AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/১০ঃ অনেকে উদ্বাস্তুদের জন্য দীর্ঘকালীন ভিসা চেয়েছেনCitizenship/10: The immigrants were asked to provide long-term visa
(যৌথ সংসদীয় কমিটির অনুমোদন লাভের পর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ গত ৭ জানুয়ারি লোকসভায় পেশ হয়। ধ্বনিভোটে পাশও হয়ে গিয়েছে এটি। এ বার রাজ্যসভায় ওঠার কথা ছিল। শেষপর্যন্ত তা আনাই হয়নি। তবে সংসদে সুযোগ না থাকলেও বাইরে এ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকবে। এই প্রেক্ষিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি যে ৪৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে, ওয়েটুবরাক পুরো রিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে চলেছে। আজ এর দশম কিস্তি।)
২১ ফেব্রুয়ারিঃ ১.১৭—- ওই প্রেক্ষিতেই ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই সরকার ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন আরও একবার সংশোধন চেয়ে বিল পেশ করে। ১১ আগস্ট লোকসভায় একটি প্রস্তাব উত্থাপনের পর তা গৃহীত হয়। তাতে বিলটি পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। ২০১৬ সালের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিনে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। যৌথ সংসদীয় কমিটিতে রাজ্যসভা থেকেও সদস্য রাখার জন্য ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট সেখানে প্রস্তাব উত্থাপিত হয় এবং পাসও হয়। স্থির হয়, যৌথ সংসদীয় কমিটিতে লোকসভা থেকে ২০জন এবং রাজ্যসভা থেকে ১০জন সদস্য থাকবেন। ২৩ আগস্ট লোকসভার সাংসদ ড. সত্যপাল সিংয়ের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি কেন্দ্রে মন্ত্রী হলে ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর লোকসভারই সাংসদ রাজেন্দ্র আগরওয়ালকে যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়।
১.১৮— আগেই বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিনে কমিটিকে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত কাজের বিবিধ প্রকৃতি ও হাতে নেওয়া কাজ অসমাপ্ত থাকায় কমিটি ছয়বার অতিরিক্ত সময় চেয়ে নেয়। ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর, ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ, ২৭ জুলাই, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ ও ৩১ জুলাই। শেষপর্যন্ত এ বার শীতকালীন অধিবেশনের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিনে এই রিপোর্ট পেশ করা হল।
১.১৯—- বিল পরীক্ষা করতে গিয়ে ২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিলের প্রস্তাবিত সংশোধনীর ওপর এর সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনতার কাছ থেকে মতামত, পরামর্শ আহ্বান করা হয়। তাতে সাড়া দিয়ে ৯ হাজারের বেশি স্মারকপত্র কমিটির সামনে উপস্থাপিত হয় এবং সেগুলি পরীক্ষা করা হয়। যে সব স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সংগঠন, অ্যাসোসিয়েশন, সাধারণ জনতার কাছ থেকে স্মারকপত্র পাওয়া গিয়েছে, তাদের সবার নাম রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো সারাংশ আকারে তুলে ধরা হলঃ
১. নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে যারা অনু্প্রবেশে বাধ্য হয়েছে, তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ দরকার। দীর্ঘকালীন পারমিট সহ তাদের বেঁচেবর্তে থাকার ব্যবস্থা করা হোক।
২. সংশোধনী বিলের ২ নং ধারায় তিব্বতী, নেপালি, বালুচিদের যুক্ত করা হোক। ৪ নং ধারায় ভারতে থাকার মেয়াদ কমিয়ে ৩ বছর করা হোক।
৩. ৭ডি(ডিএ) ধারায় যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এর আগে তাকে তার বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়া হোক।
৪. প্রস্তাবিত সংশোধনী মতে অসমের যে সব বাসিন্দা আবেদনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব লাভ করবেন, তাদের নাম এনআরসি-তেও যেন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর নতুন নাগরিকত্ব প্রাপকদের ক্ষেত্রেও ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬(এ) ধারা কার্যকর করার ব্যাপারে সংশোধনীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
৫. নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার ও মালদ্বীপের যে কোনও নাগরিক এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সকল অমুসলিম এবং অবাঙালিদেরও ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হোক। তাদের ন্যূনতম বসবাসের সীমা ৫ বছরের বেশি যেন না হয়।
৬. অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বসবাসের সময়সীমা ১২ বছর থেকে কমিয়ে ৫-৬বছর করা হোক।
৭. হিন্দুরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করলেই তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হোক।