Barak UpdatesBreaking News
৬ নং ধারার অপব্যাখ্যা চলছে, ক্ষিপ্ত নেতাজি সেবা সংস্থা
২৪ সেপ্টেম্বর: অসম চুক্তির ৬ নং ধারা বাস্তবায়নের নামে নানা অপব্যাখ্যা চলছে। অসমিয়ার সংজ্ঞা, সংরক্ষণ ইত্যাদি নিয়ে যে যার মত প্রস্তাব দিচ্ছেন, মন্তব্য চাইছেন। ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলি বললেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সেবা সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা বলেন, অসম চুক্তির ৬ নং ধারার কোথাও সংরক্ষণ বা রিজার্ভেশনের কথা বলা হয়নি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ সব বলে একে বাঙালিবিরোধী হাতিয়ার করে তোলা হচ্ছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা-ই এনআরসি-র নানা পর্বে বেসরকারি সেবা কেন্দ্র খুলে সাধারণ মানুষকে শলা-পরামর্শ দিয়েছে। এখনও প্রতিদিন তাঁদের সেবাকেন্দ্রে ভিড় জমান এনআরসি-ছুটরা। নেতাজি সেবা সংস্থার সভাপতি লক্ষ্মণকুমার দাস ও সম্পাদক রূপক চক্রবর্তী বলেন, এখন দুশ্চিন্তা ৬ নং ধারা নিয়ে। এ নিয়ে কেন্দ্র যে ভাবে এগোচ্ছে, তা প্রতিরোধ করা না গেলে অসমে বাঙালিরা সমস্ত অধিকার হারাবে। সরকার পুরোপুরি অনৈতিকভাবে এগোচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। যুক্তি দেখান, বাঙালিরা রাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। কিন্তু ৬ নং ধারা বাস্তবায়ন নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে একজনও বাঙালি নেই। অথচ উচ্চশিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ বা জমি কেনাবেচার অধিকার নিয়ে যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তা বাঙালিদের উপরই বেশি প্রভাব ফেলবে। দ্বিতীয়ত, ওই সব সংরক্ষণ বা জমি কেনাবেচা নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার ওই কমিটির নেই। কারণ ৬ নং ধারায় অসমিয়াদের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও ভাষিক অধিকারের সুরক্ষা বা প্রিজার্ভেশনের কথা বলা হয়েছে। কমিটি ইচ্ছাকৃতভাবে একদিকে সুরক্ষা ও সংরক্ষণে গুলিয়ে ফেলছে, অন্যদিকে অসমিয়ার জায়গায় অসমিয়া ভূমিপুত্র, উপজাতি ভূমিপুত্র ও অন্যান্য ভূমিপুত্র শব্দবন্ধ ব্যবহার করছে। তাই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি বিজ্ঞাপন দিয়ে জনসাধারণের কাছে মতামত চাইলেও নেতাজি সেবা সংস্থা তাদের কোনও পরামর্শ দিতে যায়নি। মতামত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সংস্থার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংরক্ষণ ও ভূমিপুত্র শব্দ ব্যবহারে আপত্তির কথাও জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
মঙ্গলবার বাণীপাড়া স্থিত সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে জয়দীপ ভট্টাচার্য, চিন্ময় ভট্টাচার্য, অমলেন্দু চক্রবর্তী, দীপক চক্রবর্তী, গোরা চক্রবর্তীও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, সংবিধান অনুসারে ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ হতে পারে না। এ ছাড়া, পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্যই সংরক্ষণ করা হয়। অসমে এই সময়ে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের সংরক্ষণ কার্যকর রয়েছে। ফলে অধিকতর সংরক্ষণ অপ্রয়োজনীয়, অনৈতিকও। নেতাজি সেবা সংস্থার কর্মকর্তারা কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা রদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কেন্দ্র যেখানে এক দেশ এক আইন চালু করতে চাইছে, সেই সময় অসম চুক্তির ৬ নং ধারা রূপায়ণের নামে ওইসব চিন্তাচর্চা পরস্পরবিরোধী। তাদের স্পষ্ট অভিমত, ১৮৭৪ সালে যেহেতু সিলেট, গোয়ালপাড়া ও কাছাড় জেলা অবিভক্ত অসমের অঙ্গ ছিল, তাই সেইসব স্থান থেকে অসমে এসে বসবাসকারী মানুষ অসমের ভূমিপুত্র।