AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/৪০ঃ দীর্ঘদিন ধরে ভারতে থাকা অনুপ্রবেশকারীরা ঝুঁকিবহুল নয়
২৫ মার্চঃ ৫.২৫ বিদেশ মন্ত্রক জানায়, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ফিরিয়ে দেওয়ার কোনও নির্দিষ্ট চুক্তিপত্র নেই। এই ধরনের চুক্তিপত্র জরুরি কিনা যৌথ সংসদীয় কমিটি তা জানতে চায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জবাব দেয়, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টের ৩(২)(সি) ধারায় দেশে বসবাসকারী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের রয়েছে। ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে রাজ্য সরকার, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন এবং ব্যুরো অব ইমিগ্রেশন-কেও।
ন্যাশনিলিটি ভেরিফিকেশন প্রসেসের মাধ্যমে কারও জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হলেই সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বহিষ্কার করতে পারে। সে জন্য সরকার তাদের নামে ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করে স্বদেশে ফেরত পাঠায়। কোনও অনুপ্রবেশকারীকে যে দেশে পাঠানো হবে, সে দেশের সঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কূটনৈতিক প্রক্রিয়া মেনেই এই ন্যাশনালিটি ভেরিফিকেশন প্রসেস, ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করা ইত্যাদি এগিয়ে চলে। কারণ ন্যাশনালিটি ভেরিফিকেশন কোনও দেশের সার্বভোমত্ব সংশ্লিষ্ট কাজ। প্রতিবেশীদের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অবৈধ অনুপ্রবেশ ইস্যু গুরুত্ব পায়।
৫.২৬ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, এতে স্পষ্ট, একটি সুস্পষ্ট বহিষ্কার নীতিই বিদেশি নাগরিকদের প্রত্যর্পণ বা বিতাড়ন করতে পারে।
৫.২৭ কত অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে বিতাড়ন করা হয়েছে, জানতে চেয়েছিল কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, নিরাপত্তা সংস্থাগুলি যে তথ্য দিয়েছে, সে অনুসারে ২০১৫-১৬ সালে (৩০জুন, ২০১৬ পর্যন্ত) পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে মোট ৪৫৭জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
৫.২৮ বহিষ্কার ইস্যুতে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর বক্তব্য জানতে চাইলে তারা বলে, ২০০৯ সালের ২৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে আবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত ও বিতাড়নের জন্য একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ফরেনার্স ডিভিশন নিয়মিত এ ব্যাপারটি তদারকি করছিল। অসমের ক্ষেত্রে আরও বহিষ্কারের জন্য ১৯৬৪ সালের ফরেনার্স (ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার মেনে গঠিত ট্রাইব্যুনাল অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে। ১৯৮৬ সাল থেকে ৬২ হাজারের বেশি মানুষকে ট্রাইব্যুনালগুলিতে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তথ্য অনুসারে, তাদের মধ্যে মাত্র ২৪০০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে বাকিদের দেশ থেকে বের করা সম্ভব হয়নি।
৫.২৯ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কমিটিকে ওয়াকিবহাল করায় যে, দেশে বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কমিটি জানতে চায়, ওইসব বিদেশি নাগরিকরা কি দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ নয়? তাদের কী করে সারা দেশে ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি মেলে? ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর বক্তব্য, ওইসব অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের অনেকেই রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমনকী পাসপোর্টের মত কাগজপত্রও সংগ্রহ করে নিয়েছে। ওইসবের ভিত্তিতে তারা এখন দাবি করছে, তারা ওই অঞ্চলের প্রকৃত বাসিন্দা এবং ভারতের নাগরিক। কেউ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে তাদের কার্যকলাপের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কোনও কোনও এলাকায় জনগণনার মাধ্যমে জনবিন্যাসগত পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু হলে কী হবে, সবাই-ই বলেন, আমরা ভারতীয়।
৫.৩০ কিছু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে প্রস্তাবিত সংশোধনীর মাধ্যমে নাগরিকত্ব মঞ্জুর করা হলে, তাতে কী প্রভাব পড়বে? আইবি বলে, দশকের পর দশক ধরে যে সব মানুষ এই দেশে বসবাস করছে, তাদের দ্বারা নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি মোটেও নেই।
৫.৩১ অবৈধ অনুপ্রবেশাকারীদের বহিষ্কার প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের ভূমিকা জানতে চাইলে তারা শোনায়, কোনও বিদেশি নাগরিকের যদি পাসপোর্টের মত কোনও পরিচিতি সূচক নথি না থাকে, তাহলে বিদেশ মন্ত্রক ওই দেশের দূতাবাস বা হাই কমিশনার বা কাউন্সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং বিস্তৃত জানাবে।
সাধারণ নিয়মেই সংশ্লিষ্ট দেশের মিশন বা কনস্যুলেট ওই নাগরিক তার দেশেরই কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। পরে মিশন বা কাউন্সেল তার নামে পাসপোর্ট বা ইমার্জেন্সি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। এর পরেই ভারতের সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ওই বিদেশি নাগরিককে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করে।