NE UpdatesBarak Updates
মলিনের মৃত্যুঃ জেলাশাসককে চেপে ধরলেন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরাMolin’s death: Journalists gives vent to their anger in front of DC Cachar
৩০ জুলাইঃ মলিন শর্মার দুর্ঘটনায় পড়ার রাতে জেলা প্রশাসন বা পুলিশ কর্তাদের কাউকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। মৃতদেহের ময়না তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় সই আনতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ছোটাছুটি করতে হয়েছে। কেউ সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। অথচ সরকারি বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বারবার মলিন শর্মাদেরই প্রয়োজন পড়ে। এ নিয়ে মঙ্গলবার জেলাশাসক আহূত বৈঠকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন কর্মরত সাংবাদিকরা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতেই তাঁরা বলেন, ঘাতক লরিটিকে এ পর্যন্ত চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এ পুলিশের ব্যর্থতা। তাঁরা আরও ১২ ঘন্টা সময় বেঁধে দেন লরিকে চিহ্নিত করে চালককে গ্রেফতারের জন্য। তাঁরা চালককে ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধিতে খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত করতে দাবি করেন। দুর্ঘটনা তারাপুর পুলিশ ফাঁড়ির নাকের ডগায় ঘটলেও একবারের জন্য তিনি সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তাদের মূল দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রয়াত মলিন শর্মার পরিবারে ২০ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য, একজনকে সরকারি চাকরি এবং মেয়ের পড়াশোনার অর্থভার লাঘবের ব্যবস্থা করা।
জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরি সভার শুরুতেই দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, সেই রাতে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার বার্তাগুলি পড়তে পারেননি। সে জন্যই উপযুক্ত সময়ে সাড়া দিতে পারেননি। সকালে তাঁর মৃত্যুসংবাদে তিনিও সাংবাদিকদের মতই ব্যথিত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, প্রায় প্রতিদিনই দেখা হতো মলিন শর্মার সঙ্গে। সভায় উপস্থিত তাঁর স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে বেশ কিছুসময় কথা বলেন জেলাশাসক। তিনি কথা দেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে মলিনের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেবেন। তাতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তার আর কোনও ফি লাগবে না।
আর্থিক সাহায্য প্রসঙ্গে জেলাশাসক মাদ্দুরির বক্তব্য, দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের একটি প্রকল্প থেকে তিনি দুই লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করে দেবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে সাহায্যের জন্যও তিনি প্রস্তাব পাঠাবেন। এ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্যের জন্য আবেদন জানানো হলে তিনি গুরুত্ব সহ তা পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।
এ ছাড়াও স্মারকপত্রের মাধ্যমে জেলাশাসকের কাছে সাংবাদিক সহ সাধারণ জনতার পথচলাচলের নিরাপত্তা দাবি করা হয়। সে জন্য অবিলম্বে বাইপাসের কাজ দ্রুত শেষ করা, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো, ট্রিপার চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত পরীক্ষা ও গতিবেগ বেঁধে দেওয়া, মধ্যরাতের আগে শহরে লরি চলাচলা করতে না দেওয়া এবং ওভারলোডিং বন্ধ করার অনুরোধ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জগদীশ দাস জানান, এরই মধ্যে তারা রাত ১টার আগে শহরে লরি ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সোমবার থেকে তা কার্যকর হয়ে গিয়েছে। তারাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, ঘাতক লরিকে চিহ্নিত করে চালককে গ্রেফতারের জন্য তাঁরা সব ধরনের চেষ্টা করে চলেছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।