Barak UpdatesBreaking News
শিলচর স্টেশনে মা-ই ফেলে গিয়েছিলেন প্রতিবন্ধী সুমনকেDifferentially-abled Suman was left at Silchar Railway Station by his mother
২৪ অক্টোবরঃ মা…। একটা কথাই স্পষ্ট বলতে পারে ছেলেটা। কিন্তু কোথায় তার মা! করিমগঞ্জ রেলস্টেশনে হন্তদন্ত হয়ে মা-কে খুঁজতে দেখে সেদিন বিব্রত হয়ে পড়ে জিআরপি-ও।
ছয়মাস পরে সোমবার মায়ের ছোঁয়া পায় সুমন। মাকে জড়িয়ে ধরে একবার গালে গাল লাগায়, আর একবার শক্ত করে হাতদুটো চেপে ধরে। কত প্রশ্ন যে তাঁর! সেরিব্রাল পালসির দরুন বলতে পারছিল না।
রোগটা তার জন্ম থেকেই। সে জন্যই এত যন্ত্রণা, বলছিলেন ত্রিপুরার বিশালগড়ের লক্ষ্মী সাহা। দেড় বছর বয়সে বাবা সুজিত সাহা অন্যত্র চলে যান। সে থেকে মানুষের বাড়িতে খেটে চলেছেন তিনি। এখন কাজ করছেন আগরতলার এক মলে। কিন্তু ছেলেকে ঘরে রেখে যাওয়া যায় না। মলে নিয়ে গেলেও সমস্যা। তাই এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে আসেন শিলচরে। ফিরে যান সুমনকে স্টেশনে ছেড়ে।
শিলচর থেকে করিমগঞ্জে কী করে গেল, সে কারও জানা নেই। জিআরপি তাকে করিমগঞ্জ জুভেনাইল আদালতে পেশ করে। বিচারকের নির্দেশে প্রথমে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। পরে ‘এরা আমাদের’ নামে এক হোমে তাঁর ঠাঁই হয়। কিন্তু প্রতিনিয়ত মাকে খুঁজে বেড়ানোর ব্যাপারটা কেউ সইতে পারছিলেন না।
‘সক্ষম’ নামে এক এনজিও বরাক উপত্যকা এবং ত্রিপুরায় তাদের সমস্ত শাখায় সুমনের ছবি পাঠিয়ে সন্ধান জানতে চায়। ওই সূত্রেই ‘অভয় মিশন’ মায়ের সন্ধান দেয়। আগরতলায় তাদের হোমে সুমন ছিল দীর্ঘদিন। গত ১০ ডিসেম্বর ১৮ বছর হওয়ায় তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। করিমগঞ্জ পুলিশ মায়ের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ত্রিপুরা পুলিশকে জানালেও গুরুত্ব পায়নি।
গত সপ্তাহে ‘সক্ষম’-এরই কর্মকর্তা তন্দ্রা দে বিশালগড়ে যান। সোমবার শিলচরে নিয়ে আসেন লক্ষ্মীদেবীকে। হোমে সে রাতেই দেখা হয় মা-ছেলের। মঙ্গলবার জুভেনাইল আদালতে তোলা হয় তাদের। বিচারক বলেন, ছেলের দায়িত্ব নিতেই হবে। প্রতি মাসে নিজের থানায় সুমনকে নিয়ে গিয়ে রিপোর্ট করতে নির্দেশ দেন। বুধবার শিলচর থেকে ট্রেনে উঠতে গিয়ে বলেন, ছেলেটাকে সামলানোই যে বড় কঠিন। তাকে ফেলে আমি কি আর ছয়মাস শান্তিতে ঘুমিয়েছি!