Barak UpdatesIndia & World UpdatesAnalyticsBreaking News
অমিত শাহের ইস্তফা দাবি করলেন সুস্মিতা
ওয়েটুবরাক, ৬ ডিসেম্বর: শনিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে নাগাল্যান্ড-সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি ফের জোরদার হল।
আজ পুলিশও এফআইআরে লিখেছে, “পুলিশকে কোনও খবর না দিয়েই কমান্ডোরা গ্রামবাসীদের আসার পথে ওত পেতে ছিল। গ্রামবাসীদের গাড়ি দেখেই তারা বিনা প্ররোচনায় গুলি করে মানুষদের মেরেছে। গ্রামবাসীদের হত্যা বা জখম করাই ছিল সেনার উদ্দেশ্য।” প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম দফায় কমান্ডোরা ৬ জনকে গুলি করে মারে। এর পর তাঁদের মৃতদেহ আনতে গেলে আরও ৭ গ্রামবাসীকে হত্যা করে তারা। জখম করে ২২ জনকে। কমান্ডোরা যথেচ্ছ গুলি চালান। জখমদের আরও এক জন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭।
তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, “দেশের ইতিহাসে এ রকম হয়নি, সশস্ত্র বাহিনী মানুষের উপরে গুলি চালাচ্ছে, আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন গোয়েন্দা ব্যর্থতা!” তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন৷
সুস্মিতা জানান, দল হিসেবে আফস্পা নিয়ে তৃণমূল কোনও অবস্থান নিতে পারে না। এটা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া উচিত। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা সম্পর্কিত বিষয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত ছিল, উত্তর-পূর্ব ভারতের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
নাগাল্যান্ড ও মণিপুরের বিভিন্ন স্থানে আজ সোমবার আফস্পা বিরোধী মিছিল বেরোয়। কংগ্রেসের তরফেও অভিযোগ আনা হয়, আফস্পা বলবৎ থাকার ফলেই বছরের পর বছর সেনা ও আধাসেনা সাধারণ মানুষের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিংহ, নাগাল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত দলের নেতা অজয় কুমার, সাংসদ গৌরব গগৈ ও অ্যান্টো অ্যান্টনি ৮ ডিসেম্বর নাগাল্যান্ডের মন জেলায় গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। ত্রিপুরার তিপ্রা মথার চেয়ারম্যান প্রদ্যোত দেববর্মাও আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন।
মন জেলার ওটিংয়ে আজ নিহত গ্রামবাসীদের শেষকৃত্য হয়। মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও তাতে অংশ নিয়ে বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা চাই নাগাল্যান্ড থেকে আফস্পা প্রত্যাহার করা হোক। এই আইন গোটা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তিনি আরও জানান, নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সেনার গুলিতে মৃতদের পরিবারকে কেন্দ্রের তরফে ১১ লক্ষ ও রাজ্যের তরফে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। জখমদের কেন্দ্র ১ লক্ষ টাকা ও রাজ্য ৫০ হাজার টাকা করে দেবে।”
নিহত গ্রামবাসীদের শেষকৃত্যে যোগ দেন সব দল ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। রাজ্য জুড়ে চলে মৌন প্রার্থনা। নিহতদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়ে হর্নবিল উৎসব স্থগিত রাখা হয়েছে। ইএনপিও সংগঠনের নির্দেশে হর্নবিল উৎসবের বাইরে থাকা সব চাং ঘর, খাবার ঘর ও অন্যান্য প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে বন্ধ ডাকা হয়েছিল। তাতে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি সংঘর্ষের খবর এসেছে। ডিমাপুরে ও বিভিন্ন স্থানে সেনার কনভয় আটকানো হয়। জওয়ানদের সঙ্গে জনতার বচসাও হয়।