Barak UpdatesHappeningsBreaking News
পর্যটকরাই এটা-ওটা দিয়ে বানরের খাদ্যাভ্যাস বদলে দিচ্ছে, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অনিন্দ্যের আক্ষেপ
ওয়েটুবরাক, ৩ মার্চ : আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তু ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে গত শুক্রবার এক আমন্ত্রিত বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। ব্যাঙ্গালোরস্থিত ‘ন্যাশনাল স্কুল অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ’ -এর স্কুল অফ ন্যাচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অ্যানিমাল বিহেভিয়ার অ্যান্ড কগনিশন প্রোগ্রামের অধ্যাপক, বিশিষ্ট প্রাইমাটোলজিস্ট অনিন্দ্য সিনহা আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভাগীয় ডিন অধ্যাপক পার্থঙ্কর চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করেন। প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডঃ প্রদোষ কিরণ নাথ ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জয়শ্রী রাউত। ডাঃ পান্না দেব আমন্ত্রিত বক্তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর মূল বক্তৃতাপর্ব শুরু হয়।
বক্তৃতার বিষয় ছিল, ‘মানবকূল এবং বানর : সহাবস্থান এবং দ্বন্দ্ব।’ অধ্যাপক সিনহা তাঁর বক্তৃতায় মানুষের সঙ্গে বানরকূলের সামাজিক-সাংস্কৃতিক বন্ধন সম্পর্কে বিশদভাবে তুলে ধরেন। বিভিন্ন প্রজাতির বানরের প্রতি মানুষের বিশ্বাস, ধার্মিক যোগাযোগের ভিত্তি এবং বানর সম্পর্কে মানুষের অজ্ঞতা ইত্যাদি সবকিছুই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে। এদের উপর বর্ধিষ্ণু পর্যটন শিল্পের কুফল সম্পর্কেও বিশদ বিবরণ উল্লেখ করেন। জাতীয় উদ্যান বা সুরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রায়ই দেখা যায়, পর্যটকেরা বানরদের খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করছেন। এতে করে তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ঘটছে। বানরেরা ‘জাঙ্ক-ফুড’ এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে, তাদের দেহের ওজন বৃদ্ধি ঘটছে। তিনি আরও সতর্ক করেন যে, অবৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে। তিনি মনে করেন, বানর বা অন্য কোনও বন্যপ্রাণী দ্বারা আক্রমণাত্মক বা বিরোধপূর্ণ ঘটনার প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এবং উপলব্ধি পক্ষপাতদুষ্ট হওয়া উচিত নয়৷ কারণ অভয়ারণ্য কিংবা জাতীয় উদ্যান ছাড়াও জনবসতি থাকা গ্রাম বা শহুরে এলাকায়ও বিভিন্ন প্রাণী বাস করে এবং তাদের নির্দিষ্ট বাস্তুতন্ত্রে বসবাস করার সমানভাবে অধিকার রয়েছে। আলোচনা শেষে দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে।
অনুষ্ঠানের শেষে কর্তৃপক্ষের তরফে আমন্ত্রিত বক্তার হাতে স্মারকপত্র তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিত্ত আধিকারিক ড. শুভদীপ ধর। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ড. তপতী দাস। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিভাগের গবেষিকা সঞ্জীবিতা পাল। উল্লেখ্য, অধ্যাপক অনিন্দ্য সিনহা হচ্ছেন অধুনাপ্রয়াত বিখ্যাত ভারতীয় চিত্র পরিচালক তপন সিনহার ছেলে।