Barak UpdatesAnalyticsBreaking News

Govt school becoming teacherless, Govt busy in linguistic debate, writes Dilip Kr. Dey
সরকারি স্কুল শিক্ষকশূন্য হচ্ছে, সরকার ব্যস্ত ভাষাবিতর্কে, লিখেছেন দিলীপকুমার দে

-অধ্যাপক দিলীপকুমার দে-

ভাষার প্রশ্নটি ধর্মীয় প্রশ্নের মত স্পর্শকাতর।আজকাল মধ্যবিত্ত শ্রেণির অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পাঠিয়ে থাকেন। নিম্নবিত্তের জন্য রয়েছে মাতৃভাষা মাধ্যমের সরকারি স্কুল, যেখানে পরিকাঠামো ধসে পড়ছে, পঞ্চাশ শতাংশ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পদ খালি থাকে। যারা আছেন তাদের টেনে নেওয়া হয় একটানা এন-আর-সি’র কাজে, পঞ্চায়েত থেকে পার্লামেন্টের নির্বাচনী কাছে। এখন নেওয়া হবে একটানা জনগণনার কাজে। শিক্ষকহীন শ্রেণীকক্ষ। একমাত্র পরীক্ষাই ঢাকঢোল পিটিয়ে সম্পন্ন করা হয়। এই অবস্থায় আসাম সরকার ভাষাশিক্ষার প্রশ্নটি নিয়ে খেলছে, মূলত সরকার বিরোধী আন্দোলনের মুখ ঘুরিয়ে দিতে। আসামে এই খেলা বহুবার অনুষ্ঠিত হয়েছে, মানুষ মরেছে।

ছাত্ররা কী শিখবে, কেমন করে শিখবে তা রাজনৈতিক নেতারা নির্ধারণ করে দেন, সেটাই দু:খের। আর তাঁরাই ঠিক করেন তাদের ছেলেমেয়ে প্রাইভেট স্কুলে পড়বে। আজ এই মুহূর্তে বিভিন্ন সরকারি স্কুলে মাতৃভাষার শিক্ষক পদশূন্য, এমনকি ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়ও।

আসামে সরকারি ব্যর্থতা, শিল্প, পথঘাট, বাঁধ ও পুল (ব্রিজ) নির্মাণ, চিকিৎসার ব্যবস্থা কি ভাষার বাধায় থমকে গেছে? এক কথায়, ছাত্রদের মাথায় কাঁঠাল না ভাঙলে কি উন্নয়ন ঘটানো যাচ্ছে না? আসামে কোন অঞ্চলের স্কুলে কী ভাষায় পড়াশোনা হবে, কোন অতিরিক্ত ভাষা শেখানো হবে তা নির্ধারণ করার জন্য দিল্লির পার্লামেন্টে কেন আইন পাশ করতে হবে? এমন বিধান কোন আইনে রয়েছে? সংবিধানে রয়েছে কি?
সরকারি কাজে ইংলিশ সহ আঞ্চলিক সহযোগী ভাষা (ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অসমিয়া, বরাকে বাংলা, পাহাড়ে স্থানীয় ভাষাগুলি, বিটিসি তে বড়ো) এতদিন চলে আসছে। তাই বলি, ছাত্ররা পছন্দমত ও প্রয়োজনমত ভাষা শেখার সুযোগ যেন পায়। চাপিয়ে দেবার রাজনীতি বন্ধ হোক।

এখন বেকারত্ব, শিল্পবন্ধ্যাত্ব, স্বাস্থ্য, শিক্ষার পরিকাঠামো, দারিদ্র —এসব সমস্যা থেকে চোখ সরানোর জন্য শাসকরা নানা অপচেষ্টা করছে, পুঁজিপতিদের কাছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ তুলে দিচ্ছে। আর ধর্ম-ভাষার ধুয়ো তুলে মানুষের মধ্যে হানাহানি সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে ব্যর্থ হচ্ছে সেখানে গুণ্ডাদের লেলিয়ে দিচ্ছে। অর্বাচীন রাজনৈতিক নেতারা সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোট বৈতরণী পার হচ্ছে। কিন্তু অগ্রণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদের মগজ ওদের চালাকি বুঝতে পারছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে হানা দিয়ে মাথা ফাটাবার, বই খাতা নষ্ট করার মত দুর্মদ রোগ চেপে বসেছে।

আসামে ধর্মীয় স্লোগান কিছুটা ভোঁতা হয়ে পড়ায় আবার পুরোনো দিনের অস্ত্রে শান দেওয়া হচ্ছে। ভাষাই আসামে শাসকদের অস্ত্র। এনআরসি, ক্যাব, ক্যা, ভাষাশিক্ষা —এগুলোর মূল এক জায়গায় নিহিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker