Barak UpdatesAnalyticsBreaking News

শিল্পপতিদের ডেকে এনে শিলচরকে আত্মনির্ভর করবেন, স্বপ্ন বিবেক পোদ্দারের

১৯ ফেব্রুয়ারিঃ শিলচর আসনে বিজেপির টিকিটের দাবিদার চারজন। দিলীপকুমার পাল বর্তমানে বিধায়ক। দীপায়ন চক্রবর্তী আগেও এই আসনে টিকিটের দাবি জানিয়েছেন। টিকিটপ্রত্যাশী হিসাবে কণাদ পুরকায়স্থও পুরনো মুখ। সেখানে ব্যতিক্রম বিবেক পোদ্দার। সবাই যখন দলে কত পুরনো, হিসাব কষতে ব্যস্ত থাকেন, সে সময়ে বিবেকবাবু খোলামেলা বললেন, আমি রাজনীতিতে নতুন। তবু তিনি আশাবাদী, দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে। দল কেন তাঁকেই টিকিট দেবে, টিকিট পেলে কী করবেন তিনি, রাজনীতির কাছে কী প্রত্যাশা তাঁর ইত্যাদি নানা প্রশ্ন নিয়ে বিবেকবাবুর সঙ্গে কথা বলেন ওয়েটুবরাক প্রতিনিধি। কী বললেন বিবেক পোদ্দার?

No description available.ওয়েটুবরাক: আপনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, পরিচিত সমাজকর্মী। কিছুদিন ধরে এখন রাজনীতিতে। কেমন অভিজ্ঞতা?

বিবেকঃ আমি রাজনীতিতে এসেছি খুব বেশিদিন হয়নি। আমার কাজ ছিল সমাজসেবা। সঙ্গে ব্যবসাবাণিজ্য। টয়োটা, জেসিবি নিয়েই মূলত আমার কাজকর্ম। সঙ্গে সবসময়ই একটা ভাবনা ছিল, এই সমাজের জন্য, আমার শহরের জন্য কিছু একটা করি। বিজেপিতে যোগ দিয়ে এখন দেখতে পাচ্ছি, এখানে একটা নতুন চিন্তাধারা রয়েছে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, নতুন প্রজন্মকে কীভাবে ব্যবসায়, প্রাইভেট কোম্পানিতে বা এন্ট্রেপ্রেনারশিপে আনা যায়, সে কথা দলীয় তরফে ভাবা হয়। আর আমার সৌভাগ্য, সে সব নিয়ে কাজের সুযোগ আমি পেয়েছি। কারণ আমাকে বিজেপি ট্রেড সেলের কনভেনার পদে মনোনীত করা হয়েছে। চেষ্টা করছি, নানাভাবে মানুষের সঙ্গে জড়িয়ে কীভাবে এই ক্ষেত্রটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

ওয়েটুবরাক: দলীয় মনোনয়নের দাবিদার আপনি। টিকিট প্রাপ্তির ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

বিবেকঃ আমি এখন দলীয় কর্মকর্তা। আর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে কেউ টিকিট চাইতে পারেন। কে পাবেন, তা পুরো পার্টির ব্যাপার। পার্টি যদি আমাকে যোগ্য মনে করে, যদি ভাবে আমি কাজ করতে পারব, তাহলে আমি নিশ্চিতভাবে এগিয়ে আসব। আমার পুরোটা দিয়েই চেষ্টা করব, শিলচর শহরের জন্য, শিলচরের মানুষের জন্য কিছু করতে ৷

ওয়েটুবরাক: টিকিটের দাবিদার দিলীপ পাল, কণাদ পুরকায়স্থ এবং দীপায়ন চক্রবর্তীও। তাঁদের না দিয়ে আপনাকেই কেন দল টিকিট দেবে?

বিবেকঃ টিকিট আসলে কাকে দেওয়া, তা পার্টি স্থির করবে। প্রার্থী যাচাই করার নানা প্রকল্প রয়েছে, নানা মেশিনারি আছে, হচ্ছে সার্ভে। সে সবের মধ্য দিয়েই পার্টি দেখবে, কাকে টিকিট দিলে সবচেয়ে ভাল হবে। সব বিধানসভা আসনেই সে ভাবে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারতের যে চিন্তাধারা, সে কাজগুলি কে সবচেয়ে ভাল করতে পারবে, কে কীভাবে করতে চাইছে, কীভাবে কাজ করলে মানুষ এগিয়ে যেতে পারবে, সে ব্যাপারে দলই সিদ্ধান্ত নেবে। আমি আশাবাদী, শেষপর্যন্ত দল ভাল সিদ্ধান্তই নেবে। তবে পার্টি যাকে প্রার্থী করবে, আমি মনে করি, সবাই মিলে পুরো জোর লাগিয়ে তাঁকে জেতানোই আমাদের কাজ।

