Barak UpdatesBreaking News
ডিজিটালের নামে লোকসান হয়েছে বরাকের বাগান মালিকদের!It’s the tea garden owners who suffered loss in the name of digital payment!
২২ ফেব্রুয়ারি: বহু ঢাকঢোল পেটালেও ডিজিটাল ইন্ডিয়া-কে বরাক উপত্যকার চা বাগান পর্যন্ত পৌঁছানো যায়নি৷ পরিকাঠামোর অভাবে সব চেষ্টা ব্যর্থ৷ বাগান মালিকরা ক্ষুব্ধ অহেতুক তাদের বেশ কিছুদিন দোটানায় ভুগতে হয়েছে৷ শ্রমিকরাও কম সমস্যায় পড়েননি৷ সাপ্তাহিক মজুরি অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল৷ এখন অবশ্য আবার নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বাগান শ্রমিকদের সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করানোর জন্য৷ সঙ্গে এটিএম কার্ডও৷
নগদে নয়, সমস্ত লেনদেন ডিজিটালি হবে, এই স্লোগান সামনে রেখে বছর তিনেক আগে বরাকের চা বাগানগুলিকেও ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মজুরি প্রদানের কথা বলা হয়েছিল৷ সে জন্য দৌড়ঝাঁপ করে সমস্ত শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়৷ কিন্তু তাদের এটিএম কার্ড দিলে তারা কি টাকা তুলতে পারবেন? দ্বিতীয়ত, এটিএমের খোঁজে শ্রমিকদের যে দূরদূরান্তে যেতে হবে ! এ ছাড়া, সপ্তাহে এত শ্রমিক এটিএমে লাইন দিলে অন্যরা আর টাকা তুলতে পারবেন কি? সে সব ভেবে সব বাগানে এটিএম বসানোর কথা হয়৷ কিন্তু তা কি আর বললেই হয়ে যায়! তাই নিযুক্তি দেওয়া হয় কম্যুনিটি সার্ভিস প্রভাইডার বা সিএসপি৷ তাদের দায়িত্ব বাগান মালিকরা সাপ্তাহিক মজুরির টাকা ব্যাঙ্কে দেওয়ার পর তা তুলে এনে শ্রমিকদের মধ্যে বন্টন করা৷
ওই কাজ করার জন্য ইন্টারনেট আবশ্যক৷ আর এখানেই যত জটিলতা৷ অধিকাংশ বাগানে নেটওয়ার্ক পাওয়া মুশকিল৷
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার বরাক ভ্যালি শাখার সচিব শরদিন্দু ভট্টাচার্য বলেন, এই সময়ে অধিকাংশ বাগান পুরনো প্রক্রিয়ায় ফিরে গিয়েছে৷ এখন হাতে হাতেই মজুরি মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁর বক্তব্য, মাঝে ওইসব করতে গিয়ে বাগান মালিকদের চাপ বেড়ে গিয়েছে৷ এ ছাড়া, ২০১৯ সালের নতুন নিয়ম অনুসারে কোনও বাগানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বছরে এক কোটি টাকার বেশি তুললে ২ শতাংশ কর হিসেবে অগ্রিম (টিডিএস) কেটে রাখা হয়৷
ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মজুরি দেওয়া গেলে তাতে সমস্যা নেই৷ এখানে তা হয় না বলে মজুরির জন্যই এক কোটি টাকার বেশি ব্যাঙ্ক থেকে তুলতে হয়৷ কিছু বাগান রয়েছে, তিনমাসেই এক কোটি টাকার বেশি মজুরি বাবদ খরচ হয়৷ এর পর টাকা তুলতে গেলেই ২ শতাংশ কেটে রাখা হচ্ছে৷ শরদিন্দুবাবুর কথায়, প্রকৃত করের অতিরিক্ত টাকা পরের বছর পাওয়া যায় বটে, কিন্তু এতদিন টাকা আটকে থাকার দরুন বাগানগুলি চলতি মূলধন সঙ্কটে ভোগে৷
বরাক উপত্যকার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অরুণজ্যোতি দে অবশ্য অধিকাংশ বাগানে নগদে মজুরি দেওয়ার কথা মানতে রাজি হননি৷ তিনি বলেন, নেটওয়ার্কের সমস্যার দরুন শুধু প্রত্যন্ত এলাকার বাগানগুলিতে সিএসপি চালানো যায়নি৷ অন্যত্র তা চলছে৷ শুধু কাছাড় জেলাতেই এই সময়ে ৩১৪ জন সিএসপি রয়েছেন৷ মজুরি বিলির দিনে এক বাগানে বেশ কয়েকজন সিএসপিকে বসাতে হয়৷ কারণ এক সিএসপি একবারে ২৫ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করতে পারে না৷ অথচ ছোট বাগানেও সাপ্তাহিক মজুরি ৩ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়৷ অরুণবাবুর দাবি, সমস্ত বাগান শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হয়ে গিয়েছে৷ সবার এটিএম কার্ড হতে চলেছে৷ ব্যাঙ্কগুলি চাইছে সমস্ত বাগানে এটিএম বুথ বসাতে৷ তা করা গেলে অনেক সমস্যা মিটে যাবে৷
কিন্তু নেটওয়ার্ক না মিললে যে সবই পণ্ড হয়ে যাবে! কাছাড়ের জেলাশাসক বর্ণালী শর্মা ব্যাঙ্ক ম্যানেজারদের বৈঠকে জানিয়েছেন, তিনি এ নিয়ে বিএসএনএলকে চিঠি লিখবেন৷ বাগানগুলিতে টাওয়ার বসাতে বলবেন তিনি৷ কাছাড়ে ছোট-বড় ১০৫টি চা বাগান রয়েছে৷ মোট বার্ষিক উৎপাদন ৫০ হাজার কেজি৷