Barak UpdatesBreaking News
এনআরসির ক্ষোভ প্রশমনেই হিমন্তের পুজো সফর !Himanta’s Puja tour of Silchar an attempt to dilute NRC anger among the people!
৭ অক্টোবরঃ মহাসপ্তমীর রাতে আইজল থেকে সড়কপথে শিলচর আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য, পূর্ত ও অর্থ বিভাগের মন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। অষ্টমীর দিন এই অঞ্চলের মোট ২৯টি পুজোমণ্ডপ তিনি ঘুরে দেখেন। মত বিনিময় করেন দলীয় কর্মকর্তা, বিভাগীয় অফিসার এবং সাধারণ দর্শনার্থীদের সঙ্গে। সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা কথা না হলেও বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনের ফাঁকে তিনি তাঁদের বলেন, অনেকদিন ধরেই একবার বরাকের পুজো দেখার ইচ্ছে ছিল। আইজলে দিন মিলিয়ে নেডা-র সভা পড়ে যাওয়ায় সুযোগটা আর হাতছাড়া করিনি। এর সঙ্গে রাজনীতি বা প্রশাসনিক কোনও বিষয় নেই বলেই তিনি বারবার উল্লেখ করেন। কিন্তু নেডা-র আহ্বায়ক হিমন্ত কি শুধুই পুজো দেখতে দেড়দিন কাটিয়ে গেলেন!
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এর মধ্যেও নানা গন্ধ পেয়ে চলেছেন। কারণ মোহন ভাগবত এনআরসি ইস্যুতে যেভাবে আরএসএস প্রচারক সহ সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের তাতিয়ে দিয়ে গেলেন এর ঠিক পরে হিমন্তের সফর যথেষ্ট তাতপর্যবাহী। ভাগবতের শিলচর আসার আগেই বিজেপির একাংশ সমর্থক এনআরসি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করে। আভা, নেলেকের মতো সংগঠনগুলি এই ধরনের ইস্যুতে দলীয় মতামত সাধারণ জনতার কাছে তুলে ধরবে বলে মনে করা হলেও এনআরসি-তে হিন্দু বাঙালিদের নাম বেশি হারে বাদ পড়ার পর এরা প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন।
বলা যায়, বিজেপি এখন ঘরে-বাইরে তোপের মুখে। বাইরে না হয় নানা কথা বলে মুখরক্ষা করা যায়, কিন্তু ভেতরের অসন্তোষ ক্রমে বিদ্রোহের পথে যাচ্ছিল। হিমন্ত ওই ক্ষতে মলম লাগাতেই পুজো দেখার নামে শিলচরে একরাত কাটিয়ে গেলেন। সবাইকে ডেকে বলে দিয়েছেন, এনআরসি নিয়ে হিন্দুদের মোটেও চিন্তার কিছু নেই। আগে এনআরসি-ছুট হিন্দুদের বাঁচানোর জন্য নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হবে, এর পর এনআরসি-র বাকি কাজ এগোবে। বিজেপি সরকার চাইছে, ট্রাইব্যুনালে মামলা পাঠানোর আগে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে নিতে। তাহলে হিন্দুদের আর ট্রাইব্যুনালে ছুটতে হবে না।
রঞ্জন গগৈ-প্রতীক হাজেলার তৈরি এই এনআরসি বাতিলও হয়ে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন অসম মন্ত্রিসভার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। বলেন, দেশ জুড়ে এনআরসি তৈরির পরিকল্পনা চলছে। এক নীতিতে সারা দেশে তখন নাগরিক পঞ্জি তৈরি হবে। সে সময় ওই নীতিতেই অসমেও আবার এনআরসি হবে।
হিমন্ত দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় দুই উপত্যকার সমন্বয়ের কথায় বারবার গুরুত্ব দেন। এই ব্যবধান কাটিয়ে ওঠা গেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায় বলেন, এটি হিমন্ত বিশ্ব শর্মার একেবারেই পুজো-সফর। তবু আলাপ-আলোচনায় মূলত দুটি ইস্যুতে বিশেষ জোর দিয়েছেন। প্রথমত, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে আনা। দ্বিতীয়ত, এনআরসি নিয়ে হিন্দুদের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পালও হিমন্তের সফর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জানান, মূলত এনআরসি নিয়েই তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন। হিন্দুদের উদ্বিগ্ন না হতে বলে গিয়েছেন।