Barak UpdatesHappeningsBreaking News
জাতীয় পতাকা তুলেই আসাম আন্দোলনের কথা বললেন পরিমল
২৭ জানুয়ারি: ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বন, পরিবেশ,আবগারি ও মীন বিভাগের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য শিলচরের পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন৷ পরে তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন৷ মন্ত্রী শুক্লবৈদ্য তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই আসাম আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ জানান, সরকার শহিদদের পরিবারগুলি রক্ষা করার কথা ভাবছে।
তাঁর কথায়, “আমাদের সরকার আসাম আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। আমরা ১০ ডিসেম্বর শহিদ দিবস হিসাবে বিশেষভাবে পালন করছি এবং শহিদদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছি। বিদেশিদের আটক করা, সীমান্তের জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করা এবং উন্মুক্ত সীমানা সিলিং করা হয়েছে৷ বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।”
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার রাজ্যের বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, বিভিন্ন ঘোষণাকে বাস্তবে রূপায়ন করেছে, কোভিড যোদ্ধাদের সম্মানিত করছে। সরকার ইতিমধ্যে আদিবাসীদের সুরক্ষার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছে এবং আরও আর্থিক সহায়তা ভবিষ্যতে দেওয়া হবে। সরকার রাজ্যের ভূমিহীন আদিবাসীদের জমি প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং মুখ্যমন্ত্রী সর্বদা আদিবাসীদের সুরক্ষার নির্দেশ দেন।
শুক্লবৈদ্য বলেন, আসামের প্রায় ১৬ শতাংশ জনগোষ্ঠী চা উপজাতির সম্প্রদায় গঠন করে এবং তাদের কল্যাণ ও বিকাশের জন্য স্কুল, শৌচাগার নির্মাণ ইত্যাদির জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, বিশেষ স্বাস্থ্য প্রকল্পও চালু করা হয়েছে। তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ী বায়ো-ডাইভারসিটি পার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তার বক্তব্যে তুলে ধরেন ।
পরিবেশ ও বন বিভাগের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে শুক্লবৈদ্য বলেন, “কাছাড় জেলার ধলাই সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পার্ক স্থাপন করা ছাড়াও আমরা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, রাষ্ট্রীয় গাছপালা রক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি এবং রাজ্যের ২২১ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল বৃদ্ধি পেয়েছে৷ একই সাথে আমরা পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে চাই৷ কাজিরাঙ্গা সহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলকে পর্যটন হটস্পটে পরিণত করার জন্য আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। ” মন্ত্রী ঘন্টাব্যাপী ভাষণে অসম দর্শন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন ৷
কৃষিক্ষেত্রে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য ট্রাক্টর সরবরাহ করেছে, উন্নতমানের বীজ দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য উন্নতমানের বাজার গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে। বাংলাদেশের সাথে আলোচনা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে বর্ডার হাট নির্মাণের পরিকল্পনাও অনেক আগে থেকেই নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। করোনার পরিস্থিতি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “করোনার পরিস্থিতি চলাকালীন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। ভবিষ্যতে সরকারের স্মার্ট ক্লাসরুমের জন্য বড় পরিকল্পনা রয়েছে। সরকার প্রধান ভাষাগুলির উন্নতি ও সমৃদ্ধ করতে কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে “।
শিলচরের সাংসদ, ডাঃ রাজদীপ রায়, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্কর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি, ডিআইজি দিলীপকুমার দে, বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল, শিলচর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবড়ুয়া এবং সুপারিন্টেনডেন্ট, ডাঃ অভিজিৎ স্বামী এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিকরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মন্ত্রী অনুষ্ঠানে দু’জন মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধা জানান। বিভিন্ন সরকারী বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ স্কিম এবং প্রকল্পগুলি টেবলো প্রদর্শনের মাধ্যমে উপস্থাপনা করা হয়। দিনব্যাপী প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরষ্কার বিতরণও হয়।