Barak UpdatesAnalyticsBreaking News
ট্রেনে আগুনঃ শর্টসার্কিট বা পরিকল্পিত নাশকতা বলে মনে করছেন না তদন্তকারী দলনেতা
আলোচনার শুরুতেই তিনি জানান, ব্যাটারির সাহায্যে রেলে বিদ্যুত উতপাদন করে এসি, ফ্যান, লাইট জ্বালানো হয়। কিন্তু সেই লাইনে শর্ট সার্কিট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রবিবার পরিদর্শনকালে তাঁরা দেখেছেন, বিদ্যুতের লাইন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল। এ ছাড়া, এক জায়গায় শর্ট সার্কিট থেকে আগুন জ্বললে পুরো ট্রেনের তার অকেজো হয়ে পড়ে। তদন্তে দেখা গিয়েছে, এমনটা হয়নি। ফলে সাতঘণ্টার বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে আর অন্য কোনও কারিগরি বা যান্ত্রিক ত্রুটির দরুন আগুন লাগার সম্ভাবনা নেই বলেই জানান এডিআরএম।
জঙ্গিরা শিলচরে এসে এমন কাণ্ড করবে, এরও কোনও যুক্তি নেই বলে মনে করছেন সুরথ জানি। তাঁর কথায়, তাহলে এতক্ষণে কৃতিত্ব দাবি করে হুলুস্থূলু বাঁধিয়ে দিত তারা। কোনও দুষ্কৃতীর নাশকতামূলক কাজের ফল বলেও আপাতদৃষ্টিতে মেনে নিতে পারছেন না তদন্তকারীরা। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে, কারা করবে, কেন করবে। সে জায়গায় এখনও তাঁরা যুক্তিগ্রাহ্য উত্তর খুঁজে পাননি।
সুরথ জানি-দের কাছে তাই আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। বিস্তৃত তদন্তে কী বেরিয়ে আসে, সে দিকে তাকিয়ে সবাই। তবে তদন্তকারীরা মোটামুটি নিশ্চিত, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ এই কাজ করেনি। শুধু সরেজমিনে দেখে এডিআরএমের মনে হয়েছে, কামরা খুলে ভেতরে বসেছিল দু-চারজন। সম্ভবত বিড়ি-সিগারেট খেয়েছে। অসতর্কতায় জ্বলন্ত সিগারেটের টুকরো বসার আসনে পড়ে থাকে। তা ঘষে ঘষে একসময় দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।
শিলচর স্টেশনে সিসিটিভি নেই। ফলে সিসিটিভি থেকে সহজ সাক্ষ্য মেলার সম্ভাবনাও নেই। জানি-র কথায়, সিসিটিভি আগামী মাসেই লাগানো হবে। অর্থ বরাদ্দ হয়ে আছে। সেই সঙ্গে তিনি জানান, সিসিটিভি থাকলেও লাভ হতো না। কারণ তিরুবনন্তপুরম এক্সপ্রেস কোনও প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ছিল না। তিনদিন পরে ফের রওয়ানা হবে বলে একে প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল স্টেবল লাইনে। ওইদিকটা সিসিটিভি কভার করে না।
প্রশ্ন ওঠে, দরজা-জানালা বন্ধ থাকা ট্রেনে কারা ঢুকল ভেতরে, কীভাবেই-বা ঢুকল তারা। সুরথ জানান, ইমার্জেন্সি উইন্ডো দিয়ে ঢোকা কোনও কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয়। এইগুলো এমনভাবেই তৈরি, বিপদের সময় যেন ভেতর থেকে যাত্রীরা দ্রুত বেরিয়ে যেতে পারেন। ফলে বাইরে থেকেও এগুলো খোলা যায়। অনেক সময়েই যাত্রীরা এভাবে ঢোকে। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে ঢুকে কীভাবে আসর জমায়, বিড়ি-সিগারেট খায়, সে সবের জবাব তাঁরা জানতে চাইবেন বলে কড়া সুরে উল্লেখ করেন তদন্তকারী দলের প্রধান।
তিনি বলেন, বাইরের কাউকে এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী করা যায় না। ফলে ভেতরের যারা দায়ী, তাদেরই শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু আরপিএফ ইন্সপেক্টর বিএম ধর এ দিনও জানান, কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির ফলেই আগুন লেগেছে। তাঁর কথায়, সাতসকালে বন্ধ কামরা খুলে কেউ বসার কথা নয়।