India & World UpdatesBreaking News
এনআরসি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় কিছুক্ষণ পরই
তাতপর্যপূর্ণ বিষয় হল, করিমগঞ্জের আইনজীবী শিশির দে-ও এ বার এই মামলায় পক্ষভুক্ত হয়েছেন। প্রতীক হাজেলার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য থাকলে তা সুপ্রিম কোর্টে জানাতে বলা হয়েছিল। ওই সুযোগেই নিজেকে মামলার পক্ষভু্ক্ত করে নেন শিশিরবাবু।
কেউ বিদেশি ঘোষিত, বা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন বা ডি ভোটার হলে তাদের সন্তানদের নামও এনআরসিতে উঠবে না। শিশিরবাবু সে জায়গায় আপত্তি করেন। তিনি স্টেট কো-অর্ডিনেটরের উল্লেখ করা নাগরিকত্ব আইনের সেই ৩ নং ধারার উল্লেখ করেন। বলেন, ওই ধারায় ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত যারা ভারতে জন্মেছেন, সবাই ভারতীয়। এর পরে ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাদের জন্ম তাদের পিতামাতার একজন ভারতীয় হলেই তিনি ভারতীয়। এর পরবর্তী সময়ে জন্ম যাদের, তাদের ক্ষেত্রে পিতামাতার ১জন ভারতীয় হতে হবে এবং অন্যজনের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হওয়া চলবে না। শিশিরবাবুর বক্তব্য, ওই ধারামতে পিতামাতার একজন বিদেশি ঘোষিত, বা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন বা ডি ভোটার হলেই তাদের সন্তানদের এনআরসি থেকে ব্রাত্য করা যায় না। নাগরিকত্ব আইনের ৩ নং ধারায় যারা ভারতীয়, তাদের নাম এনআরসি-তে আসা উচিত।
আইএমডিটি রায় প্রসঙ্গেও শিশিরবাবু তাঁর মতামত পেশ করেন। তিনি শীর্ষ আদালতকে জানান, যে কোনও আইন তা কার্যকর থাকার সময় যে রায় প্রদান করা হয়, পরবর্তী সময়ে তা সংসদে বাতিল হয়ে গেলে বা আদালত কর্তৃক খারিজ হয়ে গেলেও পুরনো রায় যথারীতি বহাল থাকে। আইএমডিটি-র ক্ষেত্রে তা পৃথক হতে পারে না।
শিশিরবাবুর মতে, এনআরসি হচ্ছে নাগরিকত্ব আইনেরই অংশবিশেষ। ফলে ওই আইনে যাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি মেলে, তাদের কেউ যেন বাদ না পড়েন, সে দিকে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যারা নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন, তাদের আর অন্য আদালতে ন্যায়বিচার চাইবার উপায় নেই। তাঁর আরও যুক্তি, আসাম চুক্তির যে সব কথা নাগরিকত্ব আইনের ৬ (ক) নং ধারায় বলা হয়েছে, তা ১৯৮৫ সালের ৭ ডিসেম্বরের পরই কার্যকর হয়। ওই দিনেই নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ৬(ক) ধারাটি যুক্ত হয়। ফলে এর আগের কোনও বিষয় আসাম চুক্তির নিরিখে ফয়সলা হতে পারে না। এ ছাড়া, ৬(ক) ধারায় যারা অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের নিয়েই বিধান দেওয়া হয়েছে। তাদের সন্তানসন্ততিদের কথার উল্লেখ নেই। ফলে সন্তানদের বিষয় নাগরিকত্ব আইনের ৩ নং ধারামতেই বিচার্য হবে। এখানে দুই আইনি প্রক্রিয়ার বা নাগরিকত্ব আইনের দুই ধারার মধ্যে সংঘাতের ব্যাপার নেই। যার ক্ষেত্রে যে ধারা কার্যকর, তার বিষয় সেই ধারামতেই বিচার্য হবে।