ওয়েটুবরাক: ধরা যাক, আপনাকেই টিকিট দেওয়া হল, সে ক্ষেত্রে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

বিবেকঃ মানুষের আশীর্বাদ সব সময়েই পেয়েছি। এ ছাড়া, শিলচর আসনে জয়ের ব্যাপারে সবাই ভালই জানেন, এখানে যে কেউ প্রার্থী হলে জয়ী হবেন, সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।

ওয়েটুবরাকঃ আপনি বলতে চাইছেন, ধর্মের ভিত্তিতে মানুষ বিজেপি প্রার্থীকে জিতিয়ে দেবে?

বিবেকঃ এটাতো ঠিক, প্রত্যেক জায়গাতে সামাজিক সমীকরণ কাজ করে। শিলচর আসনে আমরা দেখি, প্রতিটি নির্বাচনে ৩০-৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপি এগিয়ে থাকে, সে নিয়ে এ বারও কোনও সন্দেহ নেই। কারণ বিজেপি সরকার কা নিয়ে খুব ভাল কাজ করেছে, ৩৭০ ধারা নিয়ে কাজ করেছে, রামমন্দির নিয়ে কাজ করেছে। এ ছাড়া মানুষের উন্নয়নে যে সব কাজ করেছেন, আমার তো মনে হয় না, মানুষের মনে কোনও বিকল্প রয়েছে, অন্য কাউকে বেছে নেওয়ার জায়গা রয়েছে।

ওয়েটুবরাকঃ আমরা দেখি, প্রার্থীরা সরকারি কর্মসংস্থানে জোর দিয়েই ভোট চান, সে ক্ষেত্রে আপনি ব্যতিক্রম। এরই মধ্যে আপনি নিজের প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক কর্মসংস্থান করে নিয়েছেন। কর্মসংস্থান নিয়ে আপনার ভাবনাটা যদি একটু ভাগ করে নেন!

বিবেকঃ সরকারের একশো চাকরি বেরোলে, আমরা ভাবি বরাকের একটা পেয়েছে, নাকি দুইটা পেয়েছে। আমার চিন্তাধারাটা একটু অন্য রকম। সরকারের একশো চাকরি বেরোলে প্রাইভেটে ১০০০, ১০০০০ চাকরি বেরোয়, এ নিয়ে আমরা কথা বলি না। আমরা কিন্তু সে নিয়ে ভাবি না। সেটা ভাবতে হবে। কারণ ভবিষ্যৎ  প্রাইভেট কোম্পানিগুলির হাতে। এন্ট্রেপ্রেনারশিপ তো রয়েছেই । বড় বড় কোম্পানিগুলিকে গুয়াহাটিতে নিয়ে আসার কথা ভাবতে হবে। তাদের কীভাবে আমরা এখানে নিয়ে আসতে পারি, সে কথা ভাবতে হবে। এখানে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। বরাক উপত্যকায় প্রতিভার অভাব নেই। আমাদের ছেলেমেয়েরাই বেঙ্গালুরু, পুনে, বোম্বেতে কাজ করছে। বড় বড় কোম্পানিতে দেখবেন, এখানকার ছেলেমেয়েরা সার্ভিস দিচ্ছে। বড় বড় হাসপাতালে দেখবেন আমাদের ছেলেরাই। আমাদের ডাক্তার, আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা বাইরে গিয়ে এত সার্ভিস দিচ্ছেন,  তাদের যদি এখানে ফিরিয়ে আনা যায়, কোম্পানিগুলিকে যদি এ দিকে আকৃষ্ট করা যায়, তাহলে হেলথ ইন্ডাস্ট্রিই বলুন, আর ফুড ইন্ডাস্ট্রি, কৃষি বা আইটি, সবারই সুযোগ রয়েছে। বরাক উপত্যকা গেটওয়ে ফর নর্থইস্ট। তিনটি-চারটি রাজ্যের সঙ্গে বর্ডার। বাংলাদেশ তো রয়েছেই। মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের একাংশ। মহাসড়ক কমপ্লিট হয়ে গেলে পুরো ডিমা হাসাও শিলচরের ওপর নির্ভর করবে তাঁদের মার্কেটিঙের জন্য। কারণ গুয়াহাটি তাদের জন্য পাঁঁচ-ছয় ঘণ্টার ব্যাপার, হাফলঙ থেকে শিলচর তখন হবে দুই-আড়াই ঘণ্টার দূরত্ব। এয়ারপোর্ট, রেলস্টেশন, বাজার, অফিস-আদালতের জন্য হাফলঙের পুরো লোডটা এখানে চলে আসবে। তাই শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। সরকারি যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেখতে হবে, আমরা কতটা কী পরিকাঠামো তৈরি করতে পারি। মনে রাখতে হবে, শিলচর সহ বরাককে আমাদেরই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

ওয়েটুবরাকঃ তাহলে এখন কেন ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে না?

