NE UpdatesBarak UpdatesBreaking News
অসম চু্ক্তিঃ বরাক সফরে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিClause 6: High level delegation visits Silchar
১৫ নভেম্বরঃ অসম চুক্তির ৬ নং অনুচ্ছেদ কার্যকরের লক্ষ্যে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি শুক্রবার বরাক সফরে আসে। বিমানবন্দর থেকে সোজা সার্কিট হাউসে। সেখানে বসেই একের পর এক বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে চলছে মত বিনিময়। শুনছেন বেশি, বলছেন কম। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিপ্লবকুমার শর্মা কমিটির প্রধান। সঙ্গে এসেছেন অন্য সদস্যরাও।
অসম চুক্তির ৬ নং ধারা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে এখানকার একেক সংগঠন একেক বক্তব্য পেশ করে। অসম চুক্তির ৬ নং অনুচ্ছেদের মূল কথাই হল অসমিয়াদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের সুরক্ষা৷ কমিটি তার প্রথম বৈঠকে প্রস্তাব নেয়, জনপ্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে ভূমিপুত্রদের জন্য ১০০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ, উচ্চশিক্ষাতেও তাদের জন্য সব আসন বরাদ্দ, অসমের ভূমির অধিকার শুধু ভূমিপুত্রদের মধ্যে সীমিত থাকবে ইত্যাদি৷ ভূমিপুত্র হোক বা অসমিয়া—সংজ্ঞা নির্ধারিত না হওয়ায় বরাক উপত্যকার সব জনগোষ্ঠী উদ্বেগে৷ কাদের তারা রাখতে চাইছেন, কাদের সমস্ত সুযোগসুবিধা কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা, তা পুরো ধোয়াশায়৷ তাই বরাক উপত্যকার নানা জনগোষ্ঠী, বিভিন্ন সংগঠন আজ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিপ্লবকুমার শর্মা নেতৃত্বাধীন কমিটিকে ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা বোঝালেন৷
অসম গণ পরিষদের হাইলাকান্দি জেলা সমিতির সোজা কথা, অসম চুক্তিতেই ১৯৭১-র কথা বলা হয়েছে৷ তাই ১৯৭১ সালের আগে থেকে যারা অসমে রয়েছে, তারা সবাই অসমের ভূমিপুত্র৷ ডিমাসা সংগঠনগুলির বক্তব্য, তাদের রাজা যুদ্ধবিগ্রহ করে এই অঞ্চলকে ধরে রেখেছিলেন বলেই আজ সবাই ভারতীয়৷ তাই নাগরিকত্ব ১৯৭১ ধরে নির্ধারণ হলেও দক্ষিণ অসমে ভূমিপুত্র হোক ১৮২৪ ইংরেজি ধরে৷ সে বছর ডিমাসা রাজা ও ব্রিটিশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল৷ তারা অসমকে উপজাতি রাজ্য ঘোষণার দাবি তোলেন৷ উপজাতি রাজ্য চায় ১৯ সংগঠনের জোট বরাক ভ্যালি ইন্ডিজেনাস এথনিক পিপলস কোঅর্ডিনেশন কমিটিও৷ তারা অসম চুক্তির ৬ নং অনুচ্ছেদ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান৷
নর্থ ইস্ট লিঙ্গুইস্টিক অ্যান্ড এথনিক কোঅর্ডিনেশন কমিটি (নেলেক) জানায়, অসমে যারা বসবাস করে, তারা সবাই বৃহত্তর অসমিয়া জনগোষ্ঠীর মানুষ৷ তাই অসমকে যারা নিজের মাতৃভূমি মনে করেন, তাদের সবার জন্য সংরক্ষণ কার্যকর হোক৷ তবে সেক্ষেত্রে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে যারা এসেছেন, তারা যেন বঞ্চিত না হন৷ অন্যদিকে নাগরিক অধিকার রক্ষা সুরক্ষা সমিতি (সিআরপিসিসি) হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে অসমে বসবাসকারী সকলের অধিকার সুরক্ষার দাবি জানান৷ তাদের কথায়, এই সময়ে কোনও বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের ভাবনা অবান্তর৷ অসমিয়ারাও এই রাজ্যে ভূমিপুত্র নয়৷ কারণ ১২-র শতকে তারা থাইল্যান্ড থেকে এ দিকে আসেন৷ কিন্তু বাঙালিরা রয়েছে এরও আগে থেকে৷ নিখিল অসম বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি মহাসভা জানায়, উপজাতির স্বীকৃতি না পেলেও তারা এই অঞ্চলের আদি বাসিন্দা৷
এদিকে শিলচরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব এই কমিটির যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠান৷ মহিলা কংগ্রেস সভাপতি সুস্মিতা বলেন, রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ জনগোষ্ঠী হচ্ছে বাঙালি৷ উচ্চক্ষমতার কমিটিতে বাঙালি প্রতিনিধি না থাকায় একে মেনে নেওয়া যায় না৷ চেয়ারম্যান শর্মা সহ কমিটির সদস্যরা অবশ্য কোনও ইস্যুতে কোনও মন্তব্য করেননি৷