CultureBreaking News
পুজোর গানের ভিড়ে ‘আমার শহর’ দিয়ে চমক দলছুটের
কেউ বিদেশ থেকে লিখলেন, ‘খুব মিস করছি শহরটাকে। যতবার দেখলাম, ততবার মনে হলো, আমি বোধহয় এখনো শিলচর শহরেই আছি। আমার শহর, আমার শহরই। যতই বিদেশ থাকি না কেন, এই ভালববাসার শহর আমায় অনেক টানে।’
শৌভিক চৌধুরী এখন গোয়া থাকেন কর্মসূত্রে। ভিডিও দেখে নস্টালজিক হয়ে লিখলেন, ‘এ কী উপহার পেলাম? ভিডিওতে যে ছেলেটা অভিনয় করল, ওকে দেখে তো আমি নিজের কথা মনে করছি। মনে হচ্ছে সেই আগেকার মতোই আমিও চষে বেড়াচ্ছি আমার শহর।’ দশরূপক ক্লাবের কৃষ্ণপদ গোস্বামী লিখলেন, ‘সকাল থেকে যে কতবার ভিডিওটা দেখলাম, এর ঠিক নেই। অসাধারণ কাজ করেছে দলছুট।’
এভাবেই টুং টুং করে মেসেজ ঢুকছে। কোনওটা ফেসবুকের ইনবক্সে, তো কোনটা হোয়াটসআপ-এ। কেউ কেউ আবার সরাসরি লিখছেন ইউটিউব লিংকে। গানের দল দলছুটের প্রতিটি ছেলেই এখন দেশ-বিদেশ থেকে এমন মেসেজ পাচ্ছে। আর, পাচ্ছে সঙ্গত কারণেই। তারা যে এই শহরকে উপহার দিল এই শহরের গান!
দলছুটের ‘আমার শহর’ গানটি শুরু থেকেই জনপ্রিয়।কিন্তু গত শুক্রবার নিজেদের দশম জন্মদিনে গানটির ভিডিও ভার্সন রিলিজ করে রীতিমতো চমক দিয়েছে তারা। চমক এই কারণে যে, এ মুহূর্তে পুজোর গানের রমরমা। কোনোদিকে আগমনী বা দেবী দুর্গার গান, তো কোনো দিকে ঢিংচাক ডান্স বিট। এই ভিড়েও দলছুট সমীহ আদায় করে নিল দর্শক শ্রোতাদের। তাদের করে তুলল নস্টালজিক। শহর গানটির লিরিক বিশ্বরাজ ভট্টাচার্যের।সুরকারও তিনিই। মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট কানাইলাল দাসের। আর এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দারুণ ভিডিও করেছেন অরিন্দম গোয়ালা।
দশম জন্মদিনে দলছুটের এই ব্যতিক্রমী ভাবনার প্রশংসা করেছেন উপস্থিত বরিষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মীরা। শিলচর ইলোরা হেরিটেজ কেক কাটার আগেই দীপঙ্কর চন্দ, নন্দা চন্দ, বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী, অমিত শিকদার, অজয় রায়, কৃষ্ণপদ গোস্বমীরা একযোগে এই গানের দলটির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। ওই দিন প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও দলছুটের আয়োজনে শামিল হয়েছিলেন অনেকে।
আর এই গান পাগল ছেলেরাও কম যায়নি! তারা পূর্বসূরিদের দিয়ে কেক কাটায়, আর উত্তরসূরিদের ডেকে এনে নতুন ভিডিও রিলিজ করে। মানে এখানেও ব্যতিক্রম। তারা বুঝিয়ে দলছুট শুধু তাদের নিজেদের নয়, এই শহরের দল।
শুক্রবার জন্মদিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় গান দিয়ে। বিশ্বরাজ, সন্দীপ ভট্টাচার্য, দেবরাজ ভট্টাচার্য, শোভরাজ চক্রবর্তী, ধৃতিমান চন্দ, শোভন দাস, টনি দাসরা নানা স্বাদের গান শোনান। এদিকে দলছুট সম্পাদক দিব্যেন্দু সোমের উদ্দেশ ব্যাখ্যার পর গানের দলটির দশ বছরের জার্নি তুলে ধরেন বিশ্বরাজ। প্রায় আধ ঘন্টার ওই সময়ে উঠে আসে দলছুটের হয়ে ওঠার গল্প। কতশত মজার স্মৃতি, যা শুনে হেসে লুটোপুটি খান উপস্থিত শুভানুধ্যায়ীরা। যারাই শুরু থেকে এই দলে অবদান রেখেছেন, সবাইকে সেদিন আলাদা আলাদা করে ব্যাখ্যা করেন বিশ্বরাজ। আর, এই সব স্মৃতি নিয়েই বাড়ি ফেরেন দর্শকরা। সঙ্গে শহর গানের আমেজ। যাওয়ার বেলা তো উঠতি ছেলেমেয়েরা আবদার রেখে বসে, শহর গান গাইবে তারা, আর দলছুট থাকবে পেছনের সারিতে। দলছুটও আব্দার মেনে উত্তরসূরিদের সামনে রেখে সমস্বরে গেয়ে ওঠে ‘বড় ভালো লাগে, বড় ভালো লাগে, আমার শহর।’