বিবেকঃ আমরা আমাদের দাবিমত তাঁদের সামনে এই জায়গাটাকে তুলে ধরতে পারিনি। কী কী সুবিধা রয়েছে আমাদের এখানে, সে সব তাদের ঠিকভাবে জানাতে পারিনি। আমাদের যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে, আমাদের যে প্রতিভা আছে, তা তুলে ধরতে হবে। বড় বড় কোম্পানিগুলিকে বোঝাতে হবে। এই মার্কেটিঙটা তো আগে করতে হবে। বরাক একটা সেফ জোন। ব্যবসায়ীরা সব সময় দেখেন, তিনি যেখানে বিনিয়োগ করবেন, সেই জায়গাটা নিরাপদ কিনা। আমাদের অঞ্চল বড় নিরাপদ জায়গা। এখানে কারও কোনও উপদ্রব নেই, কোনও ডিমান্ড নেই যে ব্যবসা করতে গেলে এটা দিতে হবে, ওটা দিতে হবে। আমাদের সে সব কথাই তুলে ধরতে হবে। কিন্তু আমাদের যতটা দরকার ছিল, আমরা সেভাবে তা করতে পারিনি। যেমন ধরুন, টুরিজমের প্রচুর সুযোগ  রয়েছে বরাকে। এখানে এমন কিছু জায়গা রয়েছে, ভাল  মার্কেটিং করা গেলে শুধু ওই জায়গাগুলোর জন্যই প্রচুর মানুষ আসবে। সেই কাজগুলো তো আমাদেরই করতে হবে৷ যে যে অবস্থাতেই থাকি না কেন, আমাদের ওই সব করা চাই। কারণ বরাকের ভবিষ্যৎ নতুন প্রজন্মকে দেখাতে হবে। তারা যদি বরাকে থাকতে রাজি হয়, বিনিয়োগে রাজি হয়, তাহলে বরাকের উন্নতি এমনি হয়ে যাবে।

 

No description available.ওয়েটুবরাক: রাজনীতিতে আপনার আর কী কী ভিশন রয়েছে?

বিবেকঃ আমার স্বপ্ন বরাকের জন্য একটাই। বরাকের ছেলেমেয়েরা যেন বরাকে থেকে কাজ করতে পারে। সেটা করতে পারলেই অনেক কিছু হয়ে যাবে। আমি মনে করি, সে জন্য যেটুকু করা প্রয়োজন ছিল, তাতে কিছু খামতি রয়ে গিয়েছে। নইলে এমনটা হতো না। শিলচরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে হাজার হাজার ডাক্তার হচ্ছে৷ তাদের মধ্যে কি ভাল কার্ডিওলজিস্ট নেই, নিউরোলজিস্ট নেই? আমরা কেন একজন কার্ডিওলজিস্টকে শিলচরে আনতে পারছি না? কেন তারা শিলচরে আসতে চাইছে না? এই অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের নিজের শহরে পছন্দমত কর্মমসংস্থান করা — এ আমাদের স্বপ্ন, আমাদের কাজ। দুটোকে কম্বাইন্ড করে তাদের বোঝাতে হবে, শিলচরে বা বরাকেই তাদের কাজ করতে হবে। কারণ আমার এলাকা যদি উন্নত হয়, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত৷ সকলের ভবিষ্যৎ যে নিজের এলাকার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। আবারও বলছি, এখানে প্রতিভার অভাব নেই। কী নেই শিলচরে! আসাম ইউনিভার্সিটি রয়েছে, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। সঙ্গে নাটক-পেইন্টিং-তবলা বাজানো কোথাও আমাদের প্রতিভার অভাব নেই। শুধু আমরা যদি আমাদের জায়গাটাকে ভালবাসি, বুঝতে পারি,  এটা আমার জায়গা, তাহলে আর বেঙ্গালুরু-কলকাতা-পুনেতে গিয়ে জীবন কাটাতে হবে না। সে জন্য আমার জায়গাটাকে উন্নত করতে হবে। ওই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে ভাল করে বোঝাতে হবে, তাদের কাছে সম্ভাবনার জায়গাটা স্পষ্ট করতে হবে৷ আমরা যারা এই প্রজন্মের মানুষ, আমরা যারা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের ছেলেমেয়েরা গ্র্যাজুয়েট হচ্ছে আর বাইরে চলে যাচ্ছে, আমাদের বোঝাতে হবে, বাইরে যাও, পড়তে যাও, ডিগ্রি নাও, কিন্তু ফিরতে হবে এখানে। এটা আমার স্বপ্ন, একে যদি নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন করে তুলতে পারি, তাহলেই আমি মনে করি, আমার রাজনৈতিক সার্থকতা।

