Barak UpdatesIndia & World Updates
বিনোদ সিঙ্ঘিদের নিয়ে দিল্লি গেল সিবিআইBinod Singhi & others taken to Delhi by CBI
১৬ জুলাইঃ বিনোদ সিঙ্ঘি এবং রাকেশমোহন কোতোয়ালকে দিল্লি নিয়ে গেল সিবিআই। সোমবার গ্রেফতারের পর শিলচরে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মঙ্গলবার সকালেই তাদের নিয়ে দিল্লি যায় তদন্তকারী দলটি। এনপিসিসি ঘুষ মামলায় মোচ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও দিল্লিতে জেরা করা হবে। সিবিআই-র এফআইআরে স্পষ্ট, এই মামলায় আরও কয়েকজন গ্রেফতার হতে পারেন। এখনও তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গিয়েছেন গুয়াহাটি আটগাঁওয়ের বিনীত আগরওয়াল এবং শ্রীগৌতম কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কর্মী স্বপন দাস। বিনীতই হাওলার মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছিল দিল্লিতে এবং স্বপন প্রথম দফার ৩ লক্ষ টাকা এনপিসিসি-তে নিয়ে গিয়েছিল। এইবারেও হাওলার অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টাকা দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছিল। আরও তাতপর্যপূর্ণ হল, সিবিআই-র এফআইআরে শেষ অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ‘আরও অনেকে’।
কেউ যেন সন্দেহের নজরে না দেখেন, সে জন্য চেষ্টায় খামতি রাখেননি ঘুষদাতা ও গ্রহীতা। গোটা লেনদেন প্রক্রিয়ায় নিজেরা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। টাকা নেওয়ার জন্য এনপিসিসি কর্তা দিল্লি পাঠিয়েছিলেন তার এক আত্মীয়কে। আর ঘুষদাতা শ্রীগৌতম কনস্ট্রাকশন কোম্পানি টাকা পাঠায় হাওলার মাধ্যমে। তবু রেহাই মেলেনি। সিবিআই দাতা-গ্রহীতা উভয় পক্ষকে গ্রেফতার করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে তদন্তকারী সংস্থাটি দেশের ১৮ জায়গায় অভিযান চালায়। গ্রেফতার করে মোট ৭জনকে। শিলচরের বিনোদ সিঙ্ঘি ও রাকেশকুমার কোতোয়াল ছাড়াও ধরা পড়েছে এনপিসিসি-র জলপাইগুড়িতে কর্মরত ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার লতিফুল পাসা, শ্রীগৌতম কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ডিরেক্টর অনিশ বৈদ, কোম্পানির কর্মী রমেশ কুমার, ধর্মেন্দ্রকুমার ও সুনীল কুমার।
সিবিআই জানিয়েছে, উতকোচ আদায়ের প্রক্রিয়াটি শুরু হয় এ বছরের মার্চে। শ্রীগৌতম কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ এবং সীমান্ত চৌকি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজ পায়। তাদের বিল পাশের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল প্রজেক্টস কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (এনপিসিসি)-র শিলচর জোনাল ম্যানেজার রাকেশমোহন কোতোয়াল জলপাইগুড়ির লতিফুল পাসাকে অনিশ বৈদের সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেয়। ৩৩ লক্ষ টাকা দাবি করতে বলেন। অনিশ বৈদ অবশ্য আপত্তি করেননি। শুধু বলেন, বিল পাশের সময় তা মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবু ফাইল চালাচালি শুরু করার জন্য স্বপন দাস নামে তার এক কর্মীকে দিয়ে ৩ লক্ষ টাকা পাঠান। কাজকর্ম অনেকটা এগিয়ে গেলে এ বার কোতোয়াল ৪০ লক্ষ টাকা দাবি করেন।
কোম্পানি কর্তারা আপাতত ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উভয় পক্ষে স্থির হয়, লেনদেন শিলচর বা জলপাইগুড়িতে নয়, হবে দিল্লিতে। টাকা সরাসরি নিয়ে যাওয়ার বদলে হাওলার মাধ্যমে পাঠানো হবে। সে জন্য বিনোদ সিঙ্ঘি গুয়াহাটির হাওলা ব্যবসায়ী বিনীত আগরওয়ালের নামে ২০ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার চেক পাঠান। আর ৫ লক্ষ টাকা কোম্পানি কর্মী স্বপন দাস সঙ্গে করে নিয়ে যান। দিল্লিতে হাওলার টাকা সংগ্রহ করেন কোম্পানির আরেক কর্মী রমেশ কুমার। ১০ জুলাই অনিশ বৈদ কোতোয়ালকে রমেশের কাছ থেকে টাকাটা সংগ্রহ করতে বলেন। কোতোয়াল তাঁর আত্মীয় সুনীল কুমারকে পাঠান। ১৪ জুলাই দিল্লির সফদরজং এনক্লেভের হোটেলে টাকা লেনদেনের সময় সিবিআই সেখানে উপস্থিত হয়ে দুইজনকেই গ্রেফতার করে। পরে তাদের জেরার ভিত্তিতে একে একে তুলে আনা হয় বাকিদের।