NE UpdatesAnalyticsBreaking News
২০ জুন অসম রাজভবনে “পশ্চিমবঙ্গ দিবস”-এর বিশাল আয়োজন
ওয়ে টু বরাক, ১০ জুন ঃ কেন্দ্র সরকারের নতুন একটি পরিকল্পনা অনুসারে দেশের সব রাজভবনগুলিতে বিভিন্ন রাজ্য দিবস বা রাজ্যসমূহের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজভবনের সঙ্গে অসমের রাজভবনেও গুজরাট দিবস, মহারাষ্ট্র দিবস, গোয়া দিবস, তেলেঙ্গানা দিবস পালন করা হয়েছে। আগামী ২০ জুন গুয়াহাটির রাজভবনে মহাসমারোহে “পশ্চিমবঙ্গ দিবস” পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রাজভবনের আমন্ত্রণে এই মর্যাদাপূর্ণ উদ্যোগের মূল দায়িত্বে এগিয়ে এসেছে “বাংলা সাহিত্য সভা, অসম”।
সম্প্রতি রাজভবনে আয়োজিত এক বিশেষ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রাজভবনের মুখ্য কমিশনার ও সচিব এসএস মীনাক্ষি সুন্দরম। সেইসঙ্গে ছিলেন রাজ্যপালের সচিব স্বপ্না দত্ত ডেকা, মুখ্য ব্যক্তিগত সচিব ড. শিবাশিস নাথ ভৌমিক, জনসংযোগ আধিকারিক লাকি বিশ্বাস প্রমুখ। “বাংলা সাহিত্য সভা, অসম”-এর পক্ষে ছিলেন সভার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক তথা গুয়াহাটির অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাউথ পয়েন্ট স্কুলের অধ্যক্ষ কৃষ্ণাঞ্জন চন্দ, সভার অন্যতম উপদেষ্টা তথা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের সর্বভারতীয় অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার অজিতকুমার সেন, সভার সভাপতি বিশিষ্ট লেখক খগেনচন্দ্র দাস, কোষাধ্যক্ষ তথা অসম সরকারের সাহিত্যিক পেনশনার শিশির সেনগুপ্ত এবং সভার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. প্রশান্ত চক্রবর্তী। ব্যতিক্রমের হয়ে ছিলেন ড. সৌমেন ভারতীয়া।
রাজভবনের মুখ্য কমিশনার ও সচিব এসএস মীনাক্ষি সুন্দরম এই রাজ্যদিবস পালনের জন্য কেন্দ্র সরকারের মূল পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করে বলেন, দেশের সমস্ত প্রদেশে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ কর্মসূত্রে বসবাস করেন। কোভিড মহামারিকালীন সময়ে এই বিষয়টি দেখা গেছে যে, বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের লোকেদের সঙ্গে রাজ্যটির একটি সংযোগ অতি প্রয়োজন। আর রাজভবনগুলোর মাধ্যমে এই সংযোগ প্রক্রিয়া হলে সাংস্কৃতিক-সামাজিক-সাহিত্যিক আদানপ্রদান ব্যাপকভাবে হতে পারে। এতে দেশের রাষ্ট্রীয় ঐক্য, জাতীয়ভাব উদ্দীপনা এবং সংহতি আরও দৃঢ় হতে পারে। অসমের রাজভবন ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজ্যদিবস পালন করেছে, আগামীতেও করবে। তেমনি পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্য রাজ্যের রাজভবনেও যথাযোগ্য মর্যাদায় “অসম-দিবস” পালন করা হবে। এতে বিভিন্ন ভাষাভাষী, জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক আদানপ্রদান ও নৈকট্যের বাতাবরণ তৈরি হবে।
২০ জুনের এই প্রস্তাবিত পশ্চিমবঙ্গ দিবসে মুখ্য বক্তারূপে অংশগ্রহণ করবেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট লেখক বুদ্ধিজীবী মোহিত রায়। স্থানীয় বক্তা রূপে অংশগ্রহণ করবেন মধ্য অসমের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অমলেন্দু চক্রবর্তী। এছাড়া সভার মধ্যমণি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং অসমের রাজ্যপাল গোলাবচান্দ কাটারিয়া। সংগীতে অংশগ্রহণ করবেন অসমের বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। বরাক থেকে আসবেন লোকসংগীতশিল্পী “বাংলা সাহিত্য সভা, অসম”-এর অন্যতম সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিক্রমজিৎ বাউলিয়া সহ সভার আরও কিছু প্রতিনিধি। আসছেন উজান ও নিম্ন অসমেরও বাঙালি সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বরাকের বিশিষ্ট লোকশিল্পী মুকুন্দদাস ভট্টাচার্যের সুযোগ্য শিষ্যা মাল্যশ্রী চৌধুরীর নেতৃত্বে ধামাইল নৃত্যে অংশগ্রহণ করবে কটন বিশ্ববিদ্যালয় ও গুয়াহাটির অন্য কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা। লোকসংগীতে থাকবে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের বিদ্যার্থীরা।
এ দিন রবীন্দ্রসংগীত, অসমিয়া ও হিন্দিভাষায় রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, বাউল, রবীন্দ্রসংগীতে সত্রীয়া নৃত্যের আদলে নৃত্যানুষ্ঠান, অসমের জ্যোতিপ্রসাদ ও বঙ্গের দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানের যুগলবন্দি ইত্যাদি। বেহালায় “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে” বাজিয়ে শোনাবেন কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রমেশচন্দ্র ডেকা। থাকছে গুয়াহাটির লোকগানের দল “মাটির গান”-এর দ্বারা জগৎবিখ্যাত কীর্তন “হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হলো পার করো আমারে” ও প্রসিদ্ধ লালনগীতি “খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়”। দিনটি যেহেতু বঙ্গীয়সংযোগের, তাই গুয়াহাটির প্রসিদ্ধ ক্যাটারার সোনা দত্তের নেতৃত্বে থাকবে বাঙালি খাদ্য, পিঠেপুলি-পায়েস থেকে শুরু করে সমস্তরকম খাদ্যসম্ভার ও বাঙালিয়ানার উপকরণ । অসমে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও এতে অংশগ্রহণ করবেন।