Barak UpdatesAnalyticsBreaking News
ভোপালে সর্বভারতীয় বিদ্যুৎ গ্রাহক সম্মেলনে যাচ্ছেন কাছাড়ের ৫ সদস্য
ওয়ে টু বরাক, ৩ এপ্রিল ঃ ভোপালে অল ইন্ডিয়া ইলেকট্ৰিসিটি কনজিউমাৰ্স অ্যাসোসিয়েশন’র প্রথম
সর্বভারতীয় বিদ্যুৎ গ্ৰাহক সম্মেলনে যোগ দেবে কাছাড় জেলার ৫ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে আগামী ৮ ও ৯ এপ্ৰিল অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন। সম্মেলনে কাছাড় জেলা থেকে পাঁচ জ্নের প্রতিনিধি দলের যোগদানের কথা সোমবার জানিয়েছেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মন্মথ নাথ। প্রতিনিধিরা আগামী বুধবার শিলচর থেকে রওনা হবে।
তিনি বলেন বর্তমানে দেশ, বিদেশের পুঁজিপতিদের স্বার্থে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জনগকে বঞ্চিত করে বিদ্যুতকে পরিষেবার পরিবর্তে লাভজনক পণ্যে নিয়ে যেতে চাইছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোর জনবিরোধী ও কর্পোরেটদের স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্তে জনগণের ঘাড়ে বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপবে। ফলে বিভিন্ন অজুহাতে মাশুল বৃদ্ধি ঘটবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে কেন্দ্র সরকারের অধীনে নিয়ে এসে ‘নো প্রফিট-নো লস’ মনোভাব নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ গঠিত হয়েছিল। কিন্তু ইলেকট্রিসিটি অ্যাক্ট-২০০৩ বৃহৎ ব্যবসায়ীদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ছাড়পত্র প্রদান করে। বর্তমানে দেশের ৫০ শতাংশ বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যক্তি মালিকানাধীন। ফলে বিদ্যুতের ৮০ শতাংশ দাম নিয়ন্ত্ৰিত হয় তাদের সাথে করা বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তির ভিত্তিতে যা সাধারণ গ্ৰাহকদের স্বাৰ্থের পরিপন্থী।
তিনি আরও জানান, অতীতে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড ও বিহারে বিদ্যুৎ বিতরণের বেসরকারিকরণ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক আয়োগ বেসরকারি কোম্পানি গুলোর অবাধ দুর্নীতি ও ব্যর্থতার জন্য তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে বাধ্য হয়। অথচ কেন্দ্র সরকার দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাকে ব্যক্তিগতকরণের লক্ষ্যে ‘স্টেক হোল্ডারদের’ সঙ্গে বিশেষ করে বিদ্যুৎ গ্রাহক ও কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই ইলেকট্রিসিটি বিল-২০২২ সংসদে পাশ করতে তৎপর হয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই সংশোধনী বিল সংসদে গৃহীত হলে বিদ্যুৎ একচেটিয়া পুঁজিপতিদের মুনাফার পণ্যে পর্যবসিত করা হবে। এই বিলে বিদ্যুৎ বিতরণের খরচ মাশুল থেকে সংগ্রহের প্রস্তাব থাকায় বিদ্যুতের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি হবে। সরাসরি সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে বিদ্যুতের ভর্তুকি ক্রমান্বয়ে তুলে দেওয়া হবে। বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে তাদের ইচ্ছেমতো নিদিৰ্ষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের অধিকার দেওয়া হবে। ফলে শহরের বিতরণ ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাবে এবং গ্রামীণ এলাকার বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব বিভাগের হাতে থাকবে। ফলে রাজস্ব ঘাটতির অভাবে গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, কৃষকদের প্রথমে মাশুল দিতে হবে এবং ভর্তুকির টাকা পরবর্তীতে ফিরে পেতে অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া এই বিলে কেন্দ্র সরকারের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদানের প্রস্তাব রয়েছে। ফলে গ্রাহক ও কৃষকেরা তাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির ক্ষমতা হারাবে।
এছাড়াও প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে কোম্পানিকে মুনাফা লুটার সুযোগ করে দেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের উপর নেমে আসা এই সর্বনাশা আক্রমণের বিরুদ্ধে সারা দেশের গ্রাহক ও কৃষকেরা ‘অল ইন্ডিয়া ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন’র পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। ফলে এই সম্মেলনকে সফল করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সবাইকে সাহায্য করতে আহবান জানানো হয়।