Barak UpdatesCulture
সঙ্গীত চক্রের সঙ্গীত সম্মেলন, সুরের আবহে ভরে গেল প্রেক্ষাগৃহ
৭ মার্চঃ সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে পা রেখেছে শিলচর সঙ্গীতচক্র। শাস্ত্রীয় গায়ন-বাদনের প্রচার প্রসারে বলতে গেলে এক নজিরবিহীন পথ চলা।সম্প্রতি ৪৯ তম সঙ্গীত সম্মেলন শেষ হয়েছে সংগঠনের। জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে ১ ও ২ মার্চ ছিল অনুষ্ঠান। প্রথম দিন কিশোর সম্মেলনে অংশ নেয় বরাকের উদীয়মান প্রতিভারা। সঙ্গীত পরিবেশন করে পারমিতা আচার্য, দেবপ্রিয়া নাথ, পারমিতা পাল, অনন্যা দেব ও জ্ঞানেশ্রী দাস। সমবেত শাস্ত্রীয় নৃত্যে ছিল অচিতনয়া সাহা, বিনীতা সিনহা, ঐশ্বর্য চক্রবর্তী, শুভ্রা দাস ও রাজলি রায় পাল। পরিচালনায় ছিলেন শম্পা সাহা। নাচের সঙ্গে সঙ্গতে ছিলেন তবলায় জয়দীপ ভট্টাচার্য, সেতারে রাজর্ষি ভট্টাচার্য ও হারমনিয়ামে সন্দীপ ভট্টাচার্য। ওই সন্ধ্যার শেষ ভাগে ছিল পন্ডিত প্রদ্যুৎ মুখার্জির তবলায় ফিউশন। কণ্ঠে বর্ণালী মিশ্র ও হারমোনিয়ামে সনাতন গোস্বামী সহায়তা করেন তাঁকে। সচরাচর লহরার একঘেয়ে পরিবেশনা থেকে সরে গিয়ে একটু অন্যধরণের উপস্থাপনা ছিল তাঁর।
২ মার্চ, সম্মেলনের মূল পর্ব।রাতব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হয় সাড়ে আটটা-নটা নাগাদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন সঙ্গীত চক্রের সভাপতি বর্ষীয়ান শিল্পী ধীরেন্দ্রলাল নাথ। অতিথি ছিলেন ডা: অরুণ কুমার ভট্টাচার্য, মন্মথ নাথ, জেলাপ্রশাসন কর্মচারী সংস্থার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিক্রমজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ। অন্ধ শিল্পী শ্রীহরি দাসকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয় সঙ্গীত চক্রের পক্ষ থেকে। সঙ্গীতচক্র সম্মান পান মন্মথ নাথ।নির্মলকান্তি স্মৃতি সম্মান তুলে দেওয়া হয় অরুণ কুমার ভট্টাচার্যের হাতে।
এরপর ছিল একের পর এক বাদন ও কন্ঠ সঙ্গীতে শাস্ত্রীয় ঘরানার আমেজ। তারাশিস বকসির একক তবলা দিয়ে শুরু হয়। নাগমায় হারমনিয়ামে ছিল যশবন্ত থিঠে। বর্ণালী মিশ্রের কন্ঠ সঙ্গীতে তবলায় জয়দীপ নাথ ও হারমনিয়ামে সনাতন গোস্বামী। অতিথি শিল্পীর মধ্যে পন্ডিত শুভঙ্কর ব্যানার্জির তবলা লহরা গোটা আয়োজনকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যায়। দৃষ্টান্তমূলক বাদনশৈলীর জন্য খুব প্রশংসা কুড়ান শুভঙ্কর। বাগেশ্রী, বসন্ত, খাম্বাজ ইত্যাদি রাগে বিলম্বিত, দ্রুত খেয়াল, তারানা, ঠুংরি ইত্যদি নিয়ে টানা পরিবেশনা ছিল কণ্ঠ শিল্পী নিবেদিতা ব্যানার্জির। তবলায় ছিলেন নিলয়কান্তি দত্ত। একেবারে শেষ পরিবেশনা পণ্ডিত কুশল দাসের। তবলায় ছিলেন পন্ডিত শুভঙ্কর। এককথায়, অসাধারণ সেতার বাদন উপহার দিলেন পণ্ডিত কুশল। সুরের আবহে ভরে গেছিল পুরো প্রেক্ষাগৃহ। সঞ্চালনায় ছিলেন সুব্রত রায় ও শ্যামলী কর ভাওয়াল। শেষে, আস্ত আয়োজনের দিকে নজর দিলে বলতেই হয় আজও সঙ্গীতময় শিলচর সঙ্গীতচক্র।