Barak UpdatesSportsBreaking News
সকলের জন্য দাবা, কাছাড়ে নয়া আয়োজন
২২ আগস্ট : ২৪ আগস্ট প্রতিষ্ঠা দিবসকে সামনে রেখে “সকলের জন্য র্যাপিড দাবা টুর্নামেন্ট”এর মধ্য দিয়ে রবিবার ধারাবাহিক অনুষ্ঠান শুরু করেছে কাছাড় জেলা দাবা সংস্থা। রবিবার অন্তত পাঁচটি রাজ্যের মোট চল্লিশ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে এই অনলাইন দাবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া, ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্র এবং রাজ্য দাবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাজীব ধর। প্রতিযোগিতা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ফিডে আরবাইটার এম অরুণ সিংহ, জাতীয় আরবাইটার প্রণব কুমার নাথ, জাতীয় আরবাইটার অধ্যাপক চার্বাক, ফিডে আরবাইটার মণিমালা সিংহ এবং জাতীয় আরবাইটার করপাগম ভেঙ্কটেশ।
অনুর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীদের এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসাবে প্রথম থেকে পঞ্চম স্থানাধিকারীকে দেওয়া হবে যথাক্রমে ১৫০০, ১২৫০, ১০০০, ৭৫০ এবং ৫০০ টাকা। এছাড়াও প্রথম দশ জনকে এবং প্রতিযোগীদের মধ্যে অনুর্ধ্ব ১৬, ১৪, ১২ এবং ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রথম দুজন করে প্রতিযোগীকে নিঃখরচায় কাছাড় দাবা সংস্থার আয়োজনে ২৫ আগস্ট একদিনের অনলাইন বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ দেবেন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্র। এই বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে দাবার মিডল গেম এবং এন্ড গেম সংক্রান্ত কৌশল আলোচনা করা হবে বলে এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন কাছাড় জেলা দাবা সংস্থার সভাপতি অধ্যাপক চার্বাক। যারা এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে নিঃখরচায় এই প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবে না, তাদের মাত্র একশো টাকা দিয়ে এই প্রশিক্ষণে নাম লেখাবার সুবিধা থাকবে। আর যারা কোনও কারণে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেনি, কিন্তু এই প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আগ্রহী, তাদের থেকে দশ জনকে এই প্রশিক্ষণে পাঁচশো টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
পুরস্কারের পাশাপাশি এভাবে দাবার মিডল গেম এবং এন্ড গেমের গভীরতর কৌশল নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্রের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকেও পুরস্কারের সমতুল্য করার ভূয়সী প্রশংসা করেন গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া। তিনি বলেন, “দাবার ওপেনিং গেম বা খেলা শুরু করার প্রাথমিক পর্যায়ের কৌশল অল্পবয়সীরা চট করে রপ্ত করে নেয়। কিন্তু তার পরে খেলার মধ্য ভাগ এবং খেলার শেষ ভাগের চিন্তা পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে কঠিন বিষয়। এই বিষয় দুটি থেকেই দাবাড়ুদের মধ্যে গুণগত ফারাক তৈরি হয়ে যায়। তাই ঠিক এই দুটি বিষয়েই ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্রের এই প্রশিক্ষণ শিবির খুদে দাবাড়ুদের সঠিকভাবে ভাবতে শেখাবে। প্রতিষ্ঠা দিবসকে সামনে রেখে এই ধরণের প্রশিক্ষণের সুযোগ এবং তাকেই পুরস্কার করে তোলার মধ্য দিয়ে জেলা দাবা সংস্থার এই উদ্যোগ যেমন দরকারি তেমনি অভিনব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্র বলেন, “কাছাড় জেলা সংস্থার এই টুর্নামেন্টে যেভাবে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে শুরু করে আরও পাঁচ ছয়টি রাজ্য, এমনকি দক্ষিণ ভারত থেকেও প্রতিযোগী এসেছে সেটা একটি জেলা দাবা সংস্থার পক্ষে সত্যি গৌরবের। আশা করা যায়, এই সংস্থার নেতৃত্বে শুধু কাছাড় নয়, তার পাশাপাশি অন্যান্য এলাকাতেও দাবার বিকাশ ঘটবে।“ ঝাড়খণ্ড রাজ্য দাবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্র আরও বলেন, ভবিষ্যতে ঝাড়খণ্ড থেকেও যাতে খেলোয়াড়রা কাছাড় জেলা দাবার সঙ্গে যুক্ত হয় সেটা তিনি দেখবেন।
আসাম রাজ্য দাবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাজীব ধর জেলা দাবা সংস্থার প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচিকে অভিনন্দন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, “যেভাবে তাঁদের কাজের মধ্যে গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া, ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার নীরজ কুমার মিশ্রের মত ব্যক্তিত্বদের জড়িয়ে নিয়েছে কাছাড় জেলা দাবা সংস্থা, তার সুফল শুধু কাছাড় নয়, সারা আসামই পেতে পারে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সারা ভারত দাবা সংস্থা উত্তর পূর্ব ভারত চ্যাম্পিয়নশিপ সংগঠিত করবে। তার ঠিক আগেই এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে জেলা দাবা সংস্থা সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মিডল গেম এবং এন্ড গেম নিয়ে সঠিকভাবে গভীরতার সঙ্গে ভাবতে শেখা উত্তর পূর্বের খেলোয়াড়দের পক্ষে খুব জরুরি।“
এই দিনের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন শিলচরের অভ্রজ্যোতি নাথ। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন কলকাতার বাসিন্দা জাতীয় পর্যায়ের খুদে দাবাড়ু স্নেহা হালদার। তৃতীয় হন আসামেরই জাতীয় পর্যায়ের আর এক খুদে দাবাড়ু তন্ময় রাজবংশী। শিলচরের আরও দুই খুদে দাবাড়ু দেবারতি দে এবং স্নেহাল রায় ষষ্ঠ এবং সপ্তম স্থান অধিকার করেন।