India & World UpdatesCultureBreaking News
তাপস পাল প্রয়াতActor Tapas Pal dies of cardiac arrest
১৮ ফেব্রুয়ারি: বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা, প্রাক্তন সাংসদ তাপস পাল প্রয়াত। মঙ্গলবার ভোরে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।
তাপস পালের অভিনয়ের দক্ষতা দেখে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছিলেন, ‘‘দাদার কীর্তিতে তাপস পাল যে অভিনয় করেছেন তা আমি করতে পারতাম না।’’ ‘দাদার কীর্তি’র মতো ‘সাহেব’ ছবিতেও তিনি উজ্জ্বল। বার বার এমন চরিত্র নির্বাচন করছেন যা বাংলার তথাকথিত ‘হিরোইজম’কে ভেঙে দিয়েছে। এই কারণে তাঁর একের পর এক পারিবারিক গল্পের ছবি হয়ে উঠেছিল তৎকালীন বাংলার ‘কমার্শিয়াল ছবি’। আর তিনি হয়ে উঠেছিলেন অভিনেতা থেকে স্টার৷ দর্শক দেখেছেন ‘উত্তরা’ বা ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ ছবিতে তাঁর অসামান্য অভিনয়।
১৯৮৪তে হীরেন নাগের ছবিতে তাঁর বিপরীতে নায়িকা ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। রাখী গুলজারের সঙ্গেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তরুণ মজুমদারের ডাকে মুম্বই থেকে কলকাতা ফিরে এসে দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে অভিনয় করেন ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবিতে। ১৯৮৫-তে এই ছবি বক্স অফিসে বিপুল সাফল্য এনে দেয়। বাংলা ছবিতে তৈরি হয় দেবশ্রী-তাপস জুটি৷ ‘অর্পণ’, ‘সুরের সাথী’, ‘সুরের আকাশে’, ‘নয়নমণি’, ‘চোখের আলোয়’, ‘তবু মনে রেখো’ করেন দুজনে৷ পরে জুটি বাঁধেন শতাব্দী রায়ের সঙ্গে৷ শুধু শতাব্দী বা দেবশ্রী নয়, ইন্দ্রাণী হালদার থেকে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। দেবাদিত্যের ‘আটটা আটের বনগাঁ লোকাল’ ছবিতে শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
২০০১ সালে মোড় ঘুরে যায় তাপস পালের অভিনেতা জীবনে। ওই বছর তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হন৷ পরে ২০০৯-এ কৃষ্ণনগর থেকে জিতে সাংসদ হন তাপস পাল। নানা মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে রোজভ্যালি কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। শেষ পর্যন্ত অভিনয়ের চেনা জগতে আর ফেরা হয়নি৷ কিছুদিন অসুস্থতার শেষে মঙ্গলবারের প্রভাতে মৃত্যুর হাতছানি৷
কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন সাংসদ তাপস পালের প্রয়াণে শ্রদ্ধা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘বিশিষ্ট অভিনেতা ও প্রাক্তন সাংসদ তাপস পালের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। …তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ‘দাদার কীর্তি’, ‘সাহেব’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, ‘অমর বন্ধন’ ইত্যাদি। তিনি হিন্দি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন।’’
২০০১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরেই রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তাপস পাল। ওই বছর আলিপুর কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। এর পর ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালেও ওই কেন্দ্র থেকে ফের জয়ী হন তিনি। সে কথাও শোকবার্তায় তুলে ধরেছেন মমতা৷
তিনি লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১২ সালে তাঁকে বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে। এ ছাড়া তিনি ফিল্মফেয়ার ও কলাকার পুরস্কার পান। তাঁর প্রয়াণে অভিনয় ও রাজনৈতিক জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।’’ তাপস পালের আত্মীয়-পরিজনদেরও সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল দলনেত্রী
|