Barak Updates
সাইকেলেই মধুচন্দ্রিমা অস্ট্রিয়ান দম্পতির, এলেন শিলচরেওAustrian couple’s honeymoon on bicycle, came to Silchar also
১২ নভেম্বরঃ কে বলেন, চরম অসহিষ্ণুতা চলছে ভারতে? কারা নারীর নিরাপত্তা নিয়ে সারাক্ষণ প্রশ্ন তোলেন? প্রায় দুইমাস সাইকেলে সারা ভারত ঘুরে মায়ানমারে ঢোকার ঠিক দুইদিন আগে এ ভাবেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করলেন ডমিনিক ও বারনাডেট্টে। তাঁরা বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের কেউ নন, সদ্যবিবাহিত অস্ট্রিয়ান দম্পতি। গত জুলাইয়ে বিয়ে হয়েছে তাঁদের। সেপ্টেম্বরে বিমানে আসেন দিল্লিতে। সেখান থেকে দুই সাইকেল কিনে বেরিয়ে পড়েন ২৫ বছরের ডমিনিক ও ২২ বছরের বারনাডেট্টে। দিল্লি থেকে সোজা নেপাল। সেখান থেকে শিলিগুড়ি দিয়ে ভারতে পুনঃপ্রবেশ। গুয়াহাটি, শিলং হয়ে রবিবার সকালে আসেন শিলচর শহরে। সোমবার রওয়ানা হন মণিপুরের উদ্দেশে। মোরে সীমান্ত দিয়ে ঢুকবেন মায়ানমারে।
ডমিনিক ও বারনাডেট্টে সারাদিন সাইকেল চড়ছেন। সন্ধ্যা হলেই তাবু খাটিয়ে রান্নাবান্না শুরু করেন। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জেনে নেন এলাকার ইতিহাস, সংস্কৃতি ইত্যাদি। এর পর রাস্তার ধারে তাবুতেই ঘুমিয়ে পড়া। এই রুটিন মেনেই তাঁরা সাইকেলে অস্ট্রিয়া পৌঁছতে চাইছেন। মায়ানমার থেকে থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, চিন, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান, আর্মেনিয়া, তুরস্ক, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভাকিয়া হয়ে অস্ট্রিয়া। ডমিনিক মাউন্টেন ইঞ্জিনিয়ার। বারনাডেট্টে সে দেশের এক হাসপাতালে চাকরি করেন।
স্কুলে পড়ার সময়েই দুইয়ের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সাত বছর আগে বিয়ের কথা পাকা হয়। অস্ট্রিয়ায় সামাজিক বিয়ের প্রচলন নেই। ছেলেমেয়েরাই সঙ্গী বেছে নেয়। পরে আনুষ্ঠানিকতা। ভারতে বাবা-মা সম্পর্ক স্থির করেন জেনে তাঁরা বিস্মিত হন। তাঁদের আরেক বিস্ময়, হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান কীভাবে একসঙ্গে মিলেমিশে আছেন এ দেশে !
তাঁরা নানা ঘটনায় ভারতীয়দের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা নিয়েই ফিরছেন। বললেন, অনেকে ইংরেজি বোঝেন না। কিন্তু ভাষা মোটেও প্রতিবন্ধক হয়নি তাঁদের চলার পথে।এ প্রসঙ্গে একরাতের গল্প শোনালেন বারনাডেট্টে । নেপাল থেকে সবে ফিরেছেন। হঠাত প্রচণ্ড পেটের ব্যথা। একটি ফার্মেসিও খোলা নেই। ডাক্তার কোথায় বসেন, তাও জানা নেই। এই কথাটাও কাউকে বলার সুযোগ নেই। কেউ না বোঝে জার্মানি, না ইংরেজি। আকারে-ইঙ্গিতে পেটের ব্যথা বোঝাতেই অনেকে প্রায় অস্থির হয়ে ওঠেন তাঁকে ওষুধ এনে খাওয়ানোর জন্য। দোকান খুলিয়ে ওষুধ আনেন তাঁরা।
দু-দিন আগের এক ঘটনার কথাও তাঁরা ওয়েটুবরাকের সঙ্গে ভাগ করে নেন। রাতে ঘুমনোর জন্য মেঘালয়ে রাস্তার ধারে তাবু খাটাচ্ছেন। পুলিশ এসে জানায়, রাতে শীত লাগবে। এ ভাবে থাকতে পারবেন না। পরে থানার ব্যারাকে নিয়ে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।