ওয়েটুবরাক: আজকের রাজনীতিকরা অনেকে বলেন তাঁদের পেশা রাজনীতি। অর্থাৎ রাজনীতিই নিজেদের ভরণপোষণের জায়গা। কিন্তু আপনি তো একজন সফল ব্যবসায়ী। আপনার ভরণপোষণের জন্য রাজনীতির প্রয়োজন নেই। আপনি কেন রাজনীতিতে এলেন? রাজনীতি থেকে আপনি কী চান?

বিবেকঃ এই প্রশ্নটা অনেকে করে থাকেন, আমি কেন রাজনীতিতে এসেছি। রাজনীতি সম্পর্কে লোকের যে চিন্তাধারা, তা খুব একটা পজিটিভ নয়। আমার মা-বাবাও আমাকে এ প্রশ্ন করেছিলেন। এটা সত্যি, ঠাকুর আমাকে যা দিয়েছেন, আমি যা পেয়েছি, এই অবস্থায় রাজনীতিতে এসে আমি আর্থিকভাবে কিছু পাব, বা এর কোনও জায়গা রয়েছে বলে আমি মনে করি না। এর দরকারও রয়েছে বলে ঠাকুুুুুরের আশীর্বাদে আমি মনে করি না। আমার রাজনীতিতে আসার পেছনে একটাই কারণ নতুন শিলচর, নতুন বরাক গঠন৷ আমি যেখানে জন্মেছি, যেখানে বড় হয়েছি, সেখানকার যে অবস্থা আজ দেখছি, আমাদের ছেলেমেয়েদের যে চিন্তাধারা দেখছি, তা মনে দুঃখ দেয়৷ অথচ আমাদের বিরাট সুযোগ রয়েছে৷ আমার ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা এবং আমার বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার সুবাদে যে নতুন স্বপ্ন দেখি, একে যদি মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারি, তাহলে একটা নতুন বরাক গঠন করা যেতে পারে। স্পষ্ট করে বলতে পারি, একটা স্বপ্ন নিয়ে রাজনীতিতে এসেছি। রাজনীতি আমার কাছে টাকা রোজগারের মাধ্যম নয়। আমার স্বপ্ন, বাইরের মানুষ বরাক ছেড়ে যাবে না৷ বরং বাইরের মানুষকে ভাবতে হবে, আমি বরাকে গিয়ে থাকব, কাজ করব। এই স্বপ্নপূরণের জন্যই আমার কাজ রয়ে গিয়েছে। যদি ভগবান আমাকে সুযোগ দেন, ওইটা নিয়েই আমি কাজ করব।

No description available.ওয়েটুবরাক: চেম্বার অব কমার্সের সাউথ আসামের সভাপতি হিসেবে কি ওই স্বপ্নপূরণ হয় না?

বিবেকঃ চেম্বার অব কমার্সের কাজটা একটা অন্য ধারায় চলে। চলতি ব্যবসার সুরক্ষা, নিরাপত্তা ইত্যাদিই চেম্বার দেখে থাকে। যদি  নতুন প্রজন্ম নিয়ে কাজ করতে হয়, তা কিন্তু চেম্বার অব কমার্সে থেকে বেশি কিছু করার নেই। সেটা করতে হলে, নতুন প্রজন্মের জায়গা তৈরি করতে হলে, রাজনৈতিক সুযোগ প্রয়োজন। আবার এও ঠিক, চেম্বার অব কমার্স মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় সর্বদা সরব হচ্ছে, পাশাপাশি মানুষের সেবা করে যাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন, করোনা অতিমারির সময় আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। লকডাউন আরও না বাড়ানোর জন্য সোচ্চার ছিলাম।

ওয়েটুবরাক: আপনার যে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের সঙ্গে সম্পর্ক, চেম্বারের সঙ্গে সম্পর্ক আপনার স্বপ্নপূরণে তা কতটা সহায়ক হবে?

