CultureBreaking News
মধ্যশহরে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক আয়োজন
৩১ অক্টোবর : শিলচরের ঐতিহ্যবাহী মধ্যশহর সাংস্কৃতিক সমিতির পুজো পরবর্তী সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। নরসিংটোলা মাঠে আয়োজিত এই সাংস্কৃতিক কর্মসূচির সূচনা করেন শিলচরের বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল। ছিলেন ‘যুক্ত’ এর ডিরেক্টর সুবিমল ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিধায়ক দীপক ভট্টাচার্যও। বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক দিলীপ পাল বলেন, বাংলা সংস্কৃতিতে ধামাইল রয়েছে ঠিক, তবে বাঙালিকে নিজেদের সংস্কৃতিকে আরও উন্নত করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, পুজোর পর শিলচরে যে অনুষ্ঠান হয়, তার মধ্যে মধ্যশহর ও আর্যপট্টি দুর্গাবাড়িতে সনাতন সংস্কৃতির চর্চা হয়।
মধ্যশহরের এই অনুষ্ঠানে কেন যুক্ত হয়েছে ‘যুক্ত’, ডিরেক্টর সুবিমল ভট্টাচার্য নিজের বক্তব্যে এর ব্যাখ্যা দেন। তিনি জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে যুক্ত গ্রামাঞ্চলে বিনামূল্যে নাচ ও গানের কর্মশালা করে যাচ্ছে। শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামাঞ্চলেও যে প্রতিভা রয়েছে, আর একটু সাহায্য পেলে তারাও যে নিজেকে মেলে ধরতে পারে তা বুঝতে পেরেছে যুক্ত। এ জন্যই এ ধরনের কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, এই কর্মশালাগুলোতে অংশ নেওয়া শিল্পীরাও সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে অংশ নেবে। তিনি এও বলেছেন, বাইরে নর্থ ইস্ট ফেস্টিভল হলে গুয়াহাটি পর্যন্ত শিল্পীরাই এর সুযোগ পান, কিন্তু এখানকার ধামাইল, জারি, সারি গান হয় না। তাই তিনি দিল্লিতে এ অঞ্চলের শিল্পীদের নিয়ে গিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ দিন শুরুতে বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি প্রশান্ত বসু ও সম্পাদক অজয় চক্রবর্তী। উদ্যোক্তাদের পক্ষে ছিলেন জয়দীপ চক্রবর্তী, অভিষেক চক্রবর্তী প্রমুখ।
প্রয়াত সুভাষচন্দ্র ভট্টাচার্য স্মৃতি মঞ্চে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান ছিল শিশুদের। ঘোষক থেকে শুরু করে প্রতিটি অনুষ্ঠানেই শিশুরা তাদের সেরাটা দিতে চেয়েছে। আর তা দর্শকদেরও মনের খোরাক দিয়েছে এ দিন। সব মিলিয়ে শিশুদের মোট ২৩টি নৃত্যানুষ্ঠান ছিল, সমবেত সঙ্গীত গেয়েছে তিনটি দল, আবৃত্তি করেছে একটি দল এবং সবশেষে কোরাসের শিশুরা একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছে।
প্রসঙ্গত, মধ্যশহর সাংস্কৃতিক সমিতির এই আয়োজন প্রতি বছরই নরসিংটোলা মাঠে হয়। প্রতি বছর একই ধারা বজায় রেখে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রথম দিন শিশুদের অনুষ্ঠান থাকে। পরের দু’দিন রবীন্দ্রনাথ ও কবি নজরুলকে গানে গানে স্মরণ করা হয়। এরপর বিচিত্রানুষ্ঠানে পাঁচমেশালি আয়োজন। ঊদ্যোক্তারা প্রতিদিনের মঞ্চটি কোনও বিশিষ্ট ব্যক্তির প্রতি উতসর্গ করেন। এ বার যাঁদের নামে মঞ্চ উৎসর্গ করা হচ্ছে, তাঁরা হলেন, সুভাষ চন্দ্র ভট্টাচার্য, অরূপ চৌধুরী, সুনীলকান্তি ভট্টাচার্য, সমরেন্দ্র ভট্টাচার্য, তরুণ শর্মা, সত্যেন্দ্র চন্দ্র ভট্টাচার্য ও নৃপতি রঞ্জন চৌধুরী। তাছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর প্রতিটি সন্ধ্যায় একটি করে নাটক থাকে, যাতে শিলচরের বিশিষ্ট নাট্যদলগুলো নানা স্বাদের নাটক উপহার দেয়।