সভাস্থল ও শহিদ মিনারের স্থানটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে গান্ধীভবনের দ্বিতলে রেস্টুরেন্ট তৈরি করার কোনও পরিকল্পনা পুরসভা বা এপিডিএল-এর নেই। বর্তমান উদ্যানটি অমরুত প্রকল্পের আওতায় তৈরি হচ্ছে। ফলে এর সঙ্গে কোম্পানির অ্যামিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণের কোনও সংযোগ নেই। শুধু ভেতরে প্রবেশ করার জন্য গান্ধীভবনের পাশে একটি রাস্তা থাকবে। পার্থবাবু আরও বলেন, পুরো বিষয়টি করা হচ্ছে গোলদিঘি মলের নির্মাণের সময় যে নিয়মনীতি রাখা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই। যেহেতু গোলদিঘি মল সারা উত্তরপূর্বের মধ্যে শিলচর পুরসভার একটি সফলতম প্রজেক্ট, তাই পার্কের ক্ষেত্রেও হুবহু একই সিস্টেম রাখা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, গোলদিঘি মল নির্মাণের পর উত্তরপূর্বের অন্য রাজ্য থেকেও মল নির্মাণের ডাক পেয়েছে এপিডিএল।

Pic Credit:Jatayu

পার্থ চৌধুরী বলেন, গান্ধীবাগে যে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক হচ্ছে তার পুরো মালিক পুরসভা। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, পুরসভা একটি টাকা খরচ না করেই দৃষ্টিনন্দন একটি বিনোদন পার্ক পেয়ে যাবে। তাছাড়া এখানে কমার্শিয়াল ভবন তৈরি হবে, এ থেকে পুরসভা প্রতি মাসে ভাড়াও পাবে। ফলে এই ভবন থেকে পুরসভার যে শেয়ার পাওয়ার কথা ছিল, তা-ই বোর্ড তাদের ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে মনে করছে। গোলদিঘি মলে পুরসভার শেয়ার ছিল ৩৩ শতাংশের মতো। পার্থ চৌধুরী বলেন, জনগণ পাশে ছিলেন বলেই গোলদিঘি মল আজ উত্তরপূর্বের মধ্যে একটি অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা। আজ এটি শিলচরের গর্বও বটে। ফলে গান্ধীবাগ অ্যামিউজমেন্ট পার্ক তৈরি হয়ে গেলে এটিও শিলচরের মানুষ পছন্দ করবেন বলে তিনি মনে করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker