Barak UpdatesAnalytics
দক্ষিণ ধলাইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসই নির্ণায়ক শক্তি
২৬ নভেম্বরঃ প্রতিপক্ষরা বলছিলেন, তিনি কোনও ফ্যাক্টর নন। কিন্তু দক্ষিণ ধলাই জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের হিফজুর রহমান লস্করই মূল ফ্যাক্টর। বলা চলে, ডিসাইডিং ফ্যাক্টর। ৩০ বছর ধরে কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী, ছিলেন আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্যও। এ বারও একই পদের দাবিদার ছিলেন।দল টিকিট দেয়নি। সেটা ১৭ নভেম্বরের ঘটনা। পরদিন জানিয়ে দিয়েছেন, আঞ্চলিক পঞ্চায়েতে নয়, তিনি জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। ১৯ নভেম্বর ঘাসফুল প্রতীক আদায় করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এক সপ্তাহের সংগঠন, তিনিই এখন কংগ্রেসের কমরুল ইসলাম লস্কর ও বিজেপির খায়রুল ইসলাম লস্করকে চিন্তায় রেখেছেন। কমরুলবাবু হিসেব কষছেন, তৃণমূল কংগ্রেস কত ভোট কেটে নেবে। আর খায়রুলবাবু ভাবছেন, ক্ষুব্ধ কংগ্রেসিরা হিফজুর রহমানের পাশে কতটা দাঁড়াবেন। তাঁর ১ ভোট পাওয়া যে বিজেপিরই ১ ভোটে এগিয়ে থাকা।
জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক তথা ধলাই কংগ্রেসের অভিভাবক জালাল আহমেদ মজুমদার বললেন, অঙ্কটা এত সোজা নয়। বিজেপিরও বহু বিক্ষুব্ধ কর্মী রয়েছে। এপি-জিপি কিংবা গ্রুপ মেম্বার পর্যায়ে টিকিট না পেয়ে একাংশ ক্ষুব্ধ। অনেকের দলের কাছে অন্য প্রত্যাশা মেটেনি। তাঁরাও এ বার চুপচাপ। তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের ঘরেও নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। ফলে কাটাকাটি উভয় দিকে। জয়-পরাজয় নির্ণয় হবে দল আর প্রার্থীর বিচারেই।
দক্ষিণ ধলাই জেলা পরিষদ আসনে মোট প্রার্থী ৫জন। আজমল হোসেন মজুমদার আসলে এআইইউডিএফ-এর স্থানীয় নেতা। কিন্তু দল সেখানে কাউকে দাঁড় করায়নি। তিনি নির্দল হিসেবে লড়ছেন। আরেক নির্দল প্রার্থী মইনুদ্দিন লস্কর। এ বার সিপিএম-ও সেখানে প্রার্থী দেয়নি। ২০০৯ সালে এই আসন কাস্তে-হাতুড়ি-তারা প্রতীকেই জিতে নিয়েছিলেন আইনজীবী রেজামন্দ আলি বড়ভুইয়া। ফলে সেখানে তাঁদের কম-বেশি একটা ভোট যে রয়েছে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁরা এ বার কী করবেন! হিফজুরবাবুর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে যাই হোক, রেজামন্দ সাহেব আমার পাশে রয়েছেন। শুনে হাসছেন কংগ্রেস-বিজেপি কর্মীরা।
তবে রেজামন্দ আলিকে পান কি না-পান, হিফজুর রহমানের বড় শক্তি আরেক বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা সামসুল আলম লস্কর। বিদায়ী ভাগাবাজার পঞ্চায়েতে তিনিই ছিলেন সভাপতি। এ বার আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় তিনি চাইছিলেন তাঁর স্ত্রী রেজিয়া সুলতানাকে টিকিট দিতে। দল দেয়নি বলেই তিনিই তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্সি নিয়ে আসেন। তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে প্রদেশ নেতৃত্বের বেশ ঘনিষ্ঠতা।
জালাল আহমেদ মজুমদারের দাবি, ভুল তথ্য দিয়েছেন সামসুল আলম। রেজিয়াকে তাঁরাও চাইছিলেন টিকিট দিতে। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ না হওয়ায় তাঁদের অন্য কথা ভাবতে হয়। পরে সামসুল তাঁর কাকীমা হেনা বেগম লস্করকে তাঁর প্রতিনিধি বললে দল মানেনি। তাতেই তাঁর গোঁসা।
হেনা বেগম এখন তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য পদে লড়ছেন। জিপি সভাপতি পদে তৃণমূলের প্রার্থী ফরিদা বেগম লস্কর। সপ্তগ্রাম জিপি সভাপতি পদে দিদির দল আইনুদ্দিল লস্করকে টিকিট দিয়েছে। মোট ১২ প্রার্থীর বাকিরা গ্রুপ মেম্বারের জন্য লড়ছেন।
প্রকাশ্যে যা-ই বলুন কংগ্রেস, বিজেপি কাউকেই গোণার বাইরে রাখছেন না। বলা ভাল, রাখতে পারছেন না।