AnalyticsBreaking News
২০১৮ এশিয়াড :: এক অনন্য নজিরের জন্মদাতা
– দীপক সেন গুপ্ত-
ইউরোপের জার্মান হউক আর এশিয়ার কোরিয়া, জাতীয়তাবাদ যে কোন দেওয়াল, প্রাচীর কিংবা কাঁটাতার খন্ডন করতে পারে না সে কথা প্রমাণ করল। গত শতকের শেষ প্রান্তে জার্মানির দেওয়াল ভেঙে এক হয়ে গেল আর ২০১৮ র এশিয়াড গেমসের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়া দক্ষিন কোরিয়া সম্মিলিতভাবে হাটল এবং নিজেদের কৃষ্টি ঐতিহ্য তুলে ধরল। ইতিহাসের রক্তক্ষয়ী পথ অতিক্রম করে এমনটা হতে পারে কেহ স্বপ্নে ও কল্পনা করতে পারেনি, না পারারই কথা।
একদিকে কম্যুনিস্ট শাসনের নামে স্বৈরাচারী শাসকের শাসন অন্যদিকে পুঁজিবাদী রাষ্ট্র যে মিলেমিশে একাকার হতে পারে কোন গাঁজাখোর ও স্বপ্নে ভাবতে পারে না অথচ তাই হল। যদিও দুই দেশের এখনো নিজেদের শাসন কাঠামো আলাদা, তবু ২০১৮র এশিয়াডের উদ্বোধনে যেটুকু মিলেমিশে এক হল তার গুরুত্ব কম তো নয়। হাজার বছরের পথ চলা ও সম্মিলিত সংস্কৃত চর্চা ও জীবনবোধে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠে রাজনীতির শল্য চিকিৎসায় তা খন্ডিত করা যায় না।
কোন এক লেখায় আমার এক স্বপ্নের উল্লেখ করে বলেছিলাম যে একদিন বাংলাদেশ ও ভারত এক হবে। অনেকেই আমার এই স্বপ্নকে আকাশকুসুম বলে উড়িয়ে দিলেন শুধু নয় অনেক গালাগাল করে উপদেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ চলে যেতে। যে অর্ন্তলীন চোরাস্রোত কাঁটাতারকে অস্বীকার করে প্রাচীর দেওয়ালকে ভেঙ্গে দেয় সেই জাতীয়তাবাদ ধর্মীয় ভিত্তি কে স্বীকার করে না ৫২ র ঢাকার আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রমাণ করেছে। একটা কথা মনে রাখা উচিত বাংলাদেশে হাতে তরবারি নিয়ে ধর্মান্তরকরণ হয়নি, হয়েছি সুফিবাদের প্রভাবে। আর সুফিবাদ ও বৈষ্ণববাদ তো একই দার্শনিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে যার জন্য হিন্দু বাউল মুসলমান বাউল বাংলার প্রান্তিক সংস্কৃতির বুনিয়াদ তৈরি করেন। আন্তর্জাতিক ক্রীড়ার আসরে এশিয়াড বা কমনওয়েলথ গেমস মোটেই কোন গুরুত্ব বহন করে না অথচ এবারের এশিয়াড উজ্বল ব্যতিক্রমী হয়ে থাকবে যা শুধু ক্রীড়া জগতকে নয় রাজনীতির মাঠকে ও উত্তপ্ত করবে।