Barak UpdatesBreaking News
জঞ্জাল আর ঝঞ্ঝাট নয়, শিলচরেও উপার্জন সামগ্রীGarbage is no more a waste, it’s now a source of earning at Silchar
২৫ আগস্টঃ শিলচরেও জঞ্জাল এখন আর ঝঞ্ঝাট নয়। বরং উপার্জন। জঞ্জালের ওপর নির্ভর করেই ২০ মহিলা আয়ের সন্ধান পেয়েছেন। আরও ১০জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
শিলচর শহরের বাকি ২৭ ওয়ার্ডে অবশ্য আবর্জনা নিয়ে মাথাব্যথার শেষ নেই। সাধারণ নাগরিক কি পুরসভা সকলের বক্তব্য, দিন দিন আবর্জনা বাড়ছে। সেগুলি রাখার জায়গা কোথায়! ২৪ নং ওয়ার্ডে ট্রাই-সাইকেল ঘুরে বেড়ায় আবর্জনার সন্ধানে। যত জঞ্জাল ততই যে উপার্জন।
সলিড লিকুইড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (এসএলআরএম)-এর শিলচর ইনচার্জ বৈভব পান্ডে জানান, ১৮ জুলাই ২৪ নং ওয়ার্ডে প্রজেক্টটি শুরু হয়। সে দিন ঘরে ঘরে, দোকানে দোকানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে দুটি করে বালতি। ভিন্ন রঙের। একটিতে রাখবে শাকসব্জির খোসা, অন্যটিতে বাকি সব। ট্রাই-সাইকেলগুলিতেও দুই কোঠা। ঘুরে ঘুরে জঞ্জাল সংগ্রহ করছেন লেডিজ ফেডারেশন গ্রুপের কর্মীরা। পরে সে সব জমা করা হয় রিসোর্স সেন্টারে। সেখানেই সব আলাদা করা হয়। শাকসব্জির মধ্যে গরু খাওয়ার উপযোগীগুলি যায় খোয়াড়ে। রিসোর্স সেন্টারেই রয়েছে পুরসভা অনুমোদিত খোয়াড়। অন্যের গরু অনিষ্ট করলে সেখানেই নিয়ে দেওয়া হয়। পরে গরুর মালিক জরিমানা দিয়ে নিয়ে যান। এও এক উপার্জন। বাকি জৈব-জঞ্জাল গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হচ্ছে। সার হিসেবে বিক্রি হবে।
অজৈব জঞ্জালগুলিকে ১১ ভাগে রাখা হয়। প্লাস্টিক-পলিথিন ধুয়ে শুকিয়ে রাখা হচ্ছে। যাবে চেন্নাইয়ের এক শার্ট তৈরির কারখানায়। কিনে নিয়ে যেতে চুক্তিবদ্ধ তারা। ডিমের খোসা গুঁড়ো করে বানানো হচ্ছে ক্যালসিয়াম পাউডার। ৩০০ টাকা কেজি। গাছের জন্য খুব উপকারী বলেই দাবি করলেন বৈভববাবু। কার্ডবোর্ড, পুরনো কাগজ শুকিয়ে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে। পুরনো জুতো, খালি বোতল, ডাবের খোল, নারকেলের মালা, চুল—সব পৃথক পাত্রে জমাচ্ছেন তারা। বৈভববাবুর কথায়, এক ওয়ার্ডেই এক মাসে তিন টনের মত সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে। ২৮ ওয়ার্ডে লাগাতার কাজ চললে ট্রাকে ট্রাকে জিনিস যাবে দিল্লি, বেনারস, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুতে।
এখন এসএলআরএম-ই যাবতীয় কাজকর্ম দেখভাল করছে। তারাই সুপারভাইজরদের নিয়ে তৈরি করেছে লেডিজ ফেডারেশন গ্রুপ। সভাপতি রেহানা খাতুন, সম্পাদক রানি খান। তাঁরা জানিয়েছেন, এখন সবাই বেতনভোগী। সুপারভাইজররা পান মাসে ৭ হাজার, ওয়ার্কাররা ৫ হাজার। পুরোদমে কাজ শুরু হলে এই গ্রুপই সব কাজ করবে। লাভ-ক্ষতির হিসেব, বেতন-ভাতা, নিযুক্তি তাঁরাই তখন ঠিক করবেন। লেডিজ ফেডারেশন গ্রুপ হলেও ৮জন পুরুষও কাজ করছেন এখন।
জঞ্জাল নিয়ে এমন কাজে পুরসভাপতি নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর খুশি, খুশি জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরিও। দুজনেই বললেন, জঞ্জাল নিয়ে নিত্য ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়। খরচও কম নয়। সেগুলিকে নিয়ে কেউ সম্পদে পরিণত করলে আমরা বাঁচি। এলাকার কয়েকশ মহিলা উপার্জনক্ষম হলে সেটা আমাদের বাড়তি পাওনা।