বিবেকঃ এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কারণ আমি আজ

উত্তর-পূূূূূর্বাঞ্চলের পাঁচ-ছয়টা রাজ্যের সঙ্গে নানাভাবে জড়িয়ে আছি। চেম্বার অব কমার্সের সূত্রে সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে, চেম্বারকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমি মনে করি, একটা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারব। একটা ভাল সম্পর্ক থাকলে নানা সমস্যা এমনি সমাধান হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা কিন্তু রাজনীতিতে একটা বড় ভূমিকা পালন করে। ব্যবসায়ী ছাড়া কোথাও রাজনীতি হয় না। এই জায়গাতে আমার যে ব্যক্তিগত সমীকরণ, জানাশোনা, অভিজ্ঞতা রয়েছে, তা আমাদের শিলচরের জন্য খুব ভালভাবে কাজে লাগাতে পারব। আমাদের মানুষের জন্য কাজ করতে পারব।

ওয়েটুবরাক: কংগ্রেস টিকিটের জন্যও দৌড় বাড়ছে। তাহলে কি কংগ্রেসের আশার জায়গা বাড়ছে?

বিবেকঃ এটা তাদের অভ্যন্তরিণ ব্যাপার। কিন্তু এ কথা তো স্বীকার করতে হবে, কংগ্রেস একটা ডিমিনিশিং ফোর্স। কমতে কমতে তাঁরা বিরোধী দলনেতার পদটাও ধরে রাখতে পারেনি। অসমেও মানুষের মনের মধ্যে একটাই কথা, নরেন্দ্র মোদিকে চাই, মোদির চিন্তাধারা চাই, বিজেপির সরকার চাই। সেখানে দাঁড়িয়ে কেউ কংগ্রেসের টিকিট কেন চাইছেন, তা তিনি নিজে বলতে পারেন। তবে আমি মনে করি না, রাজনৈতিকভাবে খুব একটা লাভবান হবেন। বরাকে তো নয়ই, আসামেই তেমন সম্ভাবনার জায়গা নেই। হয়তো দুয়েকটা জায়গা, যেখানে সংখ্যালঘুর সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, সেখানে তারা স্বপ্ন দেখতে পারেন। হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জেও এ বার ফলাফল ভিন্ন হবে। যারা দৌড়ঝাঁপ করছেন, করতে দিন। কারণ ভবিষ্যৎ বিজেপিরই। নরেন্দ্র মোদির দিকেই সবাই তাকিয়ে। কোভিডের মধ্যেও দেখেছি, নরেন্দ্র মোদি সরকার কী ভাবে কাজ করেছে। আজ কানাডাও আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে টিকার জন্য। ব্রাজিলেও আমরা টিকা  পাঠিয়েছি। আমার মনে হয়, আর কিছু দিনের মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলোকেও আমাদেরই ভ্যাকসিন পাঠাতে হবে। কারণ তাদের ভ্যাকসিন এতটা সফল হতে পারেনি। সে জায়গায় আমাদের যে এত সফলতা, এটা সম্ভব হয়েছে কার সুবাদে? একমাত্র মোদির জন্য। তিনি এমন একজন মানুষ, যিনি রাজনীতিতে থেকেও একজন সাধুর মত জীবন কাটান। তাঁর চিন্তাধারা পুরো রাজনীতির রূপরেখা বদলে দিয়েছে। কংগ্রেসে তো কোনও মুখই নেই। এ তো গান্ধী পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পদ। কংগ্রেস সম্পর্কে কী আর বলার আছে!

No description available.ওয়েটুবরাক: প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার আশঙ্কা করছেন?

বিবেকঃ প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার কথা মিডিয়াই তুলে ধরে। বিহারেও বলা হয়েছিল, ঘুরে আসবে না, প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বইছে৷ এই হাওয়া তখনই আসে, যখন সরকার কাজ করতে পারে না। আপনারা জানেন, কোভিডের সময় সরকার কী করেছে! হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কীভাবে কাজ করেছেন! মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে মানুষের পাশে ছিলেন! কীভাবে দুজনে মিলে মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন! শুধু স্বাস্থ্যক্ষেত্র নয়, যারা বাইরে আটকে ছিলেন, তাঁদের কীভাবে নিয়ে আসা, এমনকি বিদেশে যারা আটকে ছিলেন, তাদের কীভাবে নিয়ে আসা, সে জন্য হিমন্ত প্রচুর কাজ করেছেন। এই সরকারের সামনে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া থাকবে, আমি মনে করি না। বরং প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হাওয়া বইছে, তা বলতে পারি। কারণ কা বিরোধিতা এখন নেই বললেই চলে। সরকার ভাল কাজ করছে, মোদি সরকারের চিন্তাভাবনা পজিটিভ, ফলে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া মোটেও নেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker