Barak UpdatesAnalyticsBreaking News
বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে : শান্তনু
ওয়ে টু বরাক, ৮ আগস্ট : প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ হিংসা ও অরাজকতায় জর্জরিত। নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সেখানকার চরমপন্থী জিহাদিরা হিন্দু সমাজের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার শিলচরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তের সভাপতি শান্তনু নায়েক এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্থান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হিন্দু সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়িতে আক্রমণ করে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এধরনের জঘন্য কার্যকলাপ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় সংঘটিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকি মৌলবাদীদের হাতে শ্মশান পর্যন্ত রেহাই পায়নি। মঠমন্দিরগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশে এমন কোনও জেলা নেই, যা তাদের হিংসা ও সন্ত্রাসের লক্ষ্যে পরিণত হয়নি। সবকটি জেলাতেই তাদের আতংকময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পাশাপাশি ত্রাস ও হিংসা ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, সময়ে সময়ে নিয়মিত এই ধরনের দাঙ্গার ফলস্বরূপ বাংলাদেশে হিন্দুরা, যারা দেশভাগের সময় ৩২ শতাংশ ছিল, তারা ৮ শতাংশেরও নিচে চলে এসেছে এবং ক্রমাগত জেহাদি নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রান্ত সভাপতি শান্তনু নায়েক আরও বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ঘর, বাড়ি, দোকান, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মহিলা, শিশু এমনকি তাদের মন্দির, গুরুদ্বার এবং অন্যান্য আস্থা ও বিশ্বাসের কেন্দ্রগুলি নিরাপদ নয়। বলা যায় সেখানে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অত্যন্ত চিন্তাজনক।
নায়েক আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়িত্ব। তিনি বলেন, ভারত অবশ্যই এই পরিস্থিতিতে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। ভারত ঐতিহ্যগতভাবে সারা বিশ্বের নিপীড়িত সমাজকে সাহায্য করেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দক্ষিণ পূর্ব প্রান্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
শান্তনু আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সীমান্তের ওপার থেকে অনুপ্রবেশের বড় চেষ্টা চালানো হতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তাই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য প্রয়োজন সীমান্তে কঠোর নজরদারি রাখা এবং সর্বাস্থায় অনুপ্রবেশ রোখা আবশ্যক। তাঁর কথায়, আমাদের ইচ্ছা বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক। সেখানকার সমাজ যেন মানবাধিকার পায় এবং বাংলাদেশের অব্যাহত অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে কোনও বাধা না থাকে। ভারতীয় হিন্দু সমাজ ও সরকার এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সব সময়ই সহযোগিতা করবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অন্যদের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের গুয়াহাটি ক্ষেত্র ধর্ম প্রসার প্রমুখ পূর্ণচন্দ্র মন্ডল। উপস্থিত ছিলেন প্রান্তের ট্রাস্টি প্রদীপ কুমার দে, প্রান্ত কোষাধ্যক্ষ দেবব্রত পাল, প্রচার প্রসার প্রমুখ শমীন্দ্র পাল সহ অন্যরা।