Barak Updates
সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত অর্পিতার মাধ্যমিকে ৬২ শতাংশ, সক্ষমের সংবর্ধনা
২৩ জুনঃ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হয়ে হাঁটাচালায় অক্ষম অর্পিতা মিশ্র। কিন্তু পড়াশোনায় খামতি নেই। মাধ্যমিকে এ বার প্রথম বিভাগে পাশ করেছে। ইংরেজিতে লেটার। তাই সক্ষমের করিমগঞ্জ জেলা কমিটি রবিবার বদরপুরে গিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানায়। সে সময় উপস্থিত ছিলেন এনজিও-টির রবিষ্ঠ কর্মকর্তা মিঠুন রায়, বিশ্বরাজ চক্রবর্তী, সুস্মিত বিশ্বাস প্রমুখ।
মায়ের কোলে-পিঠে চেপেই স্কুলে গিয়েছে অর্পিতা। মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে গিয়েও মায়ের হাত ধরে এগিয়েছে একেবারে নিজের আসন পর্যন্ত। জন্ম থেকেই পায়ে জোর পায় না অর্পিতা মিশ্র। বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে অন্নপ্রাশনের কিছুদিন পরে। অন্য শিশুরা যখন ওই বয়সে হাঁমাগুড়ি দেয়, হাঁটার চেষ্টা করে সে তখনও বসেই থাকত। ডাক্তাররা বললেন, সেরিব্রাল পালসি। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু মা-বাবার মন সায় দেয়নি সে কথায়। বাবা অসীম মিশ্র বেসরকারি কোম্পানিতে ইলেকট্রিসিয়ানের কাজ করেন। স্বল্প বেতন। তবু মেয়ের চিকিতসার জন্য ছোটাছুটিতে কার্পণ্য করেননি। এখন অবশ্য নিয়মিত ব্যায়ামের দরুন কিছুটা হাঁটতে পারে অর্পিতা। কেউ ধরে রাখলে অনেকটাই এগিয়ে যায়।
মা রুবি মিশ্র জানিয়েছেন, মেয়েকে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি করিয়েছেন। এই ভর্তির বেলাতেও অনেক বিষয় খেয়াল রাখতে হয়েছে। একদিকে আর্থিক টানাপড়েন, অন্যদিকে মেয়ের যেন রাস্তা এপার-ওপার করতে না হয়। তাই বিকন জুনিয়র কলেজে দিয়েছেন মেয়েকে। বদরপুর বিদ্যামন্দির হাই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রুবিদেবী বলেন, সবাই তাকে সাহায্য করেছেন। বিশেষ করে, তার সহপাঠীরা মাস্টারের বাড়ি যাওয়া-আসারও লক্ষ্য রেখেছে, অর্পিতার সমস্যা হচ্ছে কিনা।
সক্ষম-কর্তা মিঠুন রায় বললেন, এগুলিই উদাহরণ। অর্পিতা যেমন উদাহরণ দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এত প্রতিবন্ধকতায় যদি প্রথম বিভাগে পাশ করতে পারে সে, সুস্থ ছাত্ররা কেন পারবে না! তাঁর কথায়, এমন সফল পরীক্ষার্থীদেরই খুঁজে বের করছেন তাঁরা। বরাক জুড়ে ঘুরে ঘুরে তাদের সংবর্ধনা জানাচ্ছেন। তাদের উচ্চশিক্ষায় যেন কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকে সবাইকে নজর রাখতে অনুরোধ জানান।