Barak UpdatesBreaking News
Clause 6: Netaji Seva Sanstha to approach public representatives৬ এ: জনপ্রতিনিধিদের কাছে যাবে নেতাজি সেবা সংস্থা
২৪ ফেব্রুয়ারি: অসম চুক্তির ৬ নং ধারা নিয়ে কেন্দ্র নিযুক্ত উচ্চস্তরের কমিটি এখনও তাদের রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি৷ ফলে ওই রিপোর্টে কী রয়েছে, সরকারিভাবে কেউ মুখ খুলছে না৷ কিন্তু অসমিয়ার সংজ্ঞা যে তাঁরা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা কমিটি জানিয়ে দিয়েছে৷ আর এর মধ্য দিয়েই বাঙালির সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়ার ছক কষা হয়েছে৷ এ নিয়েই উদ্বেগে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনকে নিয়ে রবিবার বৈঠকে বসে৷
শুরুতেই সেবা সংস্থার সভাপতি ডা. লক্ষ্মণ দাস ও সম্পাদক রূপক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করে অসমের সমস্ত বাঙালিদের কখনও রাষ্ট্রহীন করার, কখনও অধিকার বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র চলছে৷ এনআরসিতে অধিকাংশ বাঙালি নিজেদের ভারতীয় প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় এখন দাঁড় করানো হয়েছে অসম চুক্তির ৬ এ বাস্তবায়ন খড়্গ৷ তাই এ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তাঁরা৷ বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, পৃথক বরাক দাবি কমিটি, বরাক ভ্যালি হিউম্যান রাইটস সোসাইটি, আর্য সংস্কৃতি বোধনী সমিতি, বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট প্রভৃতি বিভিন্ন সংগঠন আলোচনায় অংশ নিয়ে জোট বেঁধে লড়াইর পক্ষে সায় দেয়৷
৬এ ধারা বাস্তবায়নের নামে বাঙালির অধিকার কর্তনের প্রয়াস নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের নীরবতায় তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ কমিটির সুপারিশ হুবহু বাস্তবায়িত হলে যে তাদের অধিকারও খর্ব হবে, সেটা তাঁদের বাড়িঘরে গিয়ে বুঝিয়ে বলা হবে৷ দলমত নির্বিশেষে বাঙালি আবেগে তাঁদেরও বাঁধার চেষ্টা করা হবে৷ এই সপ্তাহেই এ কাজ সেরে নেবেন বলে রবিবার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা৷ এই কাজে আহ্বায়ক হিসাবে কাজ করবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা৷ তারাই স্থির করবেন, কবে কোথায় যাবেন, কারা কারা যাবেন৷ সেইসঙ্গে আইনি লড়াইয়েরও প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে৷ তিন আইনজীবী নীলাদ্রি রায়, ইমাদউদ্দিন বুলবুল এবং সৌমেন চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাবতীয় খুঁঁটিনাটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য৷
অধ্যাপক অপূর্বানন্দ মজুমদার তাঁর নানা গবেষণার নির্যাস টেনে বলেন, এই অঞ্চলের বাঙালিদের কোনওভাবেই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা যায় না৷ ধর্মভেদ ভুলে বরাক-ব্রহ্মপুত্রের বাঙালি জোট বেঁধে লড়লে জয় অনিবার্য বলেই দাবি করেন লামডিঙ থেকে আগত রূপম দাস ও ভবতোষ দেবনাথ, গুয়াহাটির আশিস দাস এবং নগাঁওর মহম্মদ রেহানউদ্দিন এবং আনোয়ারুল ইসলাম৷
গুয়াহাটি, নগাঁও, লংকা, হোজাই থেকে আসা প্রতিনিধি বর্গ৷ পৃথক বরাক দাবি কমিটির প্রধান শুভদীপ দত্ত বলেন, নইলে পৃথক হওয়ার আন্দোলনেই ঝাঁপাতে হবে৷ এ ব্যাপারে অবশ্য সভা এখনই কোনও সিদ্ধান্তে যেতে চায়নি৷ একে আবার খারিজও করে দেয়নি৷ আদর্শগত বা অন্য অনেক ইস্যুতে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকা বহু সংগঠন এই সভায় মত বিনিময় করে৷ বাম-গেরুয়া সবার কাছে সেবা সংস্থা বাঙালির সঙ্কটময় মুহূর্তে গঠনমূলক খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সম্মিলিত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়৷
এ দিনের সভার শুরুতে ডা. চন্দ্রশেখর দাস ও বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের প্রয়াণে শোক ব্যক্ত করা হয়৷ তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়৷
পরে ৬ নং ধারার বিরোধিতা করে সেবা সংস্থা কেন্দ্রের কাছে যে স্মারকলিপি পাঠিয়েছিল, তা পাঠ করে শোনান সংস্থার সদস্য চিন্ময় ভট্টাচার্য৷ প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপটে তৈরি তেজপুরের নির্মলেন্দু রায় এবং গুয়াহাটির দেবব্রত রায়চৌধুরীর লেখা পাঠ করেন সহসম্পাদক জয়দীপ ভট্টাচার্য৷ বক্তব্য রাখেন বঙ্গসাহিত্যের কেন্দ্রীয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত, আঞ্চলিক সভাপতি সঞ্জীব দেবলস্কর, বরাক ভ্যালি ইয়ুথ ইউনিয়নের সৌগত নাথ, সারা আসাম উচ্চতর মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী সংস্থার বুদ্ধদেব চৌধুরী, আর্য সংস্কৃতি বোধনী সমিতির গৌতম ভট্টাচার্য, জিষ্ণু দত্ত, অমলেন্দু চক্রবর্তী, দীপঙ্কর ঘোষ, আলম আরা বড়ভুইয়া, কৃশানু ভট্টাচার্য, কল্পনার্ব গুপ্ত, কমলেশ ভট্টাচার্য, অলীক চক্রবর্তী, প্রিয়ব্রত ধর, ডা. অজিতকুমার সাহা, সুধাংশুশেখর ভট্টাচার্য, সুমঙ্গল নাথ, সুকান্ত কর, শিলাদিত্য চৌধুরী, দিব্যেন্দু কর, দেবজ্যোতি দত্তচৌধুরী, সুমিত দাস, সঞ্জয় চক্রবর্তী, হিল্লোল ভট্টাচার্য ও সমরজিৎ দেব৷