Barak Updates
কুলাউড়া-মহিশাসনঃ পরিত্যক্ত রেললাইনে কাজ শুরু, কিন্তু এত নীরবতা কেন
১১ সেপ্টেম্বরঃ কুলাউড়া, শাহবাজপুর, মহিশাসন এক রেলপথে যুক্ত ছিল। তখন একে বলা হতো আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে। দেশভাগের দরুন আসাম ও বেঙ্গল (বা পূর্ববঙ্গ) পৃথক হয়ে গেলে রেললাইনটিও ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এর উপর আগাছা জন্ম নেয়। পরে বসে কাঁটাতারের বেড়া। এখন আবার বেড়া সরানো শুরু হবে। আগাছা কাটা হবে। পরিত্যক্ত রেললাইনে ফের শোনা যাবে কু-ঝিক-ঝিক আওয়াজ। এরই প্রথম পদক্ষেপে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুনঃস্থাপনের কাজ। এটি দুই দেশের যৌথ প্রকল্প। দুই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করেন। কুলাউড়া ও শাহবাজপুর ফের যুক্ত হওয়ার পরে তা এগোবে করিমগঞ্জের মহিশাসন পর্যন্ত। এটি আবার ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে প্রকল্পেরও অন্তর্গত। মহিশাসন থেকে মণিপুর হয়ে রেল যাবে মায়ান্মার। পরে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলিও যুক্ত হবে তাতে।
ফলে কুলাউড়া-শাহবাজপুর পুনর্বাসনের কাজ শুরু হতেই গুরুত্ব বেড়ে গেল করিমগঞ্জ জেলার মহিশাসন স্টেশনের। মহিশাসন বা করিমগঞ্জ তো বটেই, গোটা উপত্যকার মানুষ চাইছিলেন পুরনো লাইনটি সচল হয়ে উঠুক। তাতে এই অঞ্চলের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে।
কিন্তু এমন প্রকল্পের প্রথম ধাপ শুরু হল কিনা বরাকবাসীকে অন্ধকারে রেখে। এমনকী জানানো হয়নি পুনঃস্থাপনের পর যাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এই ট্র্যাক, সেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলকেও। জনসংযোগ অফিসার নৃপেন্দ্র ভট্টাচার্য খোলামেলা বললেন, ‘রেলবোর্ড আমাদের কিছু জানায়নি। আসলে এখনই এই অঞ্চলে তো কিছু হচ্ছে না।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, এনআরসি ইস্যুতে তেতে রয়েছে এই অঞ্চল। অসমে এনআরসি-র খসড়া প্রকাশের পর অন্যান্য রাজ্যেও একই দাবি উঠছে। সবার এক কথা, প্রচুর বাংলাদেশি ঢুকে পড়েছে এই অঞ্চলে। রাজ্যে রাজ্যে যেখানে এমন মনোভাব, সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর হওয়াকে কে কীভাবে নেবে, বিজেপি-র থিঙ্কট্যাঙ্ক তা বুঝে উঠতে পারছে না। তাই চুপচাপ থাকাই ঠিক বলে মনে করছেন তাঁরা।
এই তত্ত্ব অবশ্য বিজেপি নেতারা মানতে নারাজ। দলের প্রদেশ মুখপাত্র রাজদীপ রায় বলেন, আজ শুধু বাংলাদেশের কাজের শিলান্যাস হল। তাই এই অঞ্চলে বলাবলি হয়নি। মহিশাসনে যখন কাজ হবে, তখন ঢাকঢোল পিটিয়েই জানানো হবে। এর সঙ্গে এনআরসি-র কথা কোনওভাবে জড়ানো যায় না বলেই মন্তব্য করেন রাজদীপবাবু।