AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/৪১ঃ বিদেশিদের শনাক্ত করতে ৫০০ টাস্কফোর্স কাজ করছে অসমেCitizenship/41: 500 Task Forces worked in Assam to identify foreigners
২৬ মার্চঃ ৫.৩২ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণ ও বহিষ্কারের দায়িত্ব রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনের, তা জেনে এই লক্ষ্যে অসম সরকার কী কী করেছে, জিজ্ঞেস করে যৌথ সংসদীয় কমিটি। উত্তরে আসাম পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল জানান, সাধারণত আমরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের মধ্য দিয়ে এগোই। যখনই কোনও ব্যক্তি ভারতীয় নয় বলে আমাদের সন্দেহ হয়, আমরা তার বিরুদ্ধে তদন্ত করি। তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে মামলা করি। তখন অভিযুক্তকে ভারতীয় বলে প্রমাণ করতে হয়। ট্রাইব্যুনাল কাউকে বিদেশি বলে ঘোষণা করলেই তাকে প্রথমে আটকে রাখা এবং পরে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমরা নিজেরা বহিষ্কার করতে পারি না বলে প্রত্যর্পণের ব্যাপারটা খুব গোলমেলে।
ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কাউকে তাদের দেশের নাগরিক বলতে মানতেই চায় না। সম্প্রতি দশজনকে তারা বাংলাদেশের নাগরিক বলে মেনে নেওয়ায় তাদের প্রত্যর্পণ করা হয়েছে। সীমান্তের ও-পারে জোর করে ঠেলে পাঠিয়ে লাভ হয় না। তারা আবার ফিরে আসে। কারণ তারা ভারতের নাগরিক নয় বলে আইনি প্রক্রিয়ায় ঘোষণা করা হয়নি। তাই আমরা আইনি প্রক্রিয়াটাই অনুসরণ করছি। কিন্তু এটি বড় দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এখন সারা অসমে ৫০০ টাস্কফোর্স রয়েছে। আমরা চাইছি প্রক্রিয়াটাকে ত্বরান্বিত করতে।
৫.৩৩ ডিজিপি আরও জানান, এ পর্যন্ত অসমে ৭৬ হাজার ৭৪০জনকে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩২ হাজার ২৪৩ জন ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যেকার এবং বাকি ৪৩ হাজার ৪৯৭জন ১৯৭১ সালের পরে এ দেশে ঢুকেছিল।
৫.৩৪ ডিজিপি জানান, বিদেশি বলে ঘোষণার পরই তাদের আর খুঁজে পাওয়া যেত না। অন্য জায়গায় চলে যেত। আমরা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করতাম, আটকে রাখতাম এবং পরে বলপূর্বক সীমান্তের ও-পারে ঠেলে দিতাম। প্রায় ৯০০ জনকে এ ভাবে খুঁজে বের করা হয়েছে। এখন ভারত সরকারের প্রত্যর্পণ নির্দেশের জন্য তাদের আটকে রাখা হয়েছে। আমরা অন্যদেরও খুঁজে বের করছি।
৫.৩৫ কাউকে যখন খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন ৪৩ হাজার ৪৯৭জনকে কিসের ভিত্তিতে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হল। যৌথ সংসদীয় কমিটির এই প্রশ্নে অসম সরকারের ডিজিপি বলেন, আমরা এখন খুব সতর্ক হয়ে গিয়েছি। যখনই কাউকে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়, তখনই আমরা তাদের সেখান থেকে ধরে আনার ব্যবস্থা করেছি। সঙ্গে সঙ্গে তাদের এনে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আগে এই প্রক্রিয়াটা ছিল না। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিদেশি বলে ঘোষণা করলেও উধাও হয়ে যেত তারা। অন্য রাজ্য বা অন্য কোনও জায়গায় চলে যেত। আমরা তাদের ধরে আনার চেষ্টায় থাকতাম। এটা বড় একটা ফাঁক ছিল। এখন সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ফোটোগ্রাফ সংগ্রহ করা হয়। এখন আমরা তাদের ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারি।
৫.৩৬ অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, এই প্রশ্নে ডিজিপির জবাব, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্রতিরক্ষার প্রথম লাইন হিসেবে বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ পাহারা রয়েছে। তার পরে রয়েছে থানা এবং টাস্ক ফোর্স। তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করে।
৫.৩৭ বিহারে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, জানতে চাইলে সে রাজ্যের অ্যাডিশনাল ডিজিপি জানান, আমরা নিয়মিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করে চলেছি। যখনই বৈধ নথি ছাড়া কোনও বিদেশিকে ধরা হয়, ফরেনার্স অ্যাক্ট মেনে আমরা এগোই এবং শেষে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৫-১৬ সালে মোট ৬জন বিদেশিকে নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫জন ছিল চিনের, ১জন নাইজেরিয়ার।
৫.৩৮ কমিটির সামনে উপস্থিত হয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের অ্যাডিশনাল ডিজিপি জানান, ১৯৪৭ সালের পরে তো বটেই, ১৯৭১ সালের পরেও বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ করেছে। বিস্তৃত ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এ শুধু মুখের কথা নয়। সরকারের বক্তব্য। মীরা রোড ভায়েন্দার সহ মুম্বাই নগরীর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে প্রচুর অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। গোপাল শেঠিজি এখানে বসে আছেন। তিনি ভাল করে জানেন, নিউ রোড, মুমব্রা, পুনের একাংশ, এমনকী আউরঙ্গাবাদেও ছাত্ররা পড়তে আসে। দুই-তিন-চার বছর পরে তাদের আর দেখা যায় না। মাননীয় চেয়ারম্যান জানেন এবং তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও রয়েছে। তারা স্রেফ তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট ফেলে দিয়ে সকলের ভিড়ে মিশে যায়। এর পরে তাদের ধরে আনলে আরেক সমস্যা, কোথায় তাদের প্রত্যর্পণ করা হবে। আমরা এমন সমস্যায় ভুগছি।
চোখ রাখুন——–নাগরিকত্ব/৪২ঃ রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় প্রতিটি মানুষের বায়ো-মেট্রিকস থাকা উচিত