Barak Updates

ট্র্যাক বাড়ছে, ট্রেন বাড়ছে, কমছে শুধু চালক

৬ ডিসেম্বরঃ লামডিং-শিলচর-আগরতলা ব্রডগেজ হওয়ার পর নতুন লাইন বেড়েই চলেছে। ত্রিপুরায় আগরতলা থেকে গর্জি পর্যন্ত নিয়মিত ট্রেন চলছে। এখন যাবে বিলোনিয়া পর্যন্ত। সিআরএস হয়ে গিয়েছে। একই ভাবে লাইন এগোচ্ছে ভৈরবী, জিরিবাম থেকেও। পাল্লা্ দিয়ে বাড়ছে ট্রেনের সংখ্যা। শিলচর শিয়ালদা, তিরুবনন্তপুরম, দিল্লির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আগরতলা থেকে চলছে হামসফর, রাজধানীও। কিন্তু বাড়ছে না ট্রেনচালকের সংখ্যা। তা বরং দিনদিন কমে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে নিযুক্তি বন্ধ থাকায় কারও অবসর গ্রহণ বা মৃত্যুতে সৃষ্ট শূন্য পদ আর পূরণ হচ্ছে না। তার পরও বাড়তি ট্রেন চলছে কী করে? এই প্রশ্নই জোরালোভাবে উত্থাপিত হয় নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের বার্ষিক সাধারণ সভায়। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ভজনচন্দ্র দে বলেন, লোকো-পাইলটদের ওপর মানসিক অত্যাচারের বিনিময়েই এই রুটে নিয়মিত ট্রেন চলছে। তাঁদের ছুটিছাঁটা মেলে না। ট্রেন নিয়ে যাওয়ার মানুষ নেই। এমনকী, যাত্রী নিরাপত্তাকে তুচ্ছ করে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল এখন অ্যাসিস্ট্যান্ট পাইলট থেকে সদ্য পাইলটে উত্তীর্ণ হলেই যাত্রীট্রেন নিয়ে ছুটতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম হল, শুরুতে তাঁরা কিছুদিন মালগাড়ি চালাবেন। পরে প্যাসেঞ্জার ট্রেন, শেষে মেল, এক্সপ্রেস। কিন্তু এখন আবার কীসের নিয়ম!

ইউনিয়নের শিলচর শাখার কোষাধ্যক্ষ বিপ্লব দাস বলেন, অবস্থা এমনই সঙ্গীন হয়ে উঠেছে যে, গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে দুটি ট্রেন গুয়াহাটি পর্যন্ত অতিরিক্ত চালানোর দরুন শিলচর-মহীশাসন, শিলচর-দুল্লভছড়া ট্রেন দুইদিন বন্ধ রাখতে হয়েছে। ইউনিয়ন কর্তাদের আশঙ্কা, ধীরে ধীরে গোটা রেলকেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এরই মধ্যে এসি কামরায় বিছানা-পত্র দেওয়া, রেলগেটে কর্মী নিয়োগ সহ বহু জিনিস বেসরকারি হাতে চলে গিয়েছে।

ইউনিয়নের বার্ষিক সম্মেলনে বরাক উপত্যকায় ডিভিশনের দাবিও জোরালোভাবে উত্থাপিত হয় বলে আরেক সহকারী সাধারণ সম্পাদক সুহাস দাস ও শিলচর শাখার সভাপতি বিধান দে সাংবাদিকদের জানান। তাঁরা বলেন, বদরপুর নাকি শিলচরে ডিভিশনাল সদর হবে, মজদুর ইউনিয়ন এই বিতর্কে নেই। তাঁদের বক্তব্য, এই অঞ্চলে হওয়া চাই। সঙ্গে এই অঞ্চলে একটি গুডস আন্ডার-গিয়ার এগজামিনেশন সেন্টারও চাইছেন তাঁরা। সুভাষচন্দ্র দাস, জাকির হোসেন লস্কর, তপন ব্যানার্জি, স্বপন দে-রা বলেন, এই সেন্টার না থাকার দরুন অনেক সময় পিট এগজামিনেশন ছাড়াই ট্রেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে। যাত্রী নিরাপত্তার জন্য এও আরেক বিরাট ঝুঁকি। সিট্যু নিয়ন্ত্রিত মজদুর ইউনিয়নের বার্ষিক সভায় সপ্তম বেতন কমিশন দ্রুত সম্পূর্ণ কার্যকর করারও দাবি জানানো হয়েছে।

ভজনবাবু জানান, এই সমস্যা শুধু এই অঞ্চলে নয়, সারা দেশে রেলের একই অবস্থা। তাই সর্বভারতীয় স্তরে সবকটি ইউনিয়ন জোট বেঁধে সরকারকে চরমপত্র দিয়ে দিয়েছে, আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের দাবি-দাওয়া পূরণ না হলে তাঁরা পরদিন থেকেই ওয়ার্ক টু রুল আন্দোলন শুরু করবেন। অর্থাত শুধু নিয়মে যে টুকু কাজ করার, কর্মীরা তা-ই করবেন। এর চেয়ে এক ফুঁটো কাজও করবেন না কোনও রেলকর্মী।

English text